সকল মেনু

কক্সবাজারে অর্ধশত দালালের বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজার, ১৩ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের নিকটবর্তী সাগর থেকে মঙ্গলবার উদ্ধার হওয়া ২১১ জন মালয়েশিয়াগামিদের পাচারে জড়িত প্রায় অর্ধশত দালালের বিরুদ্ধে ২টি মামলা করেছে কোস্টগার্ড।

কোষ্টগার্ড বাদি হয়ে বুধবার রাতে টেকনাফ থানায় পৃথক এই ২টি মামলা দায়ের করেছে। 

টেকনাফ থানার ওসি মোহাম্মদ ফরহাদ জানান, সেন্টমার্টিন কোষ্টগার্ডের কর্মকর্তারা বাদি হয়ে পৃথক আইনে মামলা ২টি দায়ের করেছেন। এর মধ্যে একটি মামলা হচ্ছে বৈদেশিক নাগরিকের অবৈধভাবে অনুপ্রেবশ এবং অপরটি মানবপাচার আইনে। বৈদেশিক নাগরিকের অবৈধভাবে অনুপ্রেবশ আইন দায়ের করা মামলায় ট্রলারে থাকা মিয়ানমারের ৮৮ নাগরিককে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

তিনি জানান, মানবপাচার আইনে দায়ের করা মামলায় দালাল হিসেবে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২টি ট্রলারে ছিল ১৬ জন। অপর ১২ জন পলাতক রয়েছে। এ ১৬ জনকে সংশ্লিষ্ট ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

কোষ্টগার্ড, মামলার এজাহার এবং উদ্ধার হওয়া যাত্রী সূত্রে জানা যায়, অর্ধশত দালালের নিয়ন্ত্রণে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বিভিন্ন মোহনা থেকে ছোট ছোট ট্রলারযোগে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নিকটবর্তী সাগরে অপেক্ষারত বড় ট্রলারে এসব যাত্রীদের পৌঁছানো হয়। মঙ্গলবার ভোরে কোষ্টগার্ড সদস্যরা  ২১১ যাত্রীকে উদ্ধার করে এবং ২টি ট্রলারও জব্দ করে। 

ওই সময় ট্রলারে থাকা ১১ জন মাঝি ছাড়াও ৫ জন দালাল ট্রলারে উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে মিয়ানমারের নাগরিক ছিল ২ জন। অপর ৩ জন বাংলাদেশের নাগরিক। এই ৩ জন হল- কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকার মকবুল আহমদের পুত্র মোহাম্মদ আব্বাস (৪০), একই এলাকার কাশিমের পুত্র সব্বির আহমদ (২৬) ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দিল মোহাম্মদের পুত্র বদর উদ্দিন। ইতিমধ্যে মানবপাচার মামলায় এ ১৬ জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

কোষ্টগার্ডের দায়ের করা মামলার এজাহারে পলাতক আসামী করা হয়েছে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের জহির উদ্দিনের পুত্র রব্বানী, কবির আহমদের পুত্র শাকের, নুরুল ইসলামের পুত্র নুর হোসেন, খলিলের পুত্র মো. হোসেন কালু, কবির আহমদের পুত্র মনু মিয়া, মাষ্টার ছৈয়দ আহমদের পুত্র মোয়াজ্জেম হোসেন, মোজাফ্ফর আহমদের পুত্র গুরা মিয়া, জনৈক ফরিদ আহমদ, আলী মিয়া, রশিদ, আক্কাস এবং কক্সবাজারের কালির ছড়া এলাকার কালুর পুত্র মোহাম্মদ হোসেনকে। 

এদিকে মামলায় সংশ্লিষ্ট দালাল ও মিয়ানমারের নাগরিককে আদালতে প্রেরণ করা হলেও অন্যন্যাদের অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। টেকনাফ থানার পুলিশ বুধবার ২৭ জনকে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করেছে। অন্যান্য ৮০ জনকে মানবপাচার নিয়ে কাজ পরিচালনাকারি বেসরকারি সংস্থা ইপসার কাছে হস্তান্তর করেছে।

এদের ধারাবাহিকভাবে অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইপসার কর্মকর্তা ফরিদুল আলম।

প্রসঙ্গত, পাচারকালে মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের নিকটবর্তী সাগর থেকে ২১১ যাত্রীকে উদ্ধার করে কোষ্টগার্ড সদস্যরা। এসময় ২টি ট্রলারও জব্দ করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া যাত্রীর মধ্যে ২০ জন নারী এবং ১৭ জন শিশু রয়েছে। যারা সকলেই মিয়ানমারের নাগরিক। এদের সাথে রয়েছে ১১ জন বিদেশ ক্রু (মাঝি)। যার মধ্যে থাইল্যান্ডের ৬ জন এবং মিয়ানমারের ৫ জন। মিয়ানমারের নাগরিক (পুরুষ) রয়েছে ৫৮ জন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top