ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি : তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের মামলায় মালিক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে আজ সকালে তার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশের অভিযোগপত্র দেওয়ার দেড় মাসের মাথায় তারা রোববার আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
ঢাকার হাকিম আদালতের অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবির বাবুল জানান, দেলোয়ার ও তার স্ত্রী মাহমুদা রোববার সকালে আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিনের আবেদনপত্র জমা দেন।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তাজুল ইসলামের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হয়। দুই আসামির পক্ষে আদালতে শুনানি করেন এ টি এম গোলাম গাউস।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনসে ওই অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১২ জন নিহত এবং দুই শতাধিক শ্রমিক আহত ও দগ্ধ হন।
পরদিন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক খায়রুল ইসলাম অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় নাশকতার পাশাপাশি অবহেলাজনিত মৃত্যুর (দণ্ডবিধির ৩০৪ ক) ধারা যুক্ত করা হয়। গত বছর ২ জানুয়ারি সিআইডি এ মামলার তদন্ত শুরু করে।
ঘটনার পর শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, আগুন লাগার পরও কারখানার ছয়টি ফ্লোরের কয়েকটিতে দরজা আটকে রাখা হয়েছিল, শ্রমিকদের নিচে নামতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া ওই কারখানা নির্মাণের ক্ষেত্রে ইমারত বিধি অনুসরণ না করা এবং অবহেলারও প্রমাণ পাওয়া যায়।
এরপর গত ২২ ডিসেম্বর দেলোয়ার ও মাহমুদাসহ ১৩ জনকে আসামি করে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ ও ৩০৪ (ক) ধারা অনুযায়ী ‘অপরাধজনক নরহত্যা’ ও ‘অবহেলার কারণে মৃত্যুর’ অভিযোগ আনা হয়, যার প্রথমটিতে তদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দ্বিতীয় ধারায় সর্বোচ্চ পাঁচ বছর জেল হতে পারে।
অভিযোগপত্রের ১৩ আসামির মধ্যে প্রকৌশলী এম মাহাবুব মোর্শেদ, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, কোয়ালিটি ম্যানেজার শহীদুজ্জামান দুলাল ও প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জু পলাতক।
তাজরীনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম লাভলু, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল আমীন, নিরাপত্তারক্ষী রানা ওরফে আনারুল, স্টোর ইনচার্জ (সুতা) আল আমীন ও লোডার শামীম মিয়া জামিনে রয়েছেন।
আর কারখানার সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিসুর রহমান রয়েছেন কারাগারে, তার পক্ষেও জামিনের আবেদন হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১০৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এ মামলায়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।