সকল মেনু

টাঙ্গাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি

 টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। একের পর এক খুনের ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ জেলার সাধারন মানুষ। এর পাশাপাশি পাল্লা দিয়েও বাড়ছে এ জেলায় রাজনৈতিক অস্থিরতা।  চলতি মাসের গত ১০ দিনে জেলার  বিভিন্ন স্থানে ৪টি খুন হয়েছে। এ সকল হত্যা মামলার আসামিরা এখন রয়েছে পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এছাড়াও নতুন করে জেলার রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে অস্তিরতা।সরেজমিনে ঘুড়ে পাওয়া তথ্য, চলতি বছরের গত ১৩ নভেম্বর তারিখে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মাদকাসক্ত ছেলে মনিরুল ইসলাম (২৫) এর হাতে তার নিজের মা হাওয়া বেগম (৬০) খুন হয়েছেন। পাষন্ড এই মাদকাসক্ত ছেলেটি তার মা কে রাতে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে। লোমহর্ষক এ হত্যা কান্ডের খবর
পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। সকাল সাড়ে ১০ টায় ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে ঘাতক ছেলে মনিরুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার ৪ দিন পর ১৭ নভেম্বর তারিখে বাসাইলে জাহিদুর রহমান (৪৫) নামে এক প্রভাষকের অপহরনের পর তার  লাশ উদ্ধার করেছে বাসাইল থানা পুলিশ। উপজেলার পাটখাগুড়ি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তির বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার শেওতা গ্রামে। তিনি মানিকগঞ্জের বাজিতপুর কলেজের প্রভাষক।বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও.সি) সালাহ্ উদ্দিন জানান, নিহত ওই ব্যক্তি পিকাপ ভ্যান নিয়ে মুরগির খাবার কেনার জন্য গত রাতে ভুঞাপুর যাচ্ছিলেন।  পথিমধ্যে টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা বাইপাস এলাকায় পৌছালে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে তাকে তুলে নিয়ে যায়।পরে স্থানীয় লোকজন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ তার গাড়ি চালাক ফরহাদ হোসেনকে আটক করেছে। তার একদিন পরই ১৯ নভেম্বর তারিখে কালিহাতীতে আলমগীর হোসেন (৩০) নামেরএক অটোচালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে কালিহাতী পুলিশ।মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার সল্লা গ্রামের একটি পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মৃত ব্যক্তি দেউপুর পশ্চিম পাড়ার আব্দুল হামিদ মিয়ার ছেলে। সে  ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার চালক ছিল।জানা যায়, গত ১৫ নভেম্বর (শুক্রবার) সকালে আলমগীর হোসেন বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এর পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় লোকজন উপজেলার সল্লা গ্রামের একটি পুকুরে আলমগীরের অর্ধগলিত লাশ ভাঁসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।১০ দিনে মাত্র ৪ খুন  এ বিষয়ে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও.সি) জহিরুল ইসলাম জানান, লাশের শরীরে ধারালো অস্ত্রাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এদিকে তার পরের দিন প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে দেলদুয়ারে। চালককে হত্যা করে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ব্যাপারে দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চান মিয়া জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতের যে কোন সময় উপজেলার পাথরাইল শাহিন শপিং মলের ৬০ গজ পশ্চিমে পাকা সড়কের পাশে এ ঘটনাটি ঘটেছে। চালকের নাম মতিউর রহমান মতি(২৩)। সে কালিহাতি উপজেলার ঘড়িয়া গ্রামের মরহুম মজিবুর রহমান মজু’র ছেলে। এতসব ঘটনায় আসামিদের ধরতে উল্লে খযোগ্য কোন ভুমিকা রাখতে পারেনি পুলিশ।বছরের শেষের দিকে এ জেলার এভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতিতে আশায়  হতাশ জেলার সচেতন মহল। তাদের দাবী এ পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি জনগণের যানমালের নিশ্চয়তা রক্ষায় পুলিশ দায়িত্বশীল হবে। এছাড়াও এ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। এমনটি মেনে নিতে পারছেনা জনগন। তারাও এ অবস্থার অবসান চায় ও পুলিশেকে আরও দায়িত্বশীল হবার আহ্বান রয়েছে জেলাবাসীর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top