সকল মেনু

কৌশলী দুদক মন্ত্রী ও এমপিদের সম্পদ অনুসন্ধানে

 আছাদুজ্জামান,ঢাকা, ২১ জানুয়ারি:  দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই চলমান বির্তক যেন শেষ হচ্ছে না। বিভিন্ন মিডিয়ায় এমপি ও মন্ত্রীদের হলফনামায় দেওয়া সম্পদ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের পর বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নজরেও আসে। নির্বাচনের পূর্বে দুদক বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করলেও প্রথম থেকেই বিভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। বিষয়টি কমিশন পর্যায় থেকেও স্পষ্ট করা হচ্ছে না। ফলে প্রকৃতভাবে দুদকের অনুসন্ধান কোন পর্যায়ে রয়েছে তাও অস্পষ্ট। নির্বাচনের আগে ১৯ ডিসেম্বর দুদক কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন চুপ্পু জানিয়েছিলেন দেশে চলমান নির্বাচনী আবহাওয়ার মধ্যে প্রার্থীদের সম্পদের হলফনামা নিয়ে দুদক ঝাঁপিয়ে পড়লে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তাই এ মুহূর্তে কমিশনের কিছু করার ইচ্ছা নেই। এমনকি ২৫ ডিসেম্বর দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান হটনিউজ২৪বিডি.কমকে জানিয়েছিলেন, প্রার্থীদের সম্পদের বিষয়ে মিডিয়ায় যে সব প্রতিবেদন আসছে তা তারা নোট করে রাখছেন। নির্বাচনের পর শুধু তাদের দেওয়া সম্পদের হিসাবই নয়, এর বাইরে প্রার্থী এবং তার পরিবারের আরও কোন সম্পদ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে দুদক। নির্বাচনের পর গত ১২ জানুয়ারি কমিশনের পক্ষ থেকে জন-সংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, দুদক ৫ থেকে ৬ জন এমপি-মন্ত্রীর সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুদক চেয়ারম্যানও তা স্বীকার করেন। একটি বিশ্বস্তসূত্রে ৫ জন মন্ত্রী-এমপির নামও পাওয়া যায়। কিন্তু এতদিন পর গত সোমবার দুদকের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী জানালেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, দুদক এখন পর্যন্ত অর্ধ-শতাধিক মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ বিবরণীর বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করছে। এখন পর্যন্ত কারো বিষয়ে কোনো ধরনের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়নি। অথচ একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, দুদক ইতিমধ্যে সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. আবদুল মান্নান খান, সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান এবং সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এনামুল হকসহ ৬ জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে।

তবে চলমান অনুসন্ধান নিয়ে দুদকের কেন এই অস্পষ্ট বক্তব্য, এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানালেন, দুদক নির্বাচনে অংশ নেওয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের অর্জিত অস্বাভাবিক সম্পদ খতিয়ে দেখার কাজ নির্বাচনের পূর্বেই শুরু করেছে। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপিদের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে অনুসন্ধানও চলছে। তবে দুদক নিজেই চাইছে না বিষয়টি মিডিয়ায় আসুক। কেননা দুদকের এ অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করতে ইতিমধ্যে সরকারের প্রভাবশালী একটি মহল দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের পূর্ব থেকে দুদক গোপনে বিষয়টি নজরদারি করে আসছিল। কিন্তু সবই যদি মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় তাহলে কাজ শুরু করলেও সাফল্যজনকভাবে তা শেষ করা যাবে না। তাছাড়া সংশোধিত আইন পাসের পর প্রতিষ্ঠানটি এমনিতেই চাপের মুখে আছে। তাই দুদক অতি সর্তক এবং সুকৌশলে এ কাজটি শেষ করতে চাইছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top