সকল মেনু

হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলায় প্রসূতি মা ও শিশুর মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১৯ নভেম্বর : বাউফল হাসপাতালে এক ডাক্তার ও নার্সের অবহেলার কারণে আজ মঙ্গলবার ভোর রাতে এক প্রসূতি মা ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার জড়িত ওই ডাক্তার ও নার্সের বিচারের দাবিতে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও হাসপাতাল ঘেরাও করেছে। জানাগেছে, বাউফলের আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মহসেনউদ্দিন গ্রামের আবদুর রহিম সিকদারের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে (২৫) সোমবার সকাল ১১টার দিকে বাউফল ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মা ও শিশু বিভাগের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহাবুবুর রহমানের অধিনে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার মাহাবুব রোগীকে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে স্বাভাবিক ভাবে সন্তান প্রসবের জন্য ইনজেকশন দেন। বিকালের দিকে ফাতেমা বেগম অসুস্থ হয়ে পরলে তার স্বামী আবদুর রহিম ডাক্তার মাহবুবকে মোবাইল করেন। ডাক্তার মাহবুব এসময় নওমালা নগরের হাট এলাকায় তার ব্যক্তি গত চেম্বারে রোগী দেখায় আসতে বিলম্ব হবে বলে জানান। এর পর নিরুপায় হয়ে আবদুর রহিম হাসপাতালে অন্য ডাক্তার ও নার্সদের সহযোগিতা নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানেও তিনি ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে ডিউটি নার্স কহিনূর বেগম এলেও তিনি ডাক্তারের পরামর্শের বাইরে সবা দিতে অস্বীকৃতি জানান। রাত ১২টার দিকে ডাক্তার মাহবুব হাসপাতালে এসে রোগী দেখেন এবং সব কিছু স্বাভাবিক আছে বলে জানালেও তখন প্রচন্ড প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিল ফাতেমা বেগম। এরপর ভোর রাত ৪টার দিকে ফাতেমা বেগমের পুনরায় প্রসব বেদনা উঠলে ডাক্তার মাহবুববকে তার হাসপাতাল কোয়াটারের বাসায় গিয়ে খবর দেয়া হলেও তিনি আসেননি। ডিউটি নার্স কহিনূর ফজরের নামাজ আদায়ের অজুহাত দিয়ে চলে যান। প্রায় আধা ঘন্টা প্রসব বেদনার পর ভূমিষ্ট হয় একটি মৃত ছেলে সন্তান। এর কিছুক্ষন পর মারা যান ফাতেমা বেগম। মৃত ফাতেমা গমের স্বামী আবদুর রহিম অভিযোগ করেন,তার স্ত্রীকে হাসপাতালে সিজার করার জন্য ডাক্তারকে তিনি অনুরোধ করলে ডাক্তার তাকে ধমক দিয়ে বলেন, হাসপাতালে সিজার হবেনা, বাইরে ক্লিনিকে গিয়ে সিজার করান। তিনি গরিব হাওয়ায় টাকার অভাবে স্ত্রীকে ক্লিনিকে নিয়ে সিজার করাতে পারেননি। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুনিয়া বেগম বলেন, সরকার এই হাসপাতালে প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে মা ও শিশু বিভাগ চালু করেছেন। হাসপাতালে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকা সত্বেও ডাক্তার মাহাবুবুর রহমান কেন ওই গৃহবধূর
সিজার করলেননা তা তদন্ত করে দেখা উচিত।এ ছাড়াও তিনি হাসপাতালেরডাক্তারদের বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে অসাদাচরন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগকরেন। এ দিকে এ ঘটনার জড়িত ডাক্তার ও নার্সের বিচারের দাবিতে স্থানীয়  লোকজন মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও হাসপাতাল ঘেরাও করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। খবর পেয়ে
বাউফলের ইউএনও এবিএম সাদিকুর রহমান হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মঞ্জুরুল আলমকে নির্দেশ দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top