সকল মেনু

কোটি টাকার মধু সংগ্রহ চলনবিলে

 জেলা প্রতিবেদক,সিরাজগঞ্জ, ২০ ডিসেম্বর:  চলনবিলের মৌমাছি পালন খামারিরা  সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
চলনবিলে সরিষা চাষের ব্যাপকতা থাকায় ৫০০ খামারির মধু সংগ্রহের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি বিভাগ ও উত্তরাঞ্চলীয় মৌমাছি চাষ সমবায় সমিতি সূত্র জানায়। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে চলনবিলের ৯ উপজেলায় ৬৮ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুরে আবাদকৃত সরিষার জমির পরিমাণ ৪২ হাজার হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ১২ থেকে ১৪ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। শাহজাদপুর থেকে আত্রাই পর্যন্ত সরিষার খেত থেকে মধু সংগ্রহের জন্য মৌমাছি পালন খামারিরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছুটে এসেছেন।

দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, ময়মনসিংহ ও অন্যান্য অঞ্চলসহ স্থানীয় মৌমাছি চাষিরা চলনবিলে বর্তমানে মধু সংগ্রহ করছে। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে তারা মধু সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন।
খামারিরা জানান, প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি মৌ বাক্স থেকে সাড়ে তিন  থেকে পাঁচ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা সম্ভব।

মধু সংগ্রহকারী আবদুল মতিন বলেন,‘ চলনবিলে মাঠের পর মাঠ সরিষার আবাদ হয়, যা অন্য কোনো অঞ্চলে পাওয়া যায় না। তাই সরিষা মৌসুম শুরু হলেই আমরা চলনবিলে চলে আসি।’

সাতক্ষীরার মৌচাষি লিয়াকত আলী বলেন, ‘প্রায় ৮-১০ বছর ধরে চলনবিলে মধু সংগ্রহ করছি। এ সময় প্রচুর পরিমাণে সরিষার আবাদ হয়। তাই মধু সংগ্রহ করতে তেমন বেগ পেতে হয় না।’

উত্তরাঞ্চলীয় মৌমাছি চাষ সমবায় সমিতির সভাপতি চাঁন মিয়া ও সিরাজগঞ্জ ও পাবনার মৌমাছি চাষ সমিতির সভাপতি আহাদ আলী ও জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান, চলনবিলের ৯ উপজেলায় চলতি বছরে মোট ২০০ থেকে ২৫০ জন বাক্স মৌমাছি নিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। প্রতি খামারির ৫০ থেকে ১৫০টি পর্যন্ত মৌমাছির বাক্স রয়েছে।

প্রায় আড়াই শ খামারি বর্তমানে প্রায় ২২ হাজার বাক্স সরিষার জমির আশপাশে বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। প্রতি সপ্তাহে মধু সংগ্রহের পরিমাণ প্রায় এক লাখ কেজি ।

প্রতি কেজি মধু বর্তমানে বিক্রি করছেন ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে। স্থানীয় লোকজন ছাড়াও তাদের সংগ্রহকৃত মধু ক্রয় করছে দেশের বেশ কয়েকটি কোম্পানি।

এভাবে ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর্যন্ত তারা মধু সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।

তারা আরও জানান, চলনবিলে মধু সংগ্রহের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবছরই এখানে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলনবিলে সংগৃহীত মধু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। একই সঙ্গে মৌমাছি পালন করে মধু সংগ্রহের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন করতে পারবে বেকার যুবসমাজ।

তাড়াশ উপজেলায় বর্তমানে স্থানীয়ভাবে বেশ কিছু জায়গায় মৌমাছি পালনকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ‘পরিবর্তন’ নামে বেসরকারি একটি সংস্থা উপজেলার আদিবাসী নারী-পুরুষকে প্রশিক্ষণ দেয় ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top