সকল মেনু

উইন্ডজের অ্যাকটিভেশন প্রোসেস যেভাবে কাজ করে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ২০ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেমের সাথেই প্রথম ‘উইন্ডোজ অ্যাকটিভেশন’ প্রসেসটিকে পরিচয় করানো হয়েছিল। এই ‘উইন্ডোজ অ্যাকটিভেশন’ প্রসেসটির কাজ হচ্ছে আপনি যখন নতুন করে উইন্ডোজ সেট আপ করবেন বা নতুন কোন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম চালিত কম্পিউটার কিনবেন তখন মাইক্রোসফট অ্যাকটিভেশন সার্ভারের মাধ্যমে আপনার উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের কপিটি জেন্যুইন কি না তা পরীক্ষা করে দেখা। এই ফিচারটি আসলে নির্মান করা হয়েছে পাইরেসির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।

তবে মজার কথা হচ্ছে বর্তমানের নতুন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমগুলোর ভার্শনের অ্যাকটিভেশন প্রসেসটিকে কিছুটা হলেও সহজ করে দেয়া হয়েছে। কেননা, যদি এখন আপনি কোন কারনে আপনার কপিটি অ্যাকটিভ করতে না পারেন তাহলেও আপনার অপারেটিং সিস্টেমটি কাজ করতে থাকবে, তবে উইন্ডোজ এক্সপির কথা আলাদা।

কীভাবে উইন্ডোজের প্রোডাক্ট অ্যাকটিভেশন কাজ করে থাকে

আপনি যখন আপনার কম্পিউটারে উইন্ডোজের একটি অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করবেন তখন উইন্ডোজ আপনাকে আপনার কপিটি জেন্যুইন করার জন্য প্রম্পট করবে। আপনি যখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনার কপিটি অ্যাকটিভ করবেন তখন মাইক্রোসফট এর অ্যাকটিভিশন সার্ভারে থাকা প্রোডাক্ট কী-র সাথে আপনার কপিটির কী মিলিয়ে দেখবে, এবং আপনার দেয়া উইন্ডোজের প্রোডাক্ট কী-টি যদি জেন্যুইন না হয়ে থাকে (সহজ কথায় পাইরেটেড কী হয়ে থাকে) অথবা অন্য একটি কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়ে থাকে তবে অ্যাকটিভেশন প্রসেসটি সম্পন্ন হবেনা।

উইন্ডোজ একটি ফোন কলের সাহায্যেও অ্যাকটিভেট করে নেয়া যায়। উইন্ডোজ একটি কোড প্রোভাইড করে থাকে ফোন কলের সময় যা আপনি অ্যাকটিভেশন কী হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি একজন অটোম্যাটিক বোটের সাথে কথা না বলে একজন মানুষের সাথেও কথা বলতে পারেন যদি আপনার অ্যাকটিভেশন প্রোসেস বার বার ব্যার্থ হতে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি আপনার কপিটি একটি নতুন কম্পিউটারে ব্যবহার করতে চান, তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে একজন মাইক্রোসফট এক্সিকিউটিভের সাথে কথা বলে আপনি কি করতে চাচ্ছেন তা তাকে বলতে হবে এবং এরপর তারা আপনার উইন্ডোজটি অ্যাকটিভ করে দেবে।

আপনি যদি আপনার কম্পিউটারের বেশির ভাগ হার্ডওয়্যার কম্পোনেন্ট একই সময়ে পরিবর্তন করে থাকেন তবে সেক্ষেত্রেও আপনাকে নতুন করে উইন্ডোজের অ্যাকটিভেশন প্রোসেসের সম্মুখীন হতে পারে। যদিও মাইক্রোসফট এখন পর্যন্ত ব্যাখ্যা করে বলেনি যে ঠিক কোন কোন হার্ডওয়্যার কম্পোনেন্ট গুলো পরিবর্তন করার ফলে এই সমস্যাটি হতে পারে।

1

OEM অ্যাকটিভেশন

অনেক কম্পিউটার ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠান তাদের কম্পিউটার ম্যানুফ্যাকচার করার সময় কম্পিউটারের বায়োসে একটি ডিজিটাল কী ব্যবহার করে থাকে যার ফলে উইন্ডোজ ইন্টারনেটের সাথে কানেক্টেড হলেই এটি নিজে নিজেই OEM (original equipment manufacturer) প্রোডাক্ট কী-র মাধম্যে অ্যাকটিভেশন প্রোসেসটি সম্পন্ন করে ফেলে। এটি প্রিইন্সটল্ড উইন্ডোজ কম্পিউটারের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এরকম করা হয় যাতে করে বেশিরভাগ ব্যবহারকারীকে উইন্ডোজ অ্যাকটিভিশনের প্রোসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে না হয়। এই ক্ষেত্রে হার্ডওয়্যার কম্পোনেন্ট পরিবর্তন করলেও নতুন করে উইন্ডোজ রিঅ্যাক্টিভেশন করতে হয়না।

আপনি যদি একটি OEM উইন্ডোজ কী যুক্ত একটি কম্পিউটারে অন্য একটি উইন্ডোজের কপি ইন্সটল করেন তবে আপনাকে আবার উইন্ডোজের অ্যাকটিভেশন প্রোসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। কেননা OEM অ্যাকটিভেশন প্রোসেসটি শুধুমাত্র উইন্ডোজের সেই কপিটির সাথেই কাজ করবে যা আপনার কম্পিউটারটিতে আগে থেকেই ইন্সটল করা ছিল।

2

উইন্ডোজ অ্যাকটিভেশন না করলে কী হয়?

উইন্ডোজ অ্যাকটিভেশন না করলে মূলত একেকটি উইন্ডোজের ভার্শনে একেক রকম সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন, উইন্ডোজ এক্সপির ক্ষেত্রে ঠিক ৩০ দিন পর উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমটি আর ব্যবহার করা যাবেনা যদি এটি অ্যাকটিভ করা না হয় অথবা অ্যাকটিভেশন প্রোসেস ব্যার্থ হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে, উইন্ডোজ এক্সপি আবার ৬০ দিনের গ্রেস প্রিয়ড দিয়ে থাকে।

উইন্ডোজ ভিস্তা অথবা উইন্ডোজ ৭ – এর ক্ষেত্রে যদি ৩০ দিনের মাঝে যদি অ্যাকটিভ করা না হয় অথবা অ্যাকটিভেশন প্রোসেস ব্যার্থ হয়ে থাকে তবে আপনি একটি ‘you’re using a non-genuine version of windows’ টাইপের একটি বার্তা আপনার মনিটরের নিচের ডান দিকে দেখতে পাবেন। ডেস্কটপের ব্যাকগ্রাউন্ড কিছু ক্ষেত্রে কালো হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে, আপনি শুধুমাত্র ক্রিটিকাল আপডেট গুলো এবং সিকিউরিটি প্যাচ সমূহই উইন্ডোজের আপডেট থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন এবং আপনাকে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম প্রতিনিয়ত উইন্ডোজ অ্যাকটিভ করার কথা জানিয়ে দেবে। তবে, অন্য সকল সুবিধা আপনি ব্যবহার করতে
পারবেন।

উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেমে উইন্ডোজ এক্সপি’র মতো কোন গ্রেস প্রিয়ড নেই। আপনি যদি আপনার উইন্ডোজ ৮ এর আপনার কপিটি অ্যাকটিভ করে না থাকেন তবে আপনি উইন্ডোজের ভার্শন সহ একটি বার্তা দেখতে পাবেন আপনার কম্পিউটারের মনিটরের নিচের ডান দিকের অংশে। এক্ষেত্রে, অনেক পারসোনালাইজেশন এর সুবিধা সমূহ আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না, যেমন – আপনি উইন্ডোজ ৮ অ্যাকটিভ না করে থাকলে ডেস্কটপে ব্যবহৃত ওয়ালপেপার পরিবর্তন করতে পারবেন না।

3

উইন্ডোজ এক্সপি’র ক্ষেত্রে

মাইক্রোসফট থেকে ইতিমধ্যমেই একটি ঘোষণা দেয়া হয়ে গেছে যে ৮ এপ্রিল ২০১৪ এর পর মাইক্রোসফট আর উইন্ডোজ এক্সপি’র জন্য কোন সাপোর্ট সরবারহ করবেনা, এবং আমি একটু আগেই বলেছি যে গ্রেস প্রিয়ড অতিক্রম হবার পর উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেমটি কাজ করবেনা। এখন যদি, মাইক্রোসফট তাদের অ্যাকটিভেশন সার্ভার বন্ধ করে দেয় তবে উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহারকারীদের জন্য সমস্যাই হয়ে যাবে।

4

তবে, মাইক্রোসফট থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে যে তারা উইন্ডোজ এক্সপির জন্য অ্যাকটিভেশন সার্ভার বন্ধ করবেনা, তাই যারা এখনও উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহারকারীরা আছেন তারা সমস্যার মুখোমুখি হবেন না। উইন্ডোজের এক্সপির পুরোনো কপিগুলো ঠিক মতই কাজ করবে, এবং সেগুলো সাধারণ ভাবেই অ্যাকটিভ করা যাবে। ভবিষ্যতেও অন্যান্য উইন্ডোজের ভার্শন গুলোরও অ্যাকটিভেশন প্রোসেসেও সমস্যা হবেনা এমনকি যদি মাইক্রোসফট থেকে সাপোর্ট বন্ধও করে দেয়া হয়। যতদিন পর্যন্ত মাইক্রোসফট তাদের অ্যাকটিভেশন সার্ভার চালু রাখবে ততদিন অ্যাকটিভেশন সংক্রান্ত কোন সমস্যাই হবেনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top