সকল মেনু

এবার ফেসবুক অধিগ্রহণ করবে ড্রোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ৫ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ওয়াটসঅ্যাপের পর এবার ফেসবুক পরিকল্পনা করছে আরেকটি প্রতিষ্ঠান কিনে নেবার। তবে বিগত দুটি প্রতিষ্ঠান (ইনস্টাগ্রাম এবং ওয়াটসঅ্যাপ) এর মতন এই প্রতিষ্ঠান কোন অ্যাপ নির্মাতাকারী প্রতিষ্ঠান নয়। এবার ফেসবুক একটি ড্রোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কিনে নেবার পরিকল্পনা করছে। আর এর পিছনে তাদের উদ্দেশ্য অন্য প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান থেকে ভিন্ন বলা যায়। তারা এই প্রতিষ্ঠান কিনে নিচ্ছে পৃথিবীতে ড্রোনের মাধ্যমে ইন্টারনেটকে আরও সহজলভ্য করে তুলতে।

ফেসবুক হল সে সকল প্রতিষ্ঠানদের মধ্যে একটি যারা কিনা ইন্টারনেট.ওআরজি (internet.org) প্রকল্পটি প্রথম শুরু করে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল মূলত পুরো বিশ্বের প্রায় ৫০০ কোটি মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়া। আর এই প্রকল্পটিকে বাস্তবায়নে সাহায্য করতেই ফেসবুক পরিকল্পনা করছে টাইটান এরোস্পেস নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে কিনে নেবার। টাইটান এরোস্পেস প্রতিষ্ঠানটি এমন ড্রোন উদ্ভাবন করেছে যা কিনা টানা ৫ বছর আকাশে উড়ে বেড়াতে পারবে। আর এটি সম্ভব কারন ড্রোনগুলো মূলত সোলার অথবা সৌর শক্তিতে চলে থাকে। আর যদি সকল তথ্য ঠিক হয়ে থাকে তবে ফেসবুক, টাইটান এরোস্পেসকে প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে কিনে নিবে।

বর্তমানে যা ধারণা করা যাচ্ছে, ফেসবুক এই ড্রোন ব্যবহার করে সেই সকল অঞ্চলে পৌছাতে চায় যেখানে ইন্টারনেট সেবা নেই। আর তারা এই কাজ শুরু করতে চায় আফ্রিকাকে দিয়ে। আর এ উদ্দেশ্যে তারা প্রায় ১১,০০০ ড্রোন বানাতে চায় বিশেষ করে টাইটানের সোলারা ৬০ মডেলটি।

টাইটানের এই ড্রোনগুলো মূলত একটি অরবিটাল স্যাটেলাইটের প্রায় সকল কাজই আসলে করতে পারে কিন্তু এর মূল্য তুলনামূলক কম। ড্রোনগুলো নানা কাজে ব্যবহার করা সম্ভব আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে ভূমি পরিদর্শন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতন কাজে।

টাইটানের এ সকল ড্রোনের মধ্যে সোলারা ৫০ এবং ৬০ রাতে লঞ্চ করা যায় তার নিজস্ব ব্যাটারি প্যাকের মাধ্যমে আর যখন সূর্য উঠে তখন টার আলো থেকে এটি শক্তি সঞ্চয় করতে শুরু করে। এর ফলে এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০ কিলোমিটার উপরে ভেসে থাকতে পারে প্রায় টানা ৫ বছর। আর এই ড্রোনের এই ব্যবস্থা এটিকে ইন্টারনেট.ওআরজির উদ্দেশ্য পুরনে যথেষ্ট কার্যকর ভুমিকা পালন করতে পারবে।

তবে এখানেও ফেসবুকে প্রতিযোগী রয়েছে। আর এক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী হল গুগল তাদের ‘প্রজেক্ট লুন’ প্রকল্প নিয়ে। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে কেন এত কিছু করার চেষ্টা শুধুমাত্র ফ্রি ইন্টারনেট প্রদান করতে। যদিও প্রজেক্ট লুন অথবা ইন্টারনেট.ওআরজি এর প্রধান উদ্দেশ্য হল সকল মানুষের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া। এর একটি ব্যবসায়িক দিকও আছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর দিকে তাকালেই তা বোঝা যাবে। ফেসবুকের ১৯ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ওয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয়া এবং ৬০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে টাইটান এরোস্পেস। এখন ফেসবুক যদি আফ্রিকায় বিনামূল্যে নেট দিয়ে ওয়াটসঅ্যাপের একটি বেসিক ভার্সন প্রদান করে যা কিনা শুধুমাত্র টেক্সট মেসেজ অথবা স্ট্যাটাস দিতে দিবে তবে তা অনেকেই ব্যবহার করবে। আর যেহেতু এটি কম ডাটা ব্যবহার করে ড্রোন দিয়ে সমস্যা হবে না। এমনকি ফেসবুকের ওনাভো (ফেসবুকের কিনে নেয়া আরেক প্রতিষ্ঠান) প্রজেক্ট সম্পন্ন হলে কম সিগন্যালে ক্ষুব অল্প পরিমাণ ডাটা আদান প্রদান করেই এটি সম্ভব হবে। মাঝ দিয়ে ফেসবুক এবং ফেসবুকের বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা যা তাদের আয়ের মূল উৎস তা আরও মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে। ঠিক একই ঘটনা ঘটবে গুগলের ক্ষেত্রেও। যা কিনা সবিশেষে ফেসবুক এবং গুগলের জন্যেও লাভই বয়ে আনবে।

এখন ফেসবুকের এই প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ নিয়ে অনেক গুঁজব শোনা গেলেও, টাইটান অথবা ফেসবুক এ বিষয়ে কোন কিছু স্বীকার করেনি। তবে শোনা যাচ্ছে যে, এই চুক্তি প্রায় সম্পন্ন হবার পথে। এখন এর ফলে সত্যিকার অর্থে ইন্টারনেট কতটুকু সহজলভ্য হয়ে উঠবে তা সময়ের সাথেই দেখা যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top