সকল মেনু

চট্টগ্রামে মোবাইলে আটকা পড়েছে কয়েক কোটি টাকা

চট্টগ্রাম, ১৩ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলায় প্রায় লক্ষাধিক বিকাশ গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা মোবাইল ফোনে আটকা পড়েছে।

মোবাইল ফোনে লাখ কিংবা হাজার হাজার টাকা জমা থাকা সত্ত্বেও ক্যাশ করতে না পেরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বিকাশের এজেন্ট এবং সাধারণ রেজিস্টার্ড গ্রাহকরা।

শুধুমাত্র নেটওয়ার্ক সমস্যার কথা বলে বিকাশের কাস্টমার কেয়ার থেকে গ্রাহকদের বিদায় করলেও গ্রাহক সেবার নুন্যতম ও সন্তোষজনক কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় সাধারণ গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে এটা বিকাশ কর্তৃপক্ষের এক ধরনের উদ্যোত্ত প্রকাশ।

দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশের যেকোন প্রান্তে টাকা লেনদেনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আসা ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ যেন এখন গলার ফাঁস হয়েছে গ্রাহকদের।

গ্রাহকরা বলছে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিকাশ কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য গ্রাহকদের আকৃষ্ট করলেও এখন চরম ভোগান্তির সময় আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য প্রকাশ বা দুঃখ প্রকাশ না করে বিকাশ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করছে।

চট্টগ্রামের বিকাশ এজেন্ট এবং গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে গত তিন দিন ধরে চট্টগ্রামে বিকাশের নেটওয়ার্ক কাজ করছে না। *২৪৭# ডায়াল করে গ্রাহকরা বিকাশ একাউন্টে ঢুকতে পারছেন না। ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথে গিয়েও মোবাইল ফোন থেকে টাকা ক্যাশ করতে পারছেন না গ্রাহকরা।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী তরুণ শাহরিয়ার হোসেন জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিকাশের মাধ্যমে জানুয়ারি মাসের বেতর পরিশোধ করেছে তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ। গত ১১ তারিখ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত বার চেষ্টা করেও বেতনের টাকা ক্যাশ করতে পারেন তিনি। এই অবস্থায় সংসারের খরচ কিংবা নিজের পকেট মানি যোগার করাও দুসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে তার।

শাহরিয়ার রাইজিংবিডিকে জানান, মোবাইল ফোন থেকে বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে টাকা ক্যাশ করতে না পেরে ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথে গিয়েও টাকা তোলা যায়নি। ব্র্যাক ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার থেকে জানানো হয় বিকাশের নেটওয়ার্ক সমস্যা ঠিক না হলে এটিএম থেকেও টাকা তোলা যাবে না। পরে চট্টগ্রামের মুরাদপুরস্থ বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে গেলেও তারা কোন সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে নেটওয়ার্ক সমস্যার কথা বলে বিদায় করে দেন।

নগরীর জামালখান এলাকার গৃহবধু তাসলিমা শারমিন জানান, তার স্বামী ঢাকাতে অবস্থান করায় বিকাশের মাধ্যমে সংসার খরচ আর শিশু সন্তানের চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছেন গত ১০ ফেব্রুয়ারি। এখন সন্তানের চিকিৎসা খরচের জন্য জরুরি প্রয়োজনে সেই টাকা ক্যাশ করতে পারছি না। আমাদের সব টাকা পয়সা এখন মোবাইল ফোনে আটকে আছে।

নগরীর বহদ্দার হাট এলাকার বিকাশ এজেন্ট আনোয়ার হোসেন, চান্দগাঁও এলাকার এজেন্ট পারভেজ আলমসহ আরো একাধিক বিকাশ এজেন্ট বলেন, ‘আমাদের লাখ লাখ টাকা মোবাইল ফোনে আটকা পড়ে আছে। নিত্য ব্যবসার লাখ লাখ টাকা এভাবে মোবাইল ফোনে আটকে থাকলে আমরা চরম লোকসানের শিকার হবো।’

বিকাশ এজেন্টরা জানান, এই সমস্যার জন্য বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে কোন সার্ভিস পাচ্ছি না। তাদের কাছে কোন ভালো ব্যবহারও পাচ্ছি না। এই ব্যাপারে সরকারি হস্তক্ষেপ জরুরি বলে এজেন্টরা মনে করেন।

এ ব্যাপারে জানাতে চাইলে বিকাশের বাণিজ্যিক ও বাজার সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, ‘সার্ভার সমস্যার কারণে গত ২দিন কোন এজেন্ট লেনদেন করতে পারছেন না। বিকাশের সার্ভারে কাজ চলছে। তবে কবে নাগাদ সমস্যার সমাধান হবে এবং মোবাইল ফোনে আটকে থাকা গ্রাহকের টাকা কবে ক্যাশ করতে পারবেন এই ব্যাপারে তিনি কোন সন্তোষজনক জবাব দেননি।’

বিকাশের চট্টগ্রাম বিভাগীয় টেরিটরি কর্মকর্তা বদরুদ্দোজা বলেন, ‘সমস্যার ব্যাপারে আমরা সার্বক্ষণিক ঢাকায় যোগাযোগ করছি।’

গ্রাহকদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রাহকদের জ্বালাতনে আমাদেরও পালিয়ে যাওয়ার অবস্থা দাড়িয়েছে। আমরা গ্রাহকদের কোন জবাব দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারছি না।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top