সকল মেনু

বিস্ময়কর ধানের জিন আবিষ্কার

ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর: আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) বিজ্ঞানীরা ধানের একটি বিস্ময়কর জিন আবিষ্কার করেছেন।

ধান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্যের মধ্যে একটি। তবে কবে নাগাদ আবিষ্কৃত এই স্পাইকনির্ভর বীজ কৃষকের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হবে, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। গবেষণা ও পরীক্ষামূলক ব্যবহার করতে আরো সময় লাগবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা- ইরি।

আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) পরিচালিত স্পাইক উৎপাদন কর্মসূচির প্রধান সুতোমি ইশিমারু গত ২৯ নভেম্বর লস বানোসে স্পাইক জিন-সমৃদ্ধ ধানগাছ পরীক্ষা করেছেন। ধানের কথিত এই বিস্ময়কর জিন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য ধানের উৎপাদন নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে। ঘটাতে পারে উৎপাদন বিপ্লব।

গবেষণায় দেখা গেছে, ফলন বাড়ানোর জন্য দায়ী প্রধান জিনগুলোর একটি হলো স্পাইক, যার অনুসন্ধানে বিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর গবেষণা করেছেন। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা যায়, স্পাইক জিন ব্যবহার করে নতুন দীর্ঘ জাতের ধান শস্য ইকার উৎপাদন ১৩ থেকে ৩৬ শতাংশ  ফলন বাড়তে পারে। এটি হবে সাম্প্রতিক সবচেয়ে বেশি ফলন।

এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত ধানের একটি জাত। জিনটির এমন নামকরণের কারণ, এটি পাতার আকার, মূলের প্রক্রিয়া ও পরিবহনব্যবস্থার মতো ফলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপাদানগুলোকে প্রভাবিত করে।

ইরির স্পাইক উৎপাদন কর্মসূচির প্রধান সুতোমি ইশিমারু বলেন, এশিয়ার কয়েকটি দেশে এই জিন সহযোগে নতুন জাতের ধানটির পরীক্ষা চলছে। কর্মকর্তারা আরও জানান, রূপান্তরের মধ্যে রয়েছে প্রচলিত উৎপাদন পদ্ধতি, জিনগত পরিবর্তন নয়।

সুতোমি ইশিমারু আরও বলেন, ‘অন্যান্য জাতের ধানের ফলনের ওপর স্পাইক জিনের প্রভাব নিয়ে গবেষণা আরো হচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস, খাদ্যনিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে স্পাইক।

ফিলিপাইনের ম্যানিলাভিত্তিক সংস্থাটির জেনেটিক ট্রান্সফরমেশন ল্যাবের প্রধান আইনেজ স্লামেট-লিওডিন বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ইনডিকা ধানের ফলন অনেক বাড়ানো সম্ভব স্পাইক জিনের মাধ্যমে। বহুদিন ধরেই এমন কিছু খুঁজছিলাম আমরা। এখন আশার আলো দেখছি। বাস্তবেই এটি সম্ভব।’

ইরির মুখপাত্র গ্লাডিস ইবরন অবশ্য বলেছেন, কবে নাগাদ স্পাইকনির্ভর বীজ কৃষকের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। গবেষণা ও পরীক্ষামূলক ব্যবহার করতে আরো সময়ের প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, স্পাইক জিনটি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন জাপানি বিজ্ঞানী নবুয়া কোবায়াশি।

১৯৮৯ সালে ট্রপিক্যাল জাপোনিকা জাতের ধানের ওপর এর প্রভাব বিশ্লেষণ শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সাফল্য পাওয়া গেছে।

জাপোনিকা জাতটি সবচেয়ে বেশি চাষ হয় ইন্দোনেশিয়ায়। বিশ্বে উৎপাদন হওয়া ধানের ১০ শতাংশই এ জাতের। বিজ্ঞানীরা অন্য বেশ কয়েকটি জাতের ফলনের ওপর স্পাইক জিনের ইতিবাচক ভূমিকার ব্যাপারে আশাবাদী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top