সকল মেনু

বাবার হত্যাকারীদের ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণায় রাহুল গান্ধির আপত্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক , ২০ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজিব গান্ধির হত্যাকারীদের ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন রাহুল গান্ধি। রাজীব গান্ধির তিন হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে মঙ্গলবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ের ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই লোকসভা নির্বাচনের মুখে তামিলনাড়ুর মূখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা বুধবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে জানান, রাজীব হত্যায় দোষী সাত জনকেই মুক্তি দেবেন তিনি। এ জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্র অনুমতি না দিলে তিন দিনের মধ্যে রাজ্যই তাদের ছেড়ে দেবে বলেও জানিয়েছেন জয়ললিতা।

জয়ার এ ঘোষণা নিয়ে জাতীয় এবং আঞ্চলিক রাজনীতির মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেছে। দক্ষিণের দলগুলি জয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে,তামিলনাড়ুর বিভিন্ন অংশে উৎসবও শুরু হয়ে গিয়েছে এ দিন। কিন্তু কংগ্রেস এর ঘোরতর বিরোধী। রাহুল গান্ধি নিজেই বলেছেন, “আমার বাবা শহিদ হয়েছিলেন। তবু ব্যক্তিগত ভাবে আমি মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকারীদের যদি মুক্তি দেওয়া হয়, তা হলে সাধারণ মানুষ কী বিচার প্রত্যাশা করবেন?”

জলললিতার এই ঘোষণার পর ভারতে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্য সরকার কি এ ভাবে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারে? এ প্রশ্নে জয়ার বক্তব্য, ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪৩৫ ধারা অনুযায়ী অপরাধীদের মুক্তি দিতে কেন্দ্রের অনুমতি লাগবে। কিন্তু তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রের জবাব না এলে ওই কার্যবিধির ৪৩২ ধারায় রাজ্যই তাদের মুক্তি দিতে পারে। জয়ললিতার এই দাবি অবশ্য নস্যাৎ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তামিলনাড়ু সরকারের তরফে কোনও আর্জি আসেনি জানিয়ে মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “সিআরপিসি-র ৪৩৫ ধারায় স্পষ্টই বলা হয়েছে, কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা কোনও অপরাধের তদন্ত এবং কেন্দ্রীয় আইনে তার বিচার হলে একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই দোষীদের শাস্তি কমাতে বা মুক্তি দিতে পারে।” রাজীব হত্যাকারীদের তদন্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। বিচারও হয়েছে কেন্দ্রীয় আইন টাডায়। ফলে অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার কোনও অধিকার রাজ্যের নেই, এমনটাই দাবি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গোটা বিষয়টি তারা পাঠিয়ে দিয়েছে আইন মন্ত্রকের কাছে।

কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, ক্ষমার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এখনও চলছে গান্ধি পরিবার। তাই সুপ্রিম কোর্ট প্রথমে ফাঁসির সাজা দিলেও কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারই তা বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। কিন্তু হত্যাকারীদের ফাঁসি মকুব এক জিনিস। আর তাদের যে ভাবে একেবারে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তা বিপজ্জনক। একটি সর্বভারতীয় দলের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top