সকল মেনু

থ্রিজির প্রভাবে ওয়াইম্যাক্স ব্যবসায় ধ্বস!

বাংলাদেশে চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবার দাবীদার ওয়াইম্যাক্স অপারেটরদের ব্যবসায় ধ্বস নামছে। থ্রিজি সেবার ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধিই এর কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ব্যাপারে ডি-লিংকের বাংলাদেশি কান্ট্রি ম্যানেজার বিশ্বজিৎ সূত্রধর বলেন, ওয়াইম্যাক্স সেবা বাংলাদেশের বাইরে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে খুব বেশি মূল্যায়ন করা হয় না। কারণ ইন্টারনেট সেবা এখন আগের থেকে অনেক সহজ হয়ে গেছে। ইন্টারনেট এখন হাতে থাকে। তাছাড়া ওয়াইম্যাক্সে স্পিড লিমিট থাকে। তাহলে ওয়াইম্যাক্স কেন ব্যবহার করবে? স্বল্পমূল্য এবং বহনযোগ্য রাউটার বা মডেম দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে গ্রাহক। তাই গ্রাহক ওয়াইম্যাক্সকে বেশি গুরুত্ব দিতে চায় না।

দেশের ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে ৫টি ইতোমধ্যে থ্রিজি ইন্টারনেট সেবা চালু করায় মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর সঙ্গে বাড়ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন মোবাইল ফোনের (স্মার্ট) চাহিদা। ফলে ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালায়ন, কিউবি, ব্র্যাক বিডিমেইল, ওলো এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) সবার ব্যবসায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন আমদানিকারক সমিতির (বিএমপিআইএ) তথ্যমতে, গত বছর দেশে স্মার্টফোনের বিক্রি ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, যা আগের বছরের তুলনায়প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা মূল্যের হ্যান্ডসেট বিক্রি হয়েছে তুলনামূলক বেশি। বিএমপিআইএ সূত্র আরও জানায়, চলতি বছর শেষে দেশে স্মার্ট ও ফিচার (ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত) ফোন ব্যবহারের হার দাঁড়াবে যথাক্রমে ৯ শতাংশ এবং ৯১ শতাংশ। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ২ ও ৯৮ শতাংশ। মূলত থ্রিজি ও ই-কমার্সের কারণে স্মার্টফোন ব্যবহারের এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে বিএমপিআইএ মনে করছে। এছাড়া ভারত ভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইবার মিডিয়া রিসার্চের (সিএমআর) পৃথক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশে স্মার্টফোনের আমদানি বেড়েছে ১৯৭ শতাংশ।

এ বিষয়ে বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ফারুক খান বলেন, থ্রিজি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অবশ্যই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। তবে আমি মনে করি না এটি আমাদের জন্য থ্রেড। নতুন কৌশলের মাধ্যমে আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব। কিভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, এখনও থ্রিজি সব জায়গায় পোঁছায়নি। যেসব জায়গায় থ্রিজি পৌঁছায়নি, সেসব জায়গায় আমরা আমাদের কার্যক্রম জোরদার করব। ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়ে অজের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের (কিউবি) প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মায়েদুর রহমান বলেন, থ্রিজি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব একটি কৌশল রয়েছে, যা এখন প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

এ ব্যাপারে বিএমপিআইএর সাধারণ সম্পাদক ও সিমফোনির পরিচালক রেজওয়ানুল হক বলেন, মূলত থ্রিজি আসার পর থেকে গ্রাহকদের মধ্যে এক ধরনের উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া দেশে ই-কমার্সের বাজার দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। মোবাইল অপারেটরগুলো গ্রাহক টানতে থ্রিজিতে বিভিন্ন ধরনের সাশ্রয়ী প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পেতে গ্রাহকও ছুটছেন সেদিকে। এতে স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়লেও ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিউবি ও বাংলালায়নের মতো আইএসপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top