সকল মেনু

তথ্যপ্রযুক্তি বকেয়া ১২০ কোটি টাকা ছয় আইজিডব্লিউর কার্যক্রম বন্ধের আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর: আজ মঙ্গলবারের মধ্যে বকেয়া না পেলে ছয় ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানের (আইজিডব্লিউ) কার্যক্রম বন্ধ করবে বিটিআরসি।

এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারের পাওনা প্রায় ১২০ কোটি টাকা। বকেয়া পরিশোধে একাধিকবার নোটিশ পাওয়ার পরও ছয় আইজিডব্লিউ তাদের বকেয়া পরিশোধ করেনি। এর আগে একই কারণে আরো ছয়টি আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া ছয় প্রতিষ্ঠান হলো মসফাইভ টেল, র‍্যাংকস টেলিকম, এস এম কমিউনিকেশন, ফার্স্ট কমিউনিকেশন, সিগমা ইঞ্জিনিয়ার্স ও অন্য একটি অপারেটর। এ ছয় প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারের পাওনার পরিমাণ ১২০ কোটি টাকা।

এর আগে বকেয়া পরিশোধ না করায় ছয় আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বিটিআরসি। এগুলো হলো— ভিশনটেল, বেসটেক টেলিকম, রাতুল টেলিকম, টেলেক্স, কেএওয়াই টেলিকমিউনিকেশন্স এবং অ্যাপল গ্লোবালটেল কম লিমিটেড। ভিশনটেলের কাছে ১৪৬ কোটি ৫০ লাখ, বেসটেকের ১২৭ কোটি ৫০ লাখ, রাতুলের ৯৬ কোটি ৫০ লাখ, টেলেক্সের ৯২ কোটি ৫০ লাখ, কেএওয়াই টেলিকমিউনিকেশন্সের ৯১ কোটি ৫০ লাখ এবং অ্যাপলের কাছে ৫৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে সরকারের। এদিকে এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হলেও বকেয়া আদায়ে কোনো অগ্রগতি নেই।

এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সরকারের বিপুল অর্থ বকেয়া রয়েছে। এ অর্থ আদায়ে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে তাদের। নির্ধারিত সময়ে পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাদের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার পাওনা পরিশোধের শেষ দিন।

বর্তমানে দেশে আইজিডব্লিউ লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯টি। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নিলামের মাধ্যমে লাইসেন্স পায় চার প্রতিষ্ঠান। আর গত বছরের এপ্রিলে নতুন ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে এ লাইসেন্স দেয় কমিশন।

জানা গেছে, নিয়মিত অর্থ পরিশোধ না করায় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিপুল অঙ্কের অর্থ বকেয়া পড়ে। এদিকে গত অক্টোবরে নীতিমালা সংশোধন করে বিটিআরসি। সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, আইজিডব্লিউগুলোকে ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম সাড়ে সাত কোটি টাকা করে রাখতে হবে। এক বছরের জন্য এ ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে তাদের। আগের নীতিমালা অনুযায়ী আইজিডব্লিউগুলোকে ১৫ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। তবে কার্যক্রম বাস্তবায়ন সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে ব্যাংক গ্যারান্টির পুরো অর্থই তুলে নিতে পারত প্রতিষ্ঠানগুলো।

সম্প্রতি বার্ষিক লাইসেন্স ফি ও রাজস্ব ভাগাভাগির অংশসহ অন্যান্য পাওনা নিয়মিত পরিশোধ না করায় আইজিডব্লিউগুলোর বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক গ্যারান্টি রাখার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয় কমিশন।

এদিকে আইজিডব্লিউ লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বার্ষিক লাইসেন্সিং ফিও কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। নীতিমালা সংশোধন করে প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ফি কমানো হয়েছে। আগে যেখানে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে বার্ষিক লাইসেন্স ফি হিসেবে সাড়ে সাত কোটি টাকা করে দিতে হতো, তা সংশোধন করে তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রয়োজনের বেশি লাইসেন্স দেওয়ায় এ খাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে ব্যবসায় সক্ষমতা না থাকায় নতুন লাইসেন্স পাওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারের বকেয়ার পরিমাণও বাড়ছে। আর এ কারণেই এত বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া পড়েছে বিটিআরসির।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top