সকল মেনু

সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব

 ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর:  জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের খবরে সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির। গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার পর থেকে সারা দেশে শুরু হয় জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব ও নাশকতা। বিভাগীয় শহর রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের জেলা-উপজেলায় বেপরোয়া ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে তারা। সারা দেশ থেকে পাঠানো আমাদের প্রতিবেদকদের পাঠানো খবর নিয়ে বিস্তারিত-

রাজশাহী : আমাদের রাজশাহী প্রতিবেদক এবং রাবি প্রতিবেদক জানিয়েছেন, মহানগরীর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিনোদপুরে আওয়ামী লীগের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে আগুন দেয় শিবিরকর্মীরা।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে দেয়া আগুনে ওই কার্যালয়সহ পার্শ্ববর্তী ৩০টি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং তা ভস্মীভূত হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে এবং হাতবোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।

পুলিশ শিবিরকর্মীদের সরিয়ে দিতে দুই শতাধিক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এক পর্যায়ে শিবিরকর্মীরা পুলিশি অ্যাকশনে টিকতে না পেরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এ দিকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা আধাঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

রাজশাহী দমকল বাহিনীর স্টেশন অফিসার আনোয়ার কাদের জানান, অগ্নিসংযোগের কারণে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার ব্যারিস্টার মাহবুবুর জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

খুলনা : আমাদের খুলনা প্রতিবেদক  জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মহানগরীর পিটিআই মোড়,  টুটপাড়া সেনট্রাল রোড মোড়, কবর খানা মোড়, সুন্দরবন কলেজের সামনে, মৌলভীপাড়া, মডার্ন ফার্নিচারের মোড়সহ আশপাশের এলাকায় জামায়াত-শিবিরকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষের সময় অসংখ্য বোমা বিস্ফোরণ, মটরসাইকলে অগ্নিসংযোগ, পাঁচটি ইজিবাইক ও  দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।

এছাড়া নগরীর দৌলতপুরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। নগরীর অন্যান্য স্থানেও ভাঙচুর ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহাবুদ্দীন আজাদ জানান, জামায়াত-শিবিরসহ ১৮দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসময় আত্মরক্ষাসহ জনগণের জানমাল ও সম্পদ রক্ষার জন্য পুলিশ ১০৪ রাউন্ড গুলি ও চার রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

বগুড়া : বগুড়া প্রতিবেদক  জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার পর থেকে বগুড়া শহর ও উপজেলা শহরগুলোতে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা।

ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ফটকি নামক ব্রিজ ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে তারা। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। ব্রিজের রেলিং ভেঙে ফেলে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা।

এদিকে শহরের একটি তেল পাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

অন্যদিকে শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম সুলতান আহম্মেদের অফিস এবং দোকান ভাঙচুর করেছে শিবিরকর্মীরা। এ সময় ১০/১২টি ককটেলের বিস্ফারণ ঘটায় তারা।

রাত ১০টার দিকে সেনাতলা উপজেলা পরিষদের ফটকের সামনে এবং বন্দরে ২০টির বেশি ককটেল বিস্ফোর ঘটায় শিবিরকর্মীরা।

এসময় পুলিশও পাল্টা রাবার বুলেট ছুড়ে। এছাড়া একশ’ ফিট রেল লাইন উপড়ে ফেলেছে তারা। ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে রাত ১০টা থেকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top