সকল মেনু

জামায়াত ও আ.লীগ এক কাতারে

ঢাকা, ২৮ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : গত দুই ধাপে শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত ২১টি আসনে জয়লাভ করেছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১৩টি এবং দ্বিতীয় ধাপে ৮টি। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, জামায়াত-সমর্থিত জয়ী এলাকায় কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটেনি।

দুই ধাপে নির্বাচনের জামায়াত বাদে প্রায় প্রতিটিতে কোনো-না-কোনো গন্ডগোল হয়েছে। জামায়াতের ক্ষেত্রেই একমাত্র ব্যতিক্রম। তাই নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, জামায়াতের সঙ্গে কি আওয়ামী লীগের কোনো সমঝোতা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে জামায়াতের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীরা হলেন : বগুড়ার কাহালুতে তায়েব আলী, শিবগঞ্জে আলমগীর হোসাইন, রাজশাহীর বাঘায় জিন্নাত আলী, চিরিরবন্দরে আবতাব উদ্দিন মোল্লা, গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আবুল কাওসার মো. নজরুল ইসলাম, লোহাগাড়ায় ফরিদ উদ্দিন খান, ঝিনাইদহের মহেশখালীতে মো. আব্দুল হাই ও সাতক্ষীরা শ্যামনগরে আব্দুল বারি।

এর আগে প্রথম ধাপে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন জামায়াতের কোটচাঁদপুরে তাজুল ইসলাম, কয়রায় মাওলানা আ খ ম তমিজ উদ্দিন, বোঁদায় শফিউল্লাহ, রংপুর মিঠাপুকুরে গোলাম রব্বানী, নীলফামারীর জলঢাকায় সৈয়দ আলী, বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় আব্দুল গনি মন্ডল, নন্দীগ্রামে নুরুল ইসলাম, শেরপুরে দবিবুর রহমান, পাবনার সাঁথিয়ায় মাওলানা মোখলেছুর রহমান, আটঘরিয়ায় মো. জহুরুল ইসলাম খান, গোলাপগঞ্জে নাজমূল ইসলাম ও জৈয়ন্তাপুরে জয়নাল আবেদীন।

সরেজমিনে জামায়াত প্রার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের গোপন আলাপচারিতা এমনকি একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতেও দেখা গেছে। তারা কেউ কারো বিরুদ্ধে কোনো উসকানিমূলক কথা বলেননি। কিন্তু যেসব এলাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছে, সেখানে এক ধরনের বৈরিতার মধ্য দিয়েই নির্বাচন করতে হয়েছে। ফলে সহিংসতা বা মারামারি ওইসব এলাকাতেই হয়েছে।

আবার দেখা যায় যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত তিন দলেরই প্রার্থী রয়েছে সেখানেও বিএনপি বাদে বাকি দুই দলের প্রার্থীদের একটা গোপন মিল দেখা গেছে। এমনকি জামায়াত-বিএনপির মধ্যে অনেক জায়গায় কথা-কাটাকাটি, হাতাহাতি ইত্যাদি অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। ফলে জামায়াত এক ধরনের ফায়দা হাসিল করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

এ বিষয়ে জামায়াতের এক কেন্দ্রীয় নেতা রাইজিংবিডিকে বলেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপি না এলেও আমরা এককভাবে নির্বাচন করতাম। সবশেষে বিএনপি এসেছে। কোথাও রফা হয়েছে আবার কোথাও হয়নি। তাই যেখানে সমাধান হয়নি সেখানে উভয়েই প্রার্থী দিয়েছে। এতে কে জিতল না জিতল তা দেখার বিষয় নয়। তবে বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতকে অনেকভাবে অসহযোগিতা করেছে বলে মনে করেন এই কেন্দ্রীয় নেতা।

এদিকে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, জামায়াত তো আওয়ামী লীগের পুরোনো বন্ধু। ১৯৯৬ সালে জামায়াতের গোলাম আজম তত্ত্বাবধায়কের ফর্মুলা দিলেন। আওয়ামী লীগ তা লুফে নিয়ে আন্দোলন করল। ২০০৮ সালে আমরা নির্বাচনে যাব না কিন্তু মুজাহিদের জন্য নির্বাচনে ম্যাডাম যেতে বাধ্য হয়েছেন। তাই এবারও দেখা যাচ্ছে মাঠে-ময়দানে জামায়াত এবং আওয়ামী লীগ মিলেমিশেই নির্বাচন করছে। এক কাতারে থেকে তারা নির্বাচন করছে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকার জন্যই আরো বেশি আসন পাওয়া সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে পলাশবাড়ী উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (দুই গ্রুপের এক গ্রুপ) আলী আজগর রাইজিংবিডিকে বলেন, কোনো কোনো জায়গায় জামায়াতের সঙ্গে পেরে ওঠা সম্ভব নয়। তাই গায়ে পড়ে ঝগড়া করা সম্ভব হয়নি। প্রত্যেক কেন্দ্রে তারা একাধিক পুলিং এজেন্ট দিয়েছে। এ ছাড়া বাইরে তাদের বিশাল আকারের ক্যাডার বাহিনী প্রস্তুত রেখেছিল। মারামারি লাগলে কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে পারা যেত না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top