সকল মেনু

কক্সবাজারে শতাধিক রেস্তোঁরা বন্ধ; পর্যটন শিল্পে বিপর্যয়

 কক্সবাজার প্রতিনিধি , ১৪ জানুয়ারি :  রাজনৈতিক সংহিংসতা, টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। গত ৯ মাস ধরে লোকসান গুণছেন কক্সবাজারের হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে লাভের মুখ দেখতে না পারায় হতাশ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। জানা গেছে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে কক্সবাজারে গড়ে উঠেছে ৪ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস ও দেড় শতাধিক রেস্টুরেন্ট। কিন্তু দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কক্সবাজার এখন পর্যটকশূন্য। ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে শতাধিক রেস্টুরেন্ট। এছাড়া খরচ পোষাতে না পেরে কর্মচারী ছাঁটাই ও হোটেল, মোটেল গেস্ট হাউসগুলো বন্ধ হতে বসছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসায় লোকসানের মাত্রা বহুগুণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদরে। সি-গার্ল হোটেলের ম্যানেজার হারুন-অর-রশিদ হটনিউজ২৪বিডি.কমকে জানান, পর্যটন মৌসুমে কোনো ব্যবসাই হচ্ছে না। শিগগিরই দেশের এই রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে হোটেলের এসি ও আলোকসজ্জা বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও বাধ্য হয়ে হোটেলের অর্ধশতাধিক কর্মচারী ছাঁটাই করতে হয়েছে।

ভিস্তা বে রিসোর্টের ব্যবস্থাপক আবু তাহের জানান, এক মাস আগে তিনি রেস্তোঁরা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করে হোটেলটিও সাময়িক বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

হোটেল ওশান প্যারাডাইসের চেয়ারম্যান এমএন করিম জানান, ব্যাংক ঋণ নিয়ে হোটেল চালু করে এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে। মাস শেষে ঋণের কিস্তি ও কর্মচারীর বেতন দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছি না।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. শাখাওয়াত  হটনিউজ২৪বিডি.কমকে জানান, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কক্সবাজারে পর্যটক না আসায় অর্ধশতাধিক হোটেল-গেস্ট হাউস ও কটেজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এছাড়াও চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারী। ফলে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নিম্ন আয়ের ব্যবসায়ীরা অনাহারে-অর্ধহারে দিনাতিপাত করছেন।

রেস্তোঁরা মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বর্তমানে কক্সবাজারের কলাতলী জোনের শতাধিক রেস্তোঁরা বন্ধ হয়েছে। এছাড়াও যে কয়টি খোলা আছে তাও বন্ধ হতে বসেছে।

তিনি আরো বলেন, পর্যটন শিল্পকে বাঁচাতে হলে সরকার ও বিরোধী দলকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে পর্যটন শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।

কক্সবাজার চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের সভাপতি মোহাম্মদ আলী হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, মৌসুমের শুরু থেকে লাগাতার হরতাল-অবরোধ ও সহিংসতার কারণে পর্যটকরা আসতে সাহস পাচ্ছেন না। এতে হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোতে হাহাকার চলছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এখন লোকসান গুনছেন। প্রতিদিন শতকোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। সে হিসাবে গত এক বছরে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top