সকল মেনু

আবারও সক্রিয় জেএমবি

ঢাকা, ২৩ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) দেশজুড়ে আবারও সক্রিয় হয়েছে। এই সক্রিয়তার দৃষ্টান্ত পাওয়া গেল রোববার সশস্ত্র হামলা চালিয়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে বন্দী ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে।

তারা এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা এবং দুজনকে গুরুতর জখম করে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জেএমবির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন বন্দীকে। এভাবে পুলিশ হত্যা করে প্রিজন ভ্যান থেকে বন্দী ছিনতাইয়ের ঘটনা দেশে এটাই প্রথম বলে জানা গেছে।

দেশে জেএমবি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে- এ কথা মুখে স্বীকার না করলেও আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার রাইজিংবিডিকে বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশে আল-কায়েদা নেটওয়ার্কের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে বলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে যে সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান আইজিপি।

জাতিসংঘের ‘সিকিউরিটি কাউন্সিল আল-কায়েদা স্যাংকশন কমিটি’র রেজ্যুলেশনে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পরিচালিত দুটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে আল-কায়েদার সম্পৃক্ততা রয়েছে। সংস্থা দুটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকার কথা উল্লেখ করে রেজ্যুলেশনে আরো বলা হয়, এর মধ্যে একটি সংস্থার মাধ্যমে একজন বাংলাদেশি ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট অফিসে হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।

রেজ্যুলেশনে বাংলাদেশ সম্পর্কে তথ্য ‘আপডেট’ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই বিশেষ কমিটি বলেছে, বাংলাদেশে সক্রিয় এই সংস্থা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ‘গ্লোবাল রিলিফ ফাউন্ডেশন’-এর ওপর জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আরোপ রেখেছে।

এ ছাড়া ‘আল হারামাইন’ নামে আরেকটি সংস্থার বাংলাদেশ শাখা আল-কায়েদা নেটওয়ার্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলে উল্লেখ রয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আলাদা একটি নথিতে। এতে বলা হয়েছে, আল-কায়েদা নেটওয়ার্ক এবং ওসামা বিন লাদেনকে (বর্তমানে মৃত) আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে এই এনজিও। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কমিটির নথিতে আল-হারমাইনের মাধ্যমে আল-কায়েদার সহিংস উদ্যোগে একজন বাংলাদেশিও জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের কন্স্যুলেটে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় নজরদারি করে তথ্য দেওয়ার কাজ দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশি ওই নাগরিককে। আল হারামাইনের একজন সিনিয়র নেতাই তাকে কাজটি দেন বলেও উল্লেখ রয়েছে।

সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার স্বীকারোক্তি থেকেই এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘের নথি। বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি স্বীকার করেন, আফগানিস্তানে আল-কায়েদার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সেখানেই ১৯৯৪ সালে ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়।

সিকিউরিটি কাউন্সিল আল-কায়েদা স্যাংকশন কমিটির নথি থেকে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২১ জুন ‘গ্লোবাল রিলিফ ফাউন্ডেশন’-এর ওপর প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ। এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির বিষয়ে কিছু তথ্য আপডেট করা হয়, যাতে সংস্থাটি এখনো বাংলাদেশে তার সক্রিয়তা বজায় রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

২০০৪ সালে বাংলাদেশে আল-কায়েদার অস্তিত্ব আবিষ্কার করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সৌদি আরবভিত্তিক এনজিও ‘আল হারামাইন ইসলামিক ফাউন্ডেশন’-এর বাংলাদেশ শাখা আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে জাতিসংঘ ‘সিকিউরিটি কাউন্সিল আল-কায়েদা স্যাংকশন কমিটি’ তখনই সংস্থাটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

আল হারামাইন বেসরকারি সেবামূলক ও শিক্ষাবিষয়ক এনজিও হিসেবে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরে এর আড়ালে জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বলে জাতিসংঘের নথিতে উল্লেখ রয়েছে। তাতে বলা হয়, সংস্থাটি ওসামা বিন লাদেন তথা আল-কায়েদাকে অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top