সকল মেনু

তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদকহটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা,২০নভেম্বর:  বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান পিনো ১৯৬৫ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন।  বাংলাদেশের তারুণ্যের এই ‘রাজনীতির আইডল’ বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্রের নাগপাশ ছিন্ন করে রাজনীতির নতুন দিশার বর্ণাঢ্য আলোক রোশনাই ছড়িয়ে সম্মুখে ধাবমান। এক মর্মান্তুদ ক্ষত নিয়ে তিনি প্রবাসী থাকলেও তার প্রাণ পড়ে আছে দেশেই । বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে রেকর্ড করা এক বক্তৃতায় তারেক রহমান বলেছিলেন, ‘তিনি এ দেশকে ভালোবাসেন। এ দেশই তার ঠিকানা। সুস্থ হয়ে তিনি এ দেশেই ফিরে আসবেন।’
জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল রাতে তারেক রহমান তার মা বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এ উপলক্ষে রাত ১২টা ১ মিনিটে গুলশান অফিসে কেক কাটা হয়। এছাড়া আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাসাস এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেক কাটবে।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে পিতৃহারা তারেক রহমান দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবিতে পরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষে ভর্তি হন এবং স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন মেধাবী ছাত্র তারেক রহমান। ছাত্রজীবন শেষে ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন তারেক রহমান। তিনি বস্ত্রশিল্পে বিনিয়োগ করেন এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসায় সফলতা লাভ করেন। পরে তিনি নৌ-যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করেন এবং সাফল্য অর্জন করেন। পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৮৮ সালে তারেক রহমান বগুড়া জেলার গাবতলী থানা বিএনপি’র সদস্য হন। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেয়ার আগেই তারেক রহমান রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন।
১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক রহমান তার মা খালেদা জিয়ার সহচর হিসেবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও মায়ের পাশাপাশি তারেক রহমানও দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান। মূলত এ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতির প্রথম সারিতে তারেক রহমানের সক্রিয় আগমন ঘটে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০০২ সালে তারেক রহমানকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়। এ দায়িত্ব পেয়ে জিয়াউর রহমানের ১৯ দফার আলোকে তারেক রহমান দেশব্যাপী দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সাথে ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেন।

মূল সংগঠন ছাড়াও জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তারেক রহমান কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। এখান থেকেই তিনি মাঠ পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্য শোনেন এবং তাদের মতামত গ্রহণ করেন। এ সভাগুলোতে তারেক মূলত দলের গঠনতন্ত্র, উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘ মতবিনিময় করেন।

এই জনসংযোগের ফলে দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল অসামান্য বৃদ্ধি পায় এবং তরুণদের আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন তারেক রহমান। বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সন্তানের পরিচিতি থেকে তিনি একজন দক্ষ রাজনৈতিক সংগঠক ও সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি বিএনপিকে তৃণমূল শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমান সংগঠনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

এদিকে তারেক রহমানের অভাবনীয় জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ওঠে একটি চক্র। ওয়ান ইলেভেনের সরকার তাকে পঙ্গু করার যে গভীর চক্রান্তের নীল-নকশা এঁকেছিল তার নির্মম বলি হন আধুনিক রাজনীতির এই ‘আইডল’। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ একটি ‘কথিত’ দুর্নীতি মামলার আসামী হিসেবে তারেক রহমানকে তার ঢাকার ক্যান্টমেন্টের মইনুল রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ১৩টি দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়।

ওয়ান ইলেভেনের সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকার তারেক রহমানকে গ্রেফতারের পর তার উপর নির্মম নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাকে অনেক উপর থেকে বার বার নিচে ফেলে দিয়ে হত্যা চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। আর বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে তারেক রহমানকে আরো মামলায় জড়িত করে। সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার মামলার রায় হয়েছে সম্প্রতি। এই মামলায় তারেক রহমান বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এছাড়া অপর মামলাগুলোর একটিও এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি।

বর্তমানে লন্ডনের সাউথ ওয়েলিংটন ও লন্ডন হসপিটালে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি সেন্ট্রাল লন্ডনের এডমন্টনে সপরিবারে বাস করছেন ।

প্রতিবারের মতো এবারো এই হিরন্ময় তরুণ নেতার জন্মদিনটি এলেও তা সুদূর প্রবাসে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তাকে পালন করতে হচ্ছে। আজ এমন মধুরতম দিনেও মা বেগম খালেদা জিয়া, ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো কাছে নেই। নেই ঘনিষ্ঠ স্বজনরাও । তবে তার সঙ্গে আছেন সহধর্মিণী ডা. জুবায়দা রহমান ঝুনু, একমাত্র কন্যা জায়মা রহমান ।

এদিকে জন্মদিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেছেন তারেক রহমান। এছাড়া জন্মদিন উপলক্ষে গতরাতে কেক কাটা হয়েছে। এছাড়া সারা দেশে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরাও পালন করছেন তাদের প্রিয়তম নেতার জন্মদিনটি।

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এটি উদ্বোধন করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top