সকল মেনু

মহাতারকাদের টনিক বিচ্ছেদ

 আফিফা জামান, ঢাকা, ৫ডিসেম্বর:  বিচ্ছেদ সামলে ওঠা যে কারো জন্যে কঠিন। বিচ্ছেদের পরে সাথে থাকে মন ভেঙে যাওয়ার ব্যথা, আর নিজের সাথেই এক মনস্তাত্বিক যুদ্ধের অনুভূতি।
যখন এটা কোনো তারকার জীবনে ঘটে, তখন এর সাথে যুক্ত হয় নানা মুখরোচক কাল্পনিক ঘটনা-রটনা। চলে আসে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যা তাকে করে আরও বিধ্বস্ত। ভেঙে যাওয়া মনকে স্ক্যানারের নিচে ফেলে তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয় ঘটনার ব্যাখ্যা। আর পাপারাজ্জিদের হাত থেকে রেহাই পাওয়াতো আরো কঠিন।

যদিও কয়েকজন বলিউড তারকা বিচ্ছেদের পর হতাশ না হয়ে, বরং তারা আবির্ভূত হয়েছেন মহাতারকা হিসেবে। এমনই কয়েকজন বলিউড তারকা নিয়ে এই রচনা। তারা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরও ক্যারিয়ারকে নিয়ে গেছেন সাফল্যের চূঁড়ায়।

দীপিকা পাডুকোন: এ তালিকার শুরুর উদাহরণটা দীপিকার চেয়ে ভালো আর কে হতে পারে। যে কিনা অপাদমস্তক রনবীর কাপুরের প্রেমে সাঁতরে বেড়িয়েছিলেন, এমনকি ঘাড়ের ওপর একেছিলেন “আর. কে.” লেখা ট্যাটু (উল্কি)। কখনোই রনবীরের প্রতি তার প্রেম প্রকাশের কোন সুযোগও হাতছাড়া করেননি।
তবে ভাগ্য তাদের জন্যে নির্ধারণ করে রেখেছিলো অন্য কিছু। কিছুদিন একে-অন্যের সাথে ডেটিং করার পর তাদের পথ আলাদা হয়ে যায়।
তা সত্ত্বেও, গালে টোল পরা সুন্দরী তার ক্যারিয়ারে ‘সম্পর্ক ভেঙে’ যাওয়ার রেশও লাগতে দেননি। এই ঘটনার পরে তিনি কাজের মধ্যে ডুবে যান এবং দর্শককে উপহার দিতে থাকেন একের পর এক হিট ছবি। আর, আজকের দীপিকা বলিউডের একজন সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেয়া অভিনেত্রী।

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন: মা হওয়ার পর এখনও কোন সিনেমায় কাজ না করলেও অ্যাশ বলিউডি তারকাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নায়িকাই বটে। কেউ বিষয়টি অস্বীকারও করতে পারবেন না। বচ্চনপরিবারের বধূ হওয়ার আগে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরেও অনেক দৃঢ়তার সাথে ঘুরে দাড়িয়েছিলেন তিনি। আবির্ভূত হয়েছিলেন শক্তিমান অভিনেত্রী হিসেবে।
সে সময় ঐশ্বরিয়া এবং সালমান খানকে বলিউডের সূবর্ণ জুটি মনে করা হয়। সঞ্জয় লীলা বানসালীর ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ ছবির মাধ্যমে তাদের রোমান্টিক জুটি হিসেবে পর্দায় আত্মপ্রকাশ, যা ঐ সময়ে বক্স অফিসেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। এই সিনেমার পর বাস্তবেও তাদেরকে বেশ অন্তরঙ্গভাবে মিশতে দেখা গেছে। তবে, স্থায়ী হয়নি তাদের সেই মেলামেশা।
এ বিষয়ে ঐশ্বরিয়ার অভিযোগ ছিলো যৌক্তিক। সে সময় ওই খবরগুলো মিডিয়াতে তোলপাড় তোলে। আর তখন সবাই ধরেই নিয়েছিলো, ঐশ্বরিয়ার ক্যারিয়ার হয়তো শেষ। কিন্তু, সবকিছুকে ভুল প্রমাণ করে তিনি যে সফল হয়েছিলেন সেটার গল্পও নিতান্ত কম বড় নয়। এরপরে ঐশ্বরিয়ার সাফল্যের গল্প শুধু বলিউডেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে হলিউডেও। যা তাকে  দিয়েছে আন্তর্জাতিকমানের তারকাখ্যাতি।

রণবীর কাপুর: রণবীর-দীপিকার বিচ্ছেদের গল্প বলিউডের মিডিয়ায় প্রচার সবচেয়ে ‘ন্যাক্কার’ ঘটনা। রণবী ক্যারিয়ারের শুরুতেই দীপিকার প্রেমে পরেছিলেন এবং ঘন ঘন জনসম্মুখে এসে কিছু একটা করে হয়ে উঠতেন খবরের শিরোনাম।
সম্পর্ক যতই গভীর হচ্ছিল তখনই তাদের দু’জনের মধ্যে কিছু সমস্যার অবতারণা হয় ফলে সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। কোনরূপ রাখঢাক ছাড়াই তারা দু’জনের বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। হয়ে যায় তাদের স্বপ্নের জগত আলাদা। আর বাকি সব হয় ইতিহাস। আর এই অভিনেতা এখন বলিউডের ভবিষ্যৎ ‘সুপারস্টার’ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এই জুটির অভিনীত সর্বশেষ ছবি  ‘ইয়ে জাওয়ানী হ্যায় দিওয়ানী’ তাদের ব্রেক-আপ পরবর্তী সময়ে বক্স অফিসে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে।

কারিনা কাপুর: আসা যাক বলিউডি ‘বেবো’র কথায়। কারিনা ও শহিদ কাপুরের প্রণয়লীলার কারোই অজানা নয়। যদিও এখন এই অভিনেত্রী ছোট নবাব সাইফ আলী খানকে বিয়ে করে সুখেই আছেন।
যদিও ঐ সময়ে পর্দার বাইরের তাদের রসায়নেরও অনেক সমালোচক ছিল। তবুও এই জুটির সম্পর্ক তিন বছর অটুট ছিল। কিন্তু, তারপরও খুব দ্রুতই তাদের উদীয়মান সম্পর্কের ইতি টানতে হয়।
তবে সম্পর্কের শেষ সময়ে এসেই তারা তাদের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে হিট “জাব উই মেট”-ছবিটি উপহার দেন দর্শকদের। তবে ব্রেকআপের পরে হরিয়ে যাওয়া বা বিষন্নতায় ভোগেননি বেবো।
সে সময় তাদের বিচ্ছেদের পরেই ‘জাব উই মেট’ দিয়ে পাঁকা আসন তৈরি করেন নেন তিনি। আর নিজেকে সাফল্যের চূঁড়ায় নিয়ে যান ‘হিরোইন’ দিয়ে।

জন আব্রাহাম: অনেক বোদ্ধাই বলে থাকেন, মডেলরা অভিনয় করতে পারে না। কিন্তু, এই মতাদর্শকে ভুল প্রমাণ করেছেন জন আব্রাহাম।
শুধু তাই নয়, বিপাশা বসুর সঙ্গে তার ব্রেকআপের পর বক্স অফিসে তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়ে উঠে। এই অভিনেতাকে ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নেয়ার জন্যে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। তিনি বিপাশার সঙ্গ ছাড়ার পরেএকের পর এক ব্লকবাস্টার সিনেমা দিয়ে জায়গা করে নেন বড় তারকাদের কাতারে।
অভিনয় ছাড়াও জন একজন প্রযোজক হিসেবেও সাফল্য অর্জন করেছেন ‘ভিকি ডোনার’ এবং ‘মাদ্রাজ ক্যাফে’ নামের সিনেমা দুইটির মাধ্যমে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top