সকল মেনু

দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করলেও থেমে নেই কুড়িগ্রাম -১ আসনের নির্বাচনী

 ডাঃ জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ  সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্বেও থেকে নেই নাগেশ্বরী- ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম -১ আসনের  নির্বাচনী প্রচারনা। প্রধান ৩ দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন মনোনয়ন প্রত্যশায় নির্বচনী প্রচারনায় নেমে পড়েছেন। মনোনয়ন  প্রত্যশায় রয়েছেন আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ৬ জন  প্রার্থী। এরা হলেন এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান এমপি, গোলাম  মোস্তফা, আছলাম হোসেন, মজিবর রহমান বীরবল, মোজাম্মেল হক  প্রধান ও সাইফুর রহমান রান। তাদের ছবি সম্মিলিত শুভেচ্ছা তরুণ,   ব্যানার, ফেসটুন শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। আওয়ামীলীগ সহ ১৪ দলীয় মহাজোট ফিরে পেতে চায় তাদের এই আসনটি। একই সাথে  জয়ের ধারা অব্যহত রাখতে আশাবাদী জাতীয় পার্টি। আবার বিএনপিও   আসন্ন দশম সংসদ নির্বাচনে আসনটি জায়ের জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম -১ আসন।   বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় জাটির  মহাজোট প্রার্থী এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, ২লাখ ৯ হাজার  ৮শ ৯৯ ভোট পেয়ে জয়ি হয়ে ছিলেন। তার নিকটতম প্রার্থী বিএনপির (৪ দলীয় জোট) সাইফুর রহমান রানা পেয়েছিলেন ৯২ হাজার  ৫শ ৮৩ ভোট। কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টির কাজী লতিফুর কবীর   পেয়েছিলেন ১হাজার ২শ ২১ ভোট। ইসলামী শাসনতন্ত্র অন্দোলনের  আসছার আলী পেয়েছিলেন, ১৭ হাজার ৪শ ৬৫ ভোট। এবার এ আসনে  মোট ভোটার সংখ্যা ৪লাখ ১১ হাজার ১শ ৯৫ জন। এর মধ্যে নাগেশ্বরীতে  ২লাখ ৫৬ হাজার ৪৫ এবং ভূরুঙ্গামারীতে ১লাখ ৫৫ হাজার ১শ ৫০ জন। এ আসনটি মূলত জাতীয় পার্টির দূর্গ বলে পরিচিত। এর আগে পর পর দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতিয় পার্টির এ কে  এম মোস্তাফিজুর রহমান। এর আগে এ আসনে এমপি ছিলেন, তার
মামা প্রয়াত শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ  নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা। কিন্তু এ দলে অভ্যন্তরিন কোন্দলে কিছুটা টেনশনে রয়েছেন তিনি। ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের দন্দ্বের কারনে প্রায় দু’ মাস থেকে দলীয় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দন্দ্ব নিরসনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা বিএনপি থেকে কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতিসহ ৫২ সদস্য এক যোগে পদত্যাগ করলে সাইফুর রহমান রানার প্রচেষ্ঠায় আবার তারা দলে ফিরে আসে। নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। কাউন্সিলের প্রত্যক্ষ ভোটে  ভূরুঙ্গামারীতে অধ্যাপক কাজি গোলাম মোস্তফা ফরিদুল হক শাহীন
শিকদার সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। অপরদিকে নাগেশ্বরীতে বিগত পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা বিএনপির একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করায় বিএনপির পরাজয় হবে বলে অনেকে ধারনা পোষণ করেন। একক প্রার্থী মনোনয়ন উদ্যেগ না নেয়ায় ব্যথিত হন সাধান নেতাকর্মীরা। জাপার সাথে যদি বিএনপির ঐক্য গড়ে ওঠে তবে জাপা প্রার্থীর মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভবনা বেশী থাকায় বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী প্রায় নি®িকৃয় হয়ে পড়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে
পড়েছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি তাদের অভ্যন্তরিন কোন্দল মিটিয়ে সভা সমাবেশ করে দলীয় নেতাকর্মীদে চাঙ্গা করে চলছে। এ আসনের আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যশী রয়েছেন ৯ জন। এরা হলেন শিল্পপতি গোলাম মোস্তাফা, নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক প্রধান, সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আসলাম হোসেন সওদাগর, কৃষক নেতা মজিবর রহমান বীরবল, ভূরুঙ্গামারী উপজেলা চেয়ারম্যান
আব্দুল হাই মাষ্টার, উপজেলা সম্পাদক নূরন্নবী চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা ও বীরমুক্তিযোদ্ধা আক্তরুজ্জামন মন্ডল, কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক। এ ছাড়াও যুব মহিলা লীগের আহবায়ক আসমা আক্তার সাথী মানোনয়ন প্রার্থী। নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামীলীগের বিগত কাউন্সিলে গোলাম মোস্তাফা বতমান নির্বাচিত সভাপতি ও সম্পাদকের বিপক্ষে তার ভাইকে দিয়ে  আলাদা প্যানেল দিয়েছেন। ভোটে ওই প্যানেল নির্বাচিত হয়। এর পর
থেকেই দলের সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে শিল্পপতির দূরত্বের সৃষ্টি হয়। অপরদিকে ভূরুঙ্গামারীতে আওয়ামীলীগের মূল কমিটিকে এড়িয়ে শিল্পপতি কে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী অনেকেই পছন্দ করছে না। তবে শিল্পপতি গোলাম মোস্তাফা এলাকার উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এ আসনের জাতীয় পাটির মনোনয়ন প্রার্থী মাত্র ১জন। বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমান। এ আসনের জাতীয় পার্টি ও বিএনপির জয়ের সম্ববনা থাকলেও আওয়ামীলীগের প্রার্থী বেশি থাকায় জয়ের সম্ভবনা কম। সকল কোন্দল মিটিয়ে এক প্রাথী দিতে পারলে এ আসনের জয়ী হবার সম্ভবনা রয়েছে। তিন বারের নির্বাচিত এমপি এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান ক্লিন ইমেজের হিসেবেএলাকায় পরিচিত থাকলেও বর্তমানে তার ইমেজ অনেকটাই ক্ষুণ করেছেন কয়েক জন নেতাকর্মী বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টি সুবিধা জনক স্থানে থাকলেও সাংগঠনিক ভাবে পার্টিকে শক্তিশালী করতে একরকম অনিহা কাজ করছে বলে অনেকে মনে করেন। অপরদিকে বিএনপি এবং আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রর্থীরা পর্যবেক্ষণ করছেন আসলে জাতীয় পার্টি কার সাথে ঐক্য গড়ে তুলবে। উভয় দলিই নির্বাচনি মাঠ তৈরী করে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে নারাজ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top