সকল মেনু

মুনীর চৌধুরীর আজ ৮৮তম জন্মদিন

 নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ২৭ নভেম্বর:  শহীদ বুদ্ধিজিবী মুনীর চৌধুরী। বাংলা সাহিত্যের জন্য নিবেদিত মানুষদের একজন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন নিয়ে রচিত ‘কবর’ নাটক তাকে চির ভাস্বর করে রেখেছে বাঙ্গালির অন্তরের গহীনে। এই কিংবদন্তীর আজ ৮৮তম জন্মদিন। তার বিদেহি আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। মুনীর চৌধুরীর জন্ম ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার মানিকগঞ্জে। মা বাবার চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন তিনি। বাবা আব্দুল হালিম চৌধুরী তখন মানিকগঞ্জের এস ডি ও। অবশ্য হালিম চৌধুরীর পৈত্রিক বাড়ি নোয়াখালী জেলায় রামগঞ্জ থানার গোপাইরবাগ গ্রামে।

১৯৪১ সালে মুনীর চৌধুরী ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকেই প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৪৬ ও ১৯৪৭ সালে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী জননিরাপত্তা আইনে দ্বিতীয়বারের মত গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থাতেই মুনীর চৌধুরী ১৯৫৩ এবং ১৯৫৪ সালে বাংলায় এম.এ. প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব পরীক্ষা দিয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।

১৯৪৮ সালে মুনীর চৌধুরী প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘের সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং এই বছরেই তিনি কলকাতায় অনুষ্ঠিত কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে যোগ দেন। ১৯৪৯ সালে মুনীর চৌধুরী খুলনার দৌলতপুর ব্রজলাল কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক হয়ে খুলনায় চলে যান। আধুনিক, শিক্ষিত ও শিল্পী লিলি চৌধুরীকে বিয়ে করে অধ্যাপনার পাশাপাশি সংসার জীবনও শুরু করেন এ বছরেই।

মুনীর চৌধুরী রচিত ‘কবর’ নাটকটি-ই ভাষা আন্দোলনের একমাত্র নাট্য দলিল। তিনি নাটকটি লেখা শেষ করেছিলেন ১৯৫৩ সালের ১৭ জানুয়ারি আর জেলখানায় এটি মঞ্চস্থ হয়েছিল ২১ ফেব্রুয়ারি। নির্দেশনা দিয়েছিলেন ফণী চক্রবর্তী।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মুখশধারী আলবদর বাহিনী তাকে খাবার টেবিল থেকে জরুরি মিটিংয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। সেই যাওয়াই ছিল তার শেষ যাওয়া। আর ফিরে আসেননি বাংলা সাহিত্যের অনন্য অসাধারণ এই প্রতিভাবান।

মুনীর চৌধুরী যে ক’দিন বেঁচে ছিলেন, বীরের মত বেঁচে ছিলেন। আর সেই বীর তাঁর বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার- সম্মাননাও পেয়েছেন। তিনি ১৯৬২ সালে নাটকের জন্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার ও গবেষণা সাহিত্যের জন্যে ১৯৬৫ সালে দাউদ পুরস্কার লাভ করেন।

কবর নাটক ছাড়াও মুনীর চৌধুরী  রক্তাক্ত প্রান্তর (১৯৬২), চিঠি (১৯৬৬), দন্ডকারণ্য (১৯৬৫), পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য (১৯৬৯); অনুবাদ নাটক-কেউ কিছু বলতে পারে না (১৯৬৭), রূপার কৌটা (১৯৬৯), মুখরা রমণী বশীকরণ (১৯৭০); প্রবন্ধগ্রন্থ- ডাইড্রেন ও ডি. এল. রায় (১৯৬৩), মীরমানস (১৯৬৫), তুলনামূলক সমালোচনা (১৯৬৯), বাংলা গদ্যরীতি (১৯৭০) ইত্যাদি গ্রন্থসমূহ রচনা করে গেছেন। যা তাকে অমর করে রেখেছে বাঙ্গালির চেতনায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top