সকল মেনু

সকালের নাস্তায় যে খাবারগুলো খাওয়া একেবারেই উচিৎ নয়

স্বাস্থ্য প্রতিবেদক, ৫ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) :  সকালের নাস্তা সম্পর্কে অনেকেরই রয়েছে অনেক ভুল ধারণা। কেউ কেউ মনে করেন সকালের নাস্তা খেলে মুটিয়ে যাবেন, আবার কেউ ভাবেন সকালের নাস্তা না খেলেও চলে। কিন্তু সকালের নাস্তা হলো সারাদিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন খাবার। সকালের নাস্তাটা অন্য বেলার খাবারের চাইতে তুলনামূলক ভারী হতে হয়। সকাল বেলা খাওয়ার আগে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ সবচেয়ে কম থাকে। গ্লুকোজ হলো মস্তিষ্কের জ্বালানী। নাস্তা খাওয়ার পর রক্তের গ্লুকোজ স্বাভাবিক হয় এবং মস্তিষ্ক ঠিক মত কাজ করে। তাই প্রতিদিন সকালে ভারী নাস্তা খেলে ক্লান্তি দূর হয় এবং সারাদিন শক্তি পাওয়া যায়। এবং ন্যাশনাল ওয়েট লস রেজিস্ট্রির মতে যারা অনেক স্থুলতার থেকে ওজন কমিয়েছে তাদের মধ্যে ৭৮% মানুষই নিয়মিত সকালের নাস্তা খেতেন।

তাই সকালের নাস্তা বাদ দেয়া উচিৎ নয় মোটেও। সকালের নাস্তার ক্ষেত্রে এক একজন মানুষের এক এক রকম খাবার পছন্দ করে থাকেন। কেউ শুধু ফল খেয়ে নাস্তা করেন কেউ কেউ আবার ভাত খান। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় যে খাবারগুলো সকালের নাস্তায় খাওয়া মোটেই উচিৎ নয় পছন্দের কারণে অনেক মানুষ দিন শুরু করেন সেইসব নাস্তা দিয়ে। ফলে পুরো দিনটিই যায় খারাপ এবং অবসাদগ্রস্থ। তাই আমাদের জানতে হবে সকালের নাস্তায় কোন খাবারগুলো খাওয়া একেবারেই উচিৎ নয়। এবং সেইসব খাবার খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে হবে। এতে করে সকালের নাস্তা আপনাকে পুরো দিন রাখবে সতেজ এবং তরতাজা।

ভাত

সকালে একটু ভারি খাবার খাওয়া ভালো। কিন্তু ভারি খাবার মানে ভাত বা ভাত জাতীয় ভারি খাবার নয় মোটেই। অনেকেই সকালের নাস্তায় ভাত খেয়ে থাকেন। কিন্তু দিনের শুরুতে ভাত খেলে দেহে কার্বোহাইড্রেটের পরিমান অনেক বেড়ে যায়। ফলে সারাদিন দেহে ক্লান্তি ভর করে। মস্তিষ্ক দুর্বল অনুভব করে। এছাড়া সকালের নাস্তায় ভাত খেলে মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। সুতরাং সকালের নাস্তায় ভাত খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।

তৈলাক্ত খাবার

সকালের নাস্তায় তেল চুপচুপে পরোটা কিংবা তেলে ভাজা সিঙ্গারা সমুচা খুবই অস্বাস্থ্যকর খাবার। এতে দিনের শুরুতেই দেহে ফ্যাট জমা শুরু করে এবং শরীর ভারী হয়ে আসে। সকালের তরতাজা ভাব একেবারেই দূর হয়ে যায়। এমনকি তেলে ভাজা ডিমও সকালের নাস্তার জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং সকালের নাস্তায় তেলে ভাজা খাবার অভ্যাস ত্যাগ করুন।

বিস্কিট

অনেকেই আছেন সকালের নাস্তায় চায়ের সাথে ২/৩ টি বিস্কিট খেয়ে থাকেন। এই কাজটি মোটেও করবেন না। সারারাত না খাবার ফলে সকালবেলা আমাদের পরিপাকযন্ত্র দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায় একটু দুর্বল থাকে। তখন শক্ত বিস্কিট জাতীয় খাবার আমাদের পরিপাকযন্ত্রের হজম করতে সমস্যা হয়। তাই বিস্কিট ধরনের শক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ নয়। এই সময় পানি জাতীয় ফলমূল এবং খাবার খাওয়া পরিপাকযন্ত্র জন্য ভালো।

পাউরুটি

অনেকেই সময় স্বল্পতার কারণে সকালের নাস্তায় ১/২ টুকরো পাউরুটি খেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই ভাবেন পাউরুটি খেলে ওজন কমানো সম্ভব, সেকারণে নিয়মিত ২ বেলা পাউরুটি খেয়ে থাকেন। কিন্তু পাউরুটিকে যতটা স্বাস্থ্যকর খাবার বলে ধারণা করা হয় ঠিক ততোটা স্বাস্থ্যকর খাবার নয় এই পাউরুটি। পাউরুটি তৈরির সময় অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান বাদ দেয়া হয়। এতে পরিমিত ফাইবারও থাকে না। এছাড়া পাউরুটিতে সাধারণ রুটির তুলনায় অনেক বেশি মাত্রায় ব্যবহার করা হয় লবণ। বাজারে যে সব পাউরুটি পাওয়া যায় তার প্রায় সবগুলোতেই থাকে অনেক লবণ এবং সোডিয়াম যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এবং পাউরুটিতে রয়েছে লবণ, রিফাইন্ড চিনি, প্রিজারভেটিভস যা ওজন বাড়ায়। সকালের নাস্তায় ১/২ টুকরো পাউরুটি খেলে খুব দ্রুত তা হজম হয়ে যায় এবং এটি খুব দ্রুত ক্ষুধার উদ্রেক করে। বলতে গেলে পাউরুটি আপনার দেহের কোনো কাজেই আসে না।

সিরিয়াল

সকালের নাস্তায় স্বাস্থ্যকর মনে করে অনেকেই সিরিয়াল খেয়ে থাকেন। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। অনেক সিরিয়ালের রয়েছে প্রচুর পরিমানে চিনি। যা খাওয়ার সাথে সাথে আমাদের রক্তের চিনির মাত্রা বাড়িয়ে তোলে এবং দেহকে অবসাদগ্রস্থ করে তোলে। তাই দিনের শুরুতেই দেহকে ক্লান্ত করে ফেলতে না চাইলে সিরিয়াল খাওয়া বন্ধ করুন।

কেক

সময় বাঁচাতে অনেকেই বাজার থেকে কিনে আনা কেক খেয়ে সকালের নাস্তা করে নেন। কিন্তু এই কাজটি কখনোই করবেন না। কেক একটি অস্বাস্থ্যকর খাবার যাতে প্রচুর পরিমানে চিনি এবং তেল ব্যবহার করা হয়। মাত্র ১ স্লাইস কেকে থাকে ৩০০-৪০০ ক্যালোরি। দিনের শুরুতে এতো পরিমান ক্যালোরি আপনার দেহে খুব দ্রুত মুটিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

ফলের জুস

অনেকে স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে ফলের জুসকে সকালের নাস্তায় অনেক বেশি প্রাধান্য দেন। কিন্তু ফলের জুস স্বাস্থ্যকর নয় বরং অস্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। বিশেষ করে বাজার থেকে কিনে আনা বোতলজাত ফলের জুস। এতে থাকে প্রচুর পরিমানে চিনি, ফ্লেভার এবং প্রিজারভেটিভ যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। যদি ঘরে বানানো জুস খেয়ে থাকেন তাতেও অনেকে স্বাদের জন্য যোগ করেন চিনি যা একেবারেই উচিৎ নয়। সুতরাং সকালের নাস্তায় ফলের জুস খাওয়া বাদ দিন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top