ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি : সমুদ্রে জাহাজ চলাচলের জন্য তৈরি তিনটি বাতিঘরের (লাইটহাউজ) অবস্থা জরাজীর্ণ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম্য। এবার অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে নামছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাতিঘরগুলোকে অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য চার দিনের (১৯-২২ ফেব্রুয়ারি) একটি কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই চার দিন অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ১৯ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার বাতিঘর এলাকা পরিদর্শন এবং অবৈধ উচ্ছেদে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। ২০ ফেব্রুয়ারি সেন্ট মার্টিন বাতিঘর এলাকা পরিদর্শন এবং অবৈধ উচ্ছেদে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। ২১ ফেব্রুয়ারি কুমিরা, গুপ্তছড়া সন্দ্বীপ নৌপথ ও জেটি এলাকা পরিদর্শন। ২২ ফেব্রুয়ারি কুতুবদিয়া বাতিঘর এলাকা পরিদর্শন এবং অবৈধ উচ্ছেদে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।
সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বাতিঘরগুলো পুরোনো হওয়ার কারণে প্রতিনিয়তই নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বেহাত হচ্ছে জমাজমি। অনেকে জবরদখল করেও রেখেছে। এ বিষয়টি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হলে রোববার মন্ত্রণালেয়ে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে এ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
তিনি আরো বলেন, নৌমন্ত্রীর এ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে ‘গ্লোবাল মেরিটাইম ডিস্ট্রেস অ্যান্ড সিগন্যাল সিস্টেমস (জিএমডিএসএস)’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। এর আওতায় দেশের উপকূলীয় এলাকায় নতুন করে আরো চারটি বাতিঘর স্থাপন করা হবে। এ প্রজেক্টের কারিগরি সহায়তা দেবে কোরিয়া। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩৬২ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাতে সমুদ্রে জাহাজ চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ১৬৬ বছর আগে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা নারিকেল জিঞ্জিরা, কক্সবাজার ও কুতুবদিয়া দ্বীপে তিনটি বাতিঘর তৈরি করা হয়েছিল। ১৮৪৬ সালে প্রথম তৈরি করা হয়েছিল কুতুবুদিয়া দ্বীপের বাতিঘর। এটির উচ্চতা ১২৮ ফুট। এই বাতিঘরে প্রতি ১০ সেকেন্ড পরপর বাতি জ্বলে ওঠে। যা রাতে অনেক দূর থেকেও দেখা যায়।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাতিঘরটি ১২৮ ফুট উঁচু। প্রতি ৩০ সেকেন্ড পরপর বাতি জ্বলে ওঠে। কক্সবাজারের বাতিঘরটি ১৭৭ ফুট উঁচু। প্রতি ১৫ সেকেন্ড পর পর এর বাতি জ্বলে ওঠে। বর্তমানে এগুলোর অবস্থাও জরাজীর্ণ। অথচ এর মাধ্যমে শুধু বিদেশি জাহাজই নয়, অভ্যন্তরীণ জাহাজও রাতে নির্বিঘ্নে সমুদ্রে চলাচল করে।
এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব বাতিঘর তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। হারাচ্ছে তার কর্মক্ষমতাও। অথচ এই খাতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকার আয় করছে ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।