সকল মেনু

রানা প্লাজা ও তাজরীনের দুর্ঘটনা এড়ানো যেত

ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : রানা প্লাজা ও তাজরীন ফ্যাশনের দুর্ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল বলে মনে করেন আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা।

বৃহস্পতিবার রূপসী বাংলা হোটেলে বাংলাদেশ মৌলিক নীতি ও কর্মক্ষেত্রে অধিকারের প্রসার শীর্ষক শ্রম আইনের উপর প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা এ কথা বলেন।

মজীনা বলেন, গত বছরের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ভয়ংকর দিন। তাজরীন ফ্যাশনের আগুনে পুড়ে মারা যায় ১১২ জন শ্রমিক। একই বছরের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেক ভয়ংকর দিন। এদিন রানা প্লাজা ধসে ১১৩২ জন শ্রমিক মারা যায়। এই জঘন্য ঘটনাগুলো এত মানুষের জীবন ধ্বংস করে দিলো। অথচ দুটি দুর্ঘটনাই এড়ানো যেত বলে আমার বিশ্বাস।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বিশ্বাস তাজরীন ফ্যাশনস ও রানা প্লাজার ফ্যাক্টরীগুলোর শ্রমিকদের নিজ মতামত প্রকাশের সংগঠিত পন্থা থাকতো তাহলে তারা এই ফ্যাক্টরিগুলোর মালিকদের ও তত্বাবধায়কদের রুখে দাঁড়াতো যাদের নির্মম লোভ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার প্রতি অগ্রাহ্য এই দুই দুর্যোগের অবতারণা করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমার ৯৩ বছর বয়সী বৃদ্ধ মা এখনো বলেন যে, জীবনের সবচেয়ে আঁধারময় মুহূর্তেও আশার ক্ষীণ আলো দেখা যায়। আমার বিশ্বাস যে তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের মতো অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘটনার আড়ালেও আশার একটি ক্ষীণ আলো উঁকি দিচ্ছে।

‘আমার বিশ্বাস এই দুর্ঘটনাগুলো থেকেই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে পরিবর্তন আসবে। আমার বিশ্বাস এই দুর্ঘটনাগুলো বাংলাদেশ ও দেশটির অনেক বন্ধু এবং অংশীদারদের আরো দৃঢ়ভাবে নিবেদিত করেছে।’

তিনি আরো বলেন, এই খাতের মৌলিক রূপান্তরের অগ্রযাত্রার জন্য আমি অনেকগুলো শক্তিকে সামনের দিকে এগিয়ে আসতে দেখছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, গত বছর ২৭ জুন প্রেসিডেন্ট ওবামা যখন বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করেন তখন তিনি একটি কর্মপরিকল্পনা প্রদান করেন যেখানে এই খাতকে নিরাপদ করে তুলতে অনেকগুলো পদক্ষেপ চিহ্নিত করা হয়। গত বছর ৮ই জুলাই জেনেভাতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন একটি সাসটেইনেবিলিটি কমপ্যাক্ট স্বাক্ষর করে। যার আওতায় বাংলাদেশ এই চুক্তিতে উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। এই পদক্ষেপগুলো জিএসপি কর্মপরিকল্পনার সংগে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি তার নিজস্ব মত প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকার পোশাক খাতের পরিবর্তনে শক্তিশালী নেতৃত্ব দিচ্ছে। শ্রম, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র সচিবরা এই খাতের পরিবর্তনে সরকারের চালিকা শক্তি, জিএসপি একশন প্ল্যান ও সাস্টেইনেবল কম্প্যাক্ট এর রোড ম্যাপ অনুযায়ী অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে। যা অগ্নি নিরাপত্তা, কারখানার কাঠামোগত শক্তিমত্তা এবং স্বাধীনভাবে সংগঠন করার শ্রমিকের অধিকারের প্রতি সম্মান এর পরিবর্তনকে প্রভাবিত করবে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সর্ববৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে পরিচিত হবে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ এই লক্ষ্য পূরণে সফল হবে।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফায়জুর রহমান, আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস রেড্ডী ও প্রশিক্ষণার্থীরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top