সকল মেনু

আসছে ডালিমের অনুকরণে তৈরি ব্যাটারি!

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ১৯ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : আমরা সচরাচর যেসব লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করে থাকি মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতির জন্য, তাদেরকে আরও উন্নতি করার পথে রয়েছে কিছু বাধা। বিজ্ঞানীরা চাইছিলেন এই ব্যাটারিতে সিলিকন ব্যবহার করতে, যাতে ব্যাটারি হয়ে উঠবে অনেক ছোট, হালকা এবং অনেক বেশি শক্তিশালী। সিলিকন ব্যবহারে যেসব বাধা রয়ে গিয়েছিলো সেসব বাধা দূর করার জন্য উদ্ভাবন হয়েছে নতুন এক ধরণের ব্যাটারি। এর ভেতরের গঠন অনেকটা ডালিমের মতো, এবং এতে ব্যবহার করা সম্ভব হবে সিলিকন।

অ্যানোড বা ঋণাত্মক ইলেকট্রোড হলো ব্যাটারির সেই অংশ, চার্জ দেবার সময়ে যেখানে শক্তি জমা হয়। আর এই অংশটাকেই তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছিলো সিলিকন দিয়ে। সিলিকনের তৈরি অ্যানোড বর্তমান সময়ে ব্যবহার্য গ্রাফাইট অ্যানোডের চাইতে ১০ গুণ বেশি শক্তি ধারণ করে রাখতে পারে। কিন্তু সিলিকন অনেক ঠুনকো হয়, ব্যাটারি চার্জ করার সময়ে তা ফুলে যায় এবং ভেঙ্গে পড়ে। শুধু তাই নয়, এটা ব্যাটারির ইলেকট্রোলাইটের সাথে বিক্রিয়া করে তৈরি করে আবর্জনা। এই আবর্জনা অ্যানোডের ওপরে জমা হয় এবং এর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।

ব্যাটারিকে আরও কার্যকর করতে হলে সিলিকনই ব্যবহার করতে হবে। তাহলে উপায় কি? ব্যাটারি তৈরি করা হলো বটে, তবে তা মোটেই একেবারে সনাতন পদ্ধতির ব্যাটারি নয়। এর ভেতরে কার্বনের খোসায় ঢাকা এক গুচ্ছ সিলিকন ন্যানোপার্টিকল সাজানো হলো, ঠিক যেমনভাবে ডালিমের মাঝে থাকে এর বীজ। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির যেসব উদ্ভাবকের মাথা থেকে এই বুদ্ধি বের হয়েছে, তাদের মতে এটা ব্যাটারির ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। এই পরীক্ষার সাথে জড়িত ই কুই এর ভাষ্যমতে, এখনও কিছু বাধা রয়ে গেছে কিন্তু শীঘ্রই এসব বাধা পেরিয়ে সম্ভব হবে সিলিকন ব্যবহার করে তৈরি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। একটু কমদামে সিলিকন উৎপাদন করা গেলে এবং এই প্রক্রিয়া আরও সরল করা গেলেই মোটামুটি কাজ সারা। কারণ এক হাজারবার চার্জ এবং রিচার্জ করার পরেও এর কার্যকারিতা থাকে ৯৭ শতাংশ। এ কারণে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এই ব্যাটারি ইতোমধ্যেই ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।

সিলিকনের তৈরি ডিমের খোসার মতো ন্যানোপার্টিকলকে প্রথমে গুচ্ছবদ্ধ করা হয় এবং এর পর একেকটি গুচ্ছের ওপর বেশ কড়া করে কার্বনের প্রলেপ দেওয়া হয়। এই কার্বনের প্রলেপ সিলিকনের গুচ্ছকে একসাথে ধরে রাখে এবং বিদ্যুৎ চলাচলের জন্য স্থিতিশীল একটি রাস্তা করে দেয়। এছাড়াও এই পদ্ধতিতে আবর্জনা জমে না অ্যানোডের ওপরে। ন্যানোপার্টিকল তো আর খালি চোখে দেখা যায় না, তবে এরা একসাথে তৈরি করে খুব মিহি কালো রঙের গুঁড়ো, যা দিয়ে এক টুকরো ফয়েলের ওপর প্রলেপ দিলে তা অ্যানোড হিসেবে কাজ করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top