সকল মেনু

আকাশচুম্বী প্রত্যাশা নিয়ে লুকোচুরি!

 আছাদুজ্জামান, ১০ ডিসেম্বর :  নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমঝোতায় পৌঁছাবে-দেশবাসীর এমন আকাশচুম্বী প্রত্যাশা নিয়ে লুকোচুরি খেলছে দুইটি রাজনৈতিক দল। এতে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের মানুষ। কখনও গোপনে, কখনও রাতের আধারে গনমাধ্যমকে ফাঁকি দিয়ে চলছে আলোচনা। এনিয়ে ব্যাপক লুকোচুরিও করছেন তারা। ফলে গনমাধ্যম কর্মীদেরও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাজধানীর বারিধারা কে ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ২৮ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে তারানকোর উপস্থিতিতে গোপন বৈঠক করেছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেছেন গনমাধ্যমের কর্মীরা। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। এসব দেখে সাধারন মানুষের প্রশ্ন, প্রত্যাশার আলোচনা এত গোপনে কেন?

জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকোর সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করলেও অগ্রগতি নিয়ে কোনো কথা বলছেন না আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি নেতারা। নির্বাচন নিয়ে মুখোমুখি দুই প্রধান দলকে সমঝোতায় রাজি করানোর লক্ষ্য নিয়ে গত শুক্রবার ঢাকায় আসার পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দুই দফা আলোচনার পাশাপাশি তিনি আলাদা বৈঠক করেন বিএনপির আরো দুই নেতার সঙ্গে।

কিন্তু এই সব বৈঠকের আলোচনার বিষয় কিংবা তাতে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে কি না, তার কিছুই দেশবাসী জানছেন না।

তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রথম এবং মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফা হোটেল সোনারগাঁও-এ সামান্য সময়ের জন্যে মুখ খুলেছেন সফরকারী জাতিসংঘের মহাসচিব।

ওই সময় তিনি কুটনৈতিক ভাষায় বলেন, ‘আলোচনার সময় ফুরিয়ে যায়নি। আলোচনা চলছে। সংলাপ চালিয়ে যেতে দু’দলই আন্তরিক। আশা করি, তাদের সদিচ্ছা থাকলে সমাধান সম্ভব।

তারানকো ওই কথা আশাবাদী হতে চাইছেন দেশের ১৬ কোটি মানুষ। কিন্তু আলোচনা নিয়ে লুকোচুরি তাদের সেই প্রত্যাশা ভেঙে দিচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার বারিধারার ৭ নম্বর রোডের ২৮ নম্বর ‘ড্রিমস্টার ডুপলেক্স’ নামক ওই বাড়িতে তারানকোর উপস্থিতিতে আশরাফ-ফখরুলের বৈঠকের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। নিমিষেই উপস্থিত হয়ে যায় গনমাধ্যমের কর্মীরা। টেলিভিশনে তা সরাসরি সম্প্রচারে কৌতুহল আরো বেড়ে যায় দেশের মানুষের।

এমনকি ওই এলাকার যারা বসবাস করেন তারা কিছুক্ষন আগেও জানতে পারেননি ওই বাড়িতে কি হচ্ছে। জানা যায়, ওই বাড়িটি প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জুর। এখন পৈত্রিক সূত্রে ওই বাড়ির মালিক আন্দালিব রহমান পার্থ। তবে সেখানে তিনি থাকেন না। আরেকটি সূত্র জানায়, ইউএনডিপির এক কর্মকর্তা সেখানে স্বপরিবারে বসবাস করেন।

গনমাধ্যমের ভিড় দেখে বারিধারার ওই বাড়ির সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন বেসরকারী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা। কৌতুহল করে জানতে চাইছিলেন, ভাই এ বাড়িতে কি আশরাফ-ফখরুল আসলেই আছে? সমঝোতা নিয়ে উনারা গোপনভাবে বৈঠক করছেন কেন? আলোচনা করে সমাধানে পৌছাবে এটাইতো দেশের মানুষের প্রত্যাশা।

ঐ বাড়ির পাশেই বসবাসকারি এক কলেজ ছাত্র গনমাধ্যমের কর্মীদের কাছে জানতে চান বৈঠকে কোনো অগ্রগতি আছে কি না। ছাত্রটি বলেন, বৈঠক নিয়ে লুকোচুরি করে লাভ কি। প্রকাশ্যে হলে সমস্যা কোথায়?

গোপন বৈঠকের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার ঘটেছে এমন ঘটনা। রাজধানীর বনানীর একটি বাড়িতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে দু`দফা একান্ত বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে ঐ বৈঠকের কথা অস্বীকার করেন ফকরুর। বনানীর ১৬ নম্বর রোডের ৭৩ নম্বর বাড়িতে বিএনপি দলীয় সাংসদ আশরাফ উদ্দিন নিজামের বাড়িতে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ঐ বৈঠক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top