সকল মেনু

পাহাড় ডিঙ্গালেও টিলাতে ধরা

ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : এর আগে প্রতিপক্ষের রানের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে বিজয় করায়ত্ব করতে সক্ষম হলেও সোমবার মাত্র ১৮০ রানের টিলা অতিক্রম করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বোলারদের সাফল্যকে ম্লান করে দিয়ে সফরকারিদের কাছে ১৩ রানে পরাজয় বরণ করতে হলো তাদের। ফলে তিন ম্যাচ সিরিজে প্রথম ওয়ানডে জিতে ১-০ তে এগিয়ে গেল লঙ্কানরা।  

১৮১ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলের সঙ্গে কোনো রান যোগ করার আগেই মালিঙ্গার বলে আউট হন এনামুল হক। এরপর স্বাগতিক দলের হাল ধরেন শামসুর রহমান ও মুমিনুল হক। এই জুটিতে ৭৯ রান তুলে থিসারা পেরেরার শিকার হয়ে সাঝঘরে ফেরেন মুমিনুল হক। আউট হওয়ার ৪৪ রান করেন তিনি। এরপর শামসুর রহমানের সঙ্গে জুটি বাধেন অধিনায়ক মুশফিক। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি করে রানআউটের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শামসুর। তিনি করেন ৬২ রান। এ দিন সুবিধা করতে পারেননি সাকিবও। দলীয় ১১৯ রানে তিনিও রানআউটের শিকার হন। তখনো জয় থেকে ৬১ রান দুরে বাংলাদেশ। 

অধিনায়ক মুশফিকের সঙ্গে দলকে টেনে নিতে চেষ্টা করেন নাসির। কিন্তু দলীয় ১৩৩ রানে সেনানায়েকের বলে ম্যাথুজের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন নাসির (৮)। একই ওভারে মাহমুদুল্লাও ফিরে যান। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে শঙ্কায় পরে স্বাগতিক দল। সোহাগ গাজীর আউট এই শঙ্কাকে আরো গভির করে। একপ্রান্ত মুশফিক আগলে রাখলেও তাকে সাপোর্ট দিতে ব্যার্থ হয় অভিষিক্ত আরাফাত সানী। এ পর্যায়ে জয় থেকে মাত্র ১৮ রান দুরে থাকতে সাঝঘরের পথে হাটেন দলের কান্ডারি মুশফিকুর রহিম। শেষ পর্যন্ত জয় থেকে ১৪ রান দুরে থাকতে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলে ১৩ রানে হারে তারা।

শ্রীলঙ্কার পক্ষে ম্যাথুজ ৩টি এবং সেনানায়েক ২টি উইকেট নেন।

এর আগে স্বাগতিক বোলারদের তোপের মুখেও থিসারা পেরেরা অনবদ্য ৮০ রানের সুবাদে ৪০ ওভারে ১৮০ রানে অলআউট হয় সফরকারিরা। 

টসে হেরে বৃষ্টি ভেজা মাঠে ব্যাট করতে নেমে ২১.৩ ওভারে দলীয় ৬৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে লঙ্কান সিংহরা। এ সময় টাইগার বোলারদের তোপের মুখে নিয়মিত বিরতিতে সাঝঘরে ফিরেছেন তিলেকারত্নে দিলশান (৩), কৌশল (২০) ও সাঙ্গাকারা (৮), আসান প্রিয়াঞ্জন (৬), চন্দিমাল (১৩), এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (৩), কুলাসেকারা (০) ও ভিনাগে (৭)।
 
এরপর থিসারা পেরেরা ও সেনানায়েকে সফরকারিদের মান রক্ষা করেন। দলের রান ১৫০ হওয়ার আগেই ব্যাক্তিগত ৩০ রান করে বিদায় নেন। শেষ পর্যন্ত থিসারা পেরেরার অপরাজিত ৮০ রানের সুবাদে ১৮০ রান সংগ্রহ করতে সমর্থ হয় শ্রীলঙ্কা। যদিও সোহাগ গাজীর বদান্যতায় থিসারা একবার জীবন পেয়েছেন।

টাইগারদের পক্ষে রুবেল হোসেন, সাকিব আল হাসান ও আরাফাত সানী ২টি করে এবং আল আমিন হোসেন ও সোহাগ গাজী ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।  

সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দুপুর একটায় খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আবহাওয়ার বিরুপ আচরণে সেটা সম্ভব হয়নি। আম্পায়াররা দুই দফা মাঠ পরিদর্শন করে বেলা পৌনে তিনটায় খেলা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সাথে খেলার দৈর্ঘ্য কমিয়ে ৪৩ ওভারে নামিয়ে আনা হয়।

তিন ম্যাচ সিরিজে প্রথম ওয়ানডেতে খেলছেন না পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা, শফিউল ইসলাম ও অলরাউন্ডার নাঈম ইসলাম। অভিষেক হয়েছে আরাফাত সানীর

আজকের ম্যাচের আগে পর্যন্ত ৩৩টি ওয়ানডে ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ২৮টিতে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। অবশিষ্ট চারটি ম্যাচে জিতেছে টাইগাররা। তার মধ্যে তিনটি ছিল দেশের মাঠে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে ড্র করেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ এই পরিসংখ্যান স্বাগতিকদের পক্ষেই কথা বলছে।

২০১২ সালের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা এবং ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছিল টাইগাররা। এবারো সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে চায় স্বাগতিকরা। যদিও এযাবৎ এশিয়া কাপের পরিসংখ্যান লঙ্কানদের পক্ষেই কথা বলে। তবে বিগত কয়েক বছরে মুশফিকের মাঠের পারফর্মেন্স বলে অন্য কথা। অভিজ্ঞতার কিছু ঘাটতি থাকলেও দিন দিন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচে কঠিন পরিস্থিতিতে কি করে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তা শিখতে শুর করেছে। তার এরইমধ্যে দিয়েছে তামিম-সাকিবরা।

সর্বশেষ ২০১৩ সালে পালেক্কেলেতে শ্রীলঙ্কার বিরচদ্ধে তিন উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১২ সালে মিরপুরে এশিয়া কাপে পাঁচ উইকেটে জয়টা তো এখনো সুখ স্মৃতি হয়ে আছে। আর তৃতীয় জয়টা ছিল ২০০৯ সালে মিরপুরেই ত্রিদেশীয় সিরিজে এবং লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম জয়টা এসেছিল ২০০৬ সালে বগুড়ায় চার উইকেটে।

২০১২ সালে এশিয়া কাপে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওডিআই খেলার প্রায় দুই বছর পর নিজ মাটিতে সিরিজ খেলবে মুশফিকরা। নিজ মাটিতে শেষ ম্যাচে জয় পাওয়ার স্মৃতি অবশ্যই এগিয়ে রাখবে বাংলাদেশকে। সেই দলে ছিলেন মুশফিক, সাকিব, তামিম, মাশরাফি, নাসির, মাহমুদুল্লাহরা।

বাংলাদেশ স্কোয়ার্ড : মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), মাশরাফি বিন মুর্তাজা, আল-আমিন, এনামুল হক বিজয়, আরাফাত সানী, নাঈম ইসলাম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মমিনুল হক, নাসির হোসাইন, রচবেল হোসাইন, সাব্বির রহমান, শামসুর রহমান শুভ, সাকিব আল হাসান, সোহাগ গাজী ও শফিউল ইসলাম।

শ্রীলঙ্কা স্কোয়ার্ড : এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (অধিনায়ক), দিনেশ চন্দিমাল, তিলেকারত্নে দিলশান, নুয়ান কুলাসেকারা, সুরঙ্গ লকমল, ল্যাসিথ মালিঙ্গা, অজান্তা মেন্ডিজ, এ্যাঞ্জেলো পেরেরা, কৌশল্য পেরেরা, থিসারা পেরেরা, প্রসন্ন সাচিত্রা, আসান প্রিয়াঞ্জন, কুমারা সাঙ্গাকারা, ভিথানগে, সেকুগে সেনানায়েক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top