সকল মেনু

সাগর-রুনি হত্যার দুই বছর: তদন্তে অগ্রগতি নেই

ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ24বিডি): সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল। দীর্ঘ এই সময়েও হত্যা মামলার কোনো কিনারা করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। ডিএনএ পরীক্ষায়ও এখন পর্যন্ত আশানুরূপ কোনো ফল দেখছে না র‌্যাব। তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যাচ্ছে দুই বছরে তদন্তে অগ্রগতি নেই। এতে পরিবার ও গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ’মাছরাঙ্গা’র বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন। হত্যার দুই বছর অতিবাহিত হলেও তদন্তে কোন ক্লু বের করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

তদন্ত কার্যক্রমে অগ্রগতি না হওয়ায় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের পর ডিবির হাত ঘুরে হত্যা মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব র‌্যাবকে দেয়া হয় প্রায় ১৯ মাস আগে। এ পর্যন্ত আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা। কবর থেকে দু’জনের মরদেহ তুলে ডিএনএ’র আলামত সংগ্রহ করে দেড় বছর আগে পরীক্ষার জন্য আমেরিকা পাঠায় র‌্যাব। আজও সেই ডিএনএ’র পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট ( সন্দেহভাজনদের সঙ্গে ম্যাচিংসহ) বাংলাদেশে আসেনি। এ ঘটনায় র‌্যাব এই পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে। যার মধ্যে নিহতদের রাজাবাজারের বাসার দারোয়ান এনামুলও রয়েছে। গ্রেফতার হওয়া অন্য সাতজন হলেন- তানভীর রহমান, বাড়ির অপর এক দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল, সন্দেহভাজন ডাকাত রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও সাঈদ। তবে র‌্যাবের এই গ্রেফতাকৃতদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য পায়নি র‌্যাব।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই এক এক সময় এক এক ধরণের কথা বলা হয়েছে তদন্তকারী সংস্থা এবং মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডেপর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করা হবে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছিলেন, সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে ৭ অপরাধীকে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছি। তবে নতুন সরকারের মন্ত্রীরা হত্যাকা- নিয়ে সাবধানী মন্তব্য করছেন।

মামলার বাদী মেহেরুন রুনির ভাই নওশের রোমান শীর্ষ নিউজকে বলেন, দুই বছরেও একটি ঘটনার ক্লু উদঘাটন করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আর কত সময় দিলে তারা পারবে? এখন পর্যন্ত এই মামলার প্রকৃত একজন আসামিকেও গ্রেফতার করা হয়নি। এটা নিহতের পরিবারের জন্য ভীষণ কষ্টের।

তিনি বলেন, তদন্তের নামে শুধু কালক্ষেপন করা ছাড়া আর কিছুই দেখছি না।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, সাগর-রুনির পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ বৃত্তান্ত আমেরিকা থেকে এসেছে। এখন চলছে সন্দেহভাজন খুনিদের সঙ্গে তাদের ডিএনএ নমুনা মিলিয়ে দেখার কাজ। তবে যে কয়জনের সাথে মিলানো হয়েছে তাতে নেতিবাচক তথ্য আসছে। আরো কিছু প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।

র‌্যাবের আইন ও গণামাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান বলেন, খুনিদের সনাক্তে সব ধরনের তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ বলেন, খুনিদের সনাক্ত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সংবাদকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করে যাবে। খুনিদের অবশ্যই দ্রুত সনাক্ত করতে হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা র‌্যাব ব্যর্থ হবে, এটা  মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি অবিলম্বে হত্যাকারিদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন হত্যাকারীদের সনাক্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top