সকল মেনু

তারেককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধের অনুরোধ: উইকিলিকসে ফাঁস

ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি  (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক গোপন বার্তা পাঠানো হয়। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে না দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয় সে বার্তায়। এসময় রাষ্ট্রদূত ছিলেন জেমস এফ মরিয়ার্টি।

সম্প্রতি উইকিলিকসের ফাঁস করা এক তারবার্তায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো প্রজ্ঞাপনটির চতুর্থ ধারায় তারেক জিয়া সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়, তিনি গুরুতর রাজনৈতিক দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক লক্ষ্যমাত্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবায়দা, মেয়ে জাইমা ও মা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই বলে উল্লেখ করা হয় প্রজ্ঞাপনে।

সে প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশের তৎকালীন সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছিল যেখানে দুর্নীতির বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ চতুর্থবারের মতো দুর্নীতিতে বিশ্বে প্রথম স্থান দখল করে- এ তথ্য উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্নীতি বিরোধী ত্বরিত পদক্ষেপ এবং সতর্ক অবস্থানের কথা জানানো হয়। আরও উল্লেখ করা হয় দুর্নীতি দমনে পূর্বেকার ক্ষমতাসীন দলটির উদাসীনতার কথা। সেই সঙ্গে তারেককে বহু দুর্নীতির মূল হোতা, দেশজুড়ে ভয়ানক ভীতিপ্রদ চরিত্র, চৌর্যতান্ত্রিক সরকার ও সহিংস রাজনীতির প্রতীক হিসেবে অভিহিত করা হয়।

২০০৮ এর সেপ্টেম্বর মাসে তারেক রহমান চিকিৎসার সুবাদে যুক্তরাজ্যের ভিসা পেয়েছেন, উল্লেখ করে তার কাছে একাধিক পাসপোর্ট থাকতে পারে বলে সতর্ক করে দেয়া হয় প্রজ্ঞাপনে।

তারেকের বিরুদ্ধে যেসব দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে তার সবক’টি সম্পর্কে সে প্রজ্ঞাপনে অবহিত করা হয়। উল্লেখ করা হয়, আল আমিন কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আমিন আহমেদের কাছে তারেক ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন কোম্পানিটির কার্যক্রম চলতে দেয়ার বিনিময়ে। এছাড়া রেজা কনস্ট্রাকশনের আফতাব উদ্দিন খান, মীর আখতার হোসেইন লিমিটেডের মীর জাকির হোসেন এবং হারুন ফেরদৌসির কথা উল্লেখ করা হয়, যাদের কাছ থেকে তারেকের কোটি টাকার উৎকোচ দাবির কথা প্রমাণিত হয়েছে।

আরও উল্লেখ করা হয়, জার্মানভিত্তিক কোম্পানি সিমেন্সের সঙ্গে তারেকের গোপন চুক্তি প্রমাণিত হওয়ার কথা, যেখানে তারেক বাংলাদেশে সিমেন্স কোম্পানি প্রত্যেকটি কাজের লভ্যাংশের ২ শতাংশ তারেককে দেয়ার চুক্তি করে। তারেকের ছোট ভাই আরায়াত রহমান কোকো যুক্ত ছিলেন এর সঙ্গে।

তারেকের দুর্নীতির ফিরিস্তির সঙ্গে যুক্ত হয় চীনা প্রতিষ্ঠান হারবিন কোম্পানির কথা। বাংলাদেশে একটি প্রকল্প উদ্বোধনের জন্যে এ কনস্ট্রাকশন কোম্পানির কাছ থেকে তারেক প্রায় ৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করেন বলে উল্লেখ করা হয় বার্তাটিতে।

এছাড়া মোনেম কনস্ট্রাকশন ও কবীর হত্যাকাণ্ডের মামলা থেকে অব্যাহতি পাইয়ে দিতে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছেলে সানভির সোবহানের কাছ থেকে যথাক্রমে সাড়ে ৩ কোটি ও ২১ কোটি টাকা আদায়ের কথা উল্লেখ করা হয় বার্তায়।

এ তথ্য উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেককে কেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না তার শক্তিশালী কারণ প্রতিষ্ঠিত করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top