সকল মেনু

তুরস্কের পার্লামেন্টে রক্তারক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক , ১৬ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : তুরস্কের পার্লামেন্টে একটি বিল পাস নিয়ে সরকার এবং বিরোধী দলের মধ্যে উত্তেজনার জের ধরে তুমুল ধস্তাধস্তি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার এই অনাকাঙ্খিত ঘটনায় বিরোধী দলীয় একজন এমপির নাক ভেঙে গেছে। আরেকজনের আঙুল ভেঙে গেছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই রক্তারক্তি কান্ডের মধ্যেই বিচারবিভাগের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করা একটি বিল পাস হয়েছে। বিবিসি

সূত্র জানায় গত কয়েকদিন ধরেই বিলটি নিয়ে তুর্কি পার্লামেন্টের ক্ষমতাসীন একে পার্টি এবং প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির মধ্যে তুমুল তর্কযুদ্ধ চলে আসছিল। গতকাল বিলটি আলোচনার টেবিলে ওঠা মাত্র বিরোধী দল তীব্র প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। ক্ষমতাসীন দল চায় বিচারপতি এবং প্রসিকিউটরদের সর্বোচ্চ বোর্ডকে বিচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনতে যাতে বিচারপতি ও প্রসিকিউটর নিয়োগের ব্যাপারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়।

বিলটি নিয়ে দুই দলের মধ্যে তর্কযুদ্ধ শুরু হয়। গত মাসে দেশটির বিচার বিভাগ তার মন্তব্যে বলে, সরকারের এই পদক্ষেপ অসাংবিধানিক। কারণ এমন বিল পাস হলে তা বিচারবিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করতে পারে।

বিচার বিভাগের উপর প্রভাব বিস্তারের এই বিলটির প্রস্তাব করেছিল ক্ষমতাসীন দল। প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান এতে সমর্থন দেন। পার্লামেন্টে দলটির আধিপত্য থাকায় বিলটি পাসে তেমন বেগ পেতে হয়নি। তবে বিরোধী দলের এমপিদের নিকট থেকে প্রবল বাধার মুখোমুখি হতে হয় সরকারি দলকে। উত্তপ্ত বিতর্কের এক পর্যায়ে উভয় দলের অর্ধশতাধিক এমপি পার্লামেন্টের মেঝেতে নেমে আসেন এবং বাকযুদ্ধে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি এবং পরে মারামারিতে লিপ্ত হন তারা। দাঙ্গা-হাঙ্গামার শেষে দেখা যায় রিপাবলিকান পিপলস পার্টির এমপি আলী ইহসান ককতার্কের নাক ভেঙ্গে গলগল করে রক্ত ঝরছে। তার হাতেও রক্ত। আরেকজনের আঙুল ভেঙে গেছে। দু’জনকেই হাসপাতালে নেয়া হয়। আরো কয়েকজন আঘাত পেয়ে প্রাথমিক চিকিত্সা গ্রহণ করেন।

ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির নেতা ওজকান ইয়েনিচেরি এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই বিল পাসের ফলে বিচারবিভাগের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়বে। ফলে দুর্নীতির মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে কিংবা নিয়ন্ত্রিত হবে। একটি দেশের জন্য এটা মোটেও মঙ্গলজনক হতে পারে না।

তুর্কি সরকারের ধারণা, পুলিশ এবং বিচারবিভাগে বিপুল পরিমাণ সরকারবিরোধী সদস্য আছে। এ কারণে যখন তখন সরকারি দল কিংবা তার মিত্র দলের নেতাদের গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। ফলে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের উপর নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা মাথায় আনে। বিচারবিভাগ ছাড়াও সশস্ত্র বিভাগেও ব্যাপক সংস্কার আনতে চায় সরকার।

তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তুর্কি সরকারের এই পদক্ষেপে খুশি নয়। ইইউ এর পক্ষ থেকে তুর্কির বিচার ব্যবস্থাকে ইইউ মানে উন্নীত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর মধ্যে এ ধরনের বিল পাসের ঘটনায় ইইউর সাথে এরদোগানের সরকারের সম্পর্কের দূরত্ব বাড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়ার আশা করছে। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনো তেমন অগ্রগতি হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top