সকল মেনু

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ঝুঁকি বেড়েছে

ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ঝুঁকি আরো বেড়েছে৷ ঝুঁকি বিবেচনায় ২০১৩ সালের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান আরো দুই ধাপ নেমেছে ৷

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স বুধবার ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স-২০১৪ প্রকাশ করেছে৷ ইনডেক্স অনুযায়ী সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬৷ অথচ ২০১৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৪ আর ২০১২ সালে ১২৯৷ অর্থাৎ আগের তুলনায় বাংলাদেশে সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকি বেড়েছে৷

এ বছর বিশ্বের ১৮০টি দেশের তালিকা করা হয়৷ আগের দুইবছর ১৭৯টি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল৷ এই তালিকা অনুযায়ী, ১ নম্বরটি হচ্ছে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ৷ আর তারপর ক্রমিক যত বাড়ে ঝুঁকির পরিমাণও তত বাড়ে৷ সেই হিসেবে বিশ্বে সাংবাদিকদের জন্য এখন সবচেয়ে কম ঝুঁকির দেশ হলো ফিনল্যান্ড৷ অন্যদিকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ ইরিত্রিয়া৷

সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকি বিবেচনায় গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান দুই ধাপ নিচে নেমে গেছে৷ ২০১২ সালের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ঝুঁকির মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে বলে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স-এর ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স প্রতীয়মান হয়৷ তবে শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের অবস্থা বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ৷ তাদের অবস্থান যথাক্রমে ১৬৫ এবং ১৫৮৷ ভারতের অবস্থান ১৪০৷ চীন ও ইরানসহ এশিয়া এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এখন সাংবাদিকদের জন্য৷ অবাক করার বিষয় হলেও, তাদের তুলনায় আফগানিস্তানের অবস্থা এ মুহূর্তে ভালো৷

ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স-এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ব্যাপারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর টার্গেট করে হামলা করা হয়েছে গত বছরও৷ এই হামলার জন্য পুলিশ এবং দুর্বৃত্ত উভয়ই দায়ী৷ সহিংস আন্দোলনকারীরাও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চলিয়েছে৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করায় ব্লগারদের ওপর হামলা, এমনকি তাদের হত্যাও করা হয়েছে৷ এছাড়া, ২০১২ সালে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকারীদের এখনও বিচারের আওতায় আনা হয়নি৷

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া শাহবাগ আন্দোলনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি৷ বর্ষপূর্তিতে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন আন্দোলনের কর্মীরা৷

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং বৈশাখী টেলিভিশনের চিফ এডিটর মনজুরুল আহসান বুলবুল ডয়চে ভেলেকে বলেন, এটি ঠিক যে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা ঝুঁকির মধ্যেই রয়েছে৷ সাগর-রুনিসহ আরো অনেক সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি৷ সাংবাদিকরা হুমকি ও হামলার শিকার হচ্ছেন৷ ব্লগাররা হত্যার শিকার হয়েছেন৷ সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তার বিষয়টি আজও ঝুঁকির মুখেই রয়েছে৷ তবে তার সঙ্গে এ কথাও সত্য যে, সাংবাদিকদের সুরক্ষা এবং সংবাদমাধ্যমের জন্য ভালো কিছু আইনও হয়েছে বাংলাদেশে৷

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক আবেদ খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে পেশাদারিত্বের অভাব লক্ষ্যণীয়, যা সাংবাদিকদের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷ সংবাদমাধ্যম এমন সব ব্যক্তিদের হাতে চলে যাচ্ছে, যারা সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করছেন রাজনীতি, ব্যবসা অথবা ব্যক্তি স্বার্থে৷ এর ফলে ঝুঁকির মুখে পড়ছেন সাংবাদিকরা৷ তিনি বলেন, সাংবাদিকতার মানেরও অবনতি ঘটেছে৷ সংকীর্ণ চিন্তা সাংবাদিকতার পেশাদারিত্ব নষ্ট করছে৷ তাই ঝুঁকি কমাতে সাংবাদিকদের এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন আবেদ খান৷

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top