সকল মেনু

উগ্র মৌলবাদীরা পেশাদার খুনী দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে

 নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর: রাজধানীর গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন রোডে আয়না নামের বাড়িতে শনিবার জবাই করে খুন করা হয়েছে ৬ জনকে।

তারা হলেন, লুৎফর রহমান ফারুক (৬০), তার ছেলে মনির হোসেন (৩০), শাহিন (২৫), মজিবুল (২৫), রাসেল ভুঁইয়া (২০) এবং বাড়ির কেয়ারটেকার মঞ্জুর আলম (২৭)।

কে বা কারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তা জানা যায়নি। তবে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছে খুন হওয়া ফারুকের বেয়াই-বেয়াইনসহ ৯ জনকে।

যদিও কথিত পীর ফারুকের ভণ্ডামী থামাতেই উগ্র মৌলবাদী কেউ বা কোন সংগঠন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন র‍্যাবের এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান।

এ বিষয়ে র‍্যাবের এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, “ফারুকসহ ৬টি লাশ দেখেছি। নিহতদের প্রত্যেককেই একইভাবে জবাই করা হয়েছে। এছাড়া শরীরের অন্যকোন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন নেই।”

জিয়াউল আহসান বলেন, “ঘটনার সিমটম দেখে মনে হচ্ছে এই হত্যাকাণ্ড উগ্র মৌলবাদী সংগঠনের কেউ করেছে। হিজবুত তাহরী, হিজবুত তাওহীদসহ বিভিন্ন যেসব নিষিদ্ধ ঘোষিত মৌলবাদী সংগঠন রয়েছে তারা পূর্বে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন সেগুলোর সাথে পুরোপুরি এ ঘটনা মিলে যায়।”

তিনি বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি বাড়ির মূল্যবান কিছু জিনিসপত্র খোয়া গেছে। যে ঘরে দুইজনকে হত্যা করা হয়েছে সেখানে দুটি লাশই মাটিতে পরা ছিল। আর অন্য যে ঘরে চারজনকে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে তিনজনের লাশ পাওয়া গেছে বিছানায় আর লুৎফরের লাশটি পাওয়া গেছে মেঝেতে।”

এদিকে ডিবি পুলিশ সূত্রও দাবি করেছে, পীর ফারুকের ভণ্ডামী থামাতেই তার মতাদর্শের বিরোধী কোন পক্ষ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। খুনের আলামত ঘেটে নিশ্চিত হওয়া গেছে খুনীরা ছিল পেশাদার। মূলত ১ জন খুনীই ৬ জনকে জবাই করেছে। আর বাকি ৭ জন তাকে সাহায্য করেছে। পেশাদার না হলে মানুষ জবাই করার সময় এভাবে নির্বিকার ভঙ্গিতে সাহায্য করা সম্ভব নয়। হত্যাকাণ্ডের সময় খুনীরা মদ্যপানরত অবস্থায় ছিল বলেও জানায় ডিবি পুলিশের সূত্রটি।

উল্লেখ্য, ইমাম মাহাদীর একজন সৈনিক হিসেবে নিজেক প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন শনিবার খুন হওয়া পীর ফারুক। তিনি মুসলমানদের সর্বোচ্চ সম্মানীত ব্যক্তিত্ব মহানবী (স.) কে নিয়ে কটুক্তি করে গণপিটুনির শিকার হন। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ধর্মান্ধ মানুষদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ নানা সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার।

এমনকী সুন্দরী মুরিদদের সাথে যৌন কেলেঙ্কারীর সাথে জড়িত ছিলেন ফারুক। অভিযোগ আছে, তার কাছে দোয়া, ওষুধ, সমস্যার সমাধান নিতে আসা সুন্দরী নারীদের যৌন হয়রানি করত কথিত এই পীর। এছাড়া, কয়েকদিন আগে রোজ কিয়ামতের দাজ্জালকে নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছিলেন যা ছিল বিতর্কিত।

আর এসব ভণ্ডামীর কারণেই পীর ফারুকের মতাদর্শ বিরোধী বিভিন্ন তরিকার ইসলামী সংগঠন, ব্যক্তিত্বরা তার উপর নাখোশ ছিলেন। সে সূত্র ধরেই এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হতে পারে বলে দাবি ডিবি পুলিশের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top