সকল মেনু

জজ আদালতও মওদুদ ও মাহবুবকে জামিন দেননি

 আদালত প্রতিবেদক:  পৃথক দুটি মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের জামিন নাকচ করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জহুরুল হক এই আদেশ দেন। মামলা দুটির মধ্যে অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৭ ডিসেম্বর মওদুদ ও তার ভাই মনজুরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় এই মামলাটি করা হয়।মামলায় অভিযোগ করা হয়, “১৯৬০ সালের ২৪ আগস্টে গুলশান আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এক বিঘা ১৩ কাঠা আয়তনের (হোল্ডিং নং ১৫৯) প্লটটি পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসানকে হস্তান্তর করে তৎকালীন ডিআইটি (বর্তমানে রাজউক)। পরে লিজ গ্রহীতার প্রত্যার্পণ সংক্রান্ত আবেদনের ভিত্তিতে তার স্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক মিসেস ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের নামে ওই প্লটটি ৬৫ সালে লিজ দলিল হিসেবে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়। সরকারি পরিত্যক্ত সম্পত্তি তালিকা প্রণয়ন সংক্রান্ত ‘মিনিস্ট্রি অব ক্যাবিনেট অ্যাফেয়ার্স’ জারির আগেই মিসেস ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ ও তার স্বামী মো. এহসানের যুদ্ধের পরপরই দেশ ত্যাগ করেন। এরপর প্লটটি পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত করে সরকার।স্বাধীনতার পর ওই নারী (ইনজে মারিয়া) বাংলাদেশে আসার কোনো দালিলিক প্রমাণ না থাকার পরও মওদুদ আহমদ তার ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে’ তা উল্লে খ করেন। মওদুদ আহমদ ওই সম্পত্তি আত্মসাতের অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেকে মিসেস ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ প্রদত্ত আম মোক্তার নামার (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) দাবিদার দেখানোর জন্য ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট একটি আম মোক্তারনামা তৈরি করে নিজের কাছে রাখেন এবং পরে সুবিধামতো সময়ে এটি ব্যবহার করেন। নানা কৌশলে বাড়িটি দখলে নিয়ে নিজেকে ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে উক্ত বাড়িতে এখন পর্যন্ত বসবাস করছেন। এরপর ১৯৭৮ সালে তৎকালীন সরকারে যোগদান করে প্রথমে সরকারের মন্ত্রী ও ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রীসভায় উপপ্রধানমন্ত্রী  থাকার সময় নিজের ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য গুলশান এভিনিউর ১৫৯ নং হোল্ডিংয়ের প্ল টটির মূল্য মাত্র ১০০ টাকা দেখিয়ে নিজ নামে বরাদ্দ নেন। ১৯৮০ সালে প্ল টটি রেজিস্ট্রি করা হয়। এরপর ১৯৮৪ সালে ইনজে মারিয়া কর্তৃক জনৈক মহসিন দরবারের নামে একটি আমমোক্তারনামা সম্পাদন দেখানো হয়। ১৯৮৫ সালে ইনজে মারিয়া মারা গেছেন জেনেও মহসিন দরবার নামের ব্যক্তিকে দিয়ে মৃত ব্যক্তির আমমোক্তার হিসেবে ৮৫ সালে বাড়িটি মওদুদের সহোদর ভাই মনজুর আহমদের নামে চুক্তি সম্পাদন দেখানো হয়। পরে মওদুদ তার ভাই মনজুর আহমদকে অবৈধভাবে উক্ত বাড়ির কথিত মালিক বানানোর কাজে একে অন্যকে সহায়তা করার মাধ্যমে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন মর্মে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ব্যারিস্টার মওদুদ হেফাজতের সহিংসতার মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারভাই মনজুর রয়েছেন লন্ডনে।এদিকে আইনজীবী খন্দকার মাহবুবকে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপরপুলিশের কাজে বাধা, ভাংচুরের অভিযোগে রমনা থানার মামলায়  গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে আদালত গত ৮ জানুয়ারি তাকে দুই দিনের  পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিলে উচ্চ আদালত ওই আদেশ প্রথমে স্থগিত এবং পরে ‘অবৈধ ও বাতিল’ ঘোষণা করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top