সকল মেনু

আজের আলীর আজাইর‌্যা কাজ

মুক্তিযোদ্ধার সম্মানে পাওয়া সচিবালয়ের অস্থায়ী পাস ব্যবহারের অধিকার হারালেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আজের আলী সরকার। তার অস্থায়ী পাস নং- ১৭৮২ (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের দেওয়া)। তবে পাস অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগ থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজের অস্থায়ী  পাসটি অপব্যবহার করা এবং তার পাস কালার স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে জাল পাস তৈরী করে অন্যদের সচিবালয়ে নিয়মিত প্রবেশ করানো।

বুধবার বেলা ১১টায় এমন একটি ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আজের আলী সরকার ও রাশেদুল হক খান আটক হন। বিকেল পর্যন্ত আটকে রেখে বেলা সাড়ে পাঁচটায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় সচিবালয়ের নিরাপত্তা পুলিশ।

সচিবালয় নিরাপত্তা শাখার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিবেচনা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তাকে অঙ্গিকার করিয়ে নেওয়া হয়, আর কখনও এমন কাজ যেন না করেন। পাশপাশি তার পাসটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার কাছে থাকা আরো তিনটি জাল পাস উদ্ধার করে বাজেয়াপ্ত করা হয়।

সচিবালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, বেলা ১১টায় আজের আলী সরকার নিজের পাসের স্ক্যানিং করা জাল পাস দিয়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকার রাশেদুল হক খানকে সচিবালয়ে প্রবেশের সুযোগ করে দেন। নিজেও তার পাসটির স্ক্যানিং কপি নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। দু’জনে একসঙ্গে প্রবেশের সময় নিরাপত্তা কর্মীদের সন্দেহ হলে তল্লাসীর পর তাদের করা হয়। তল্লাসী করে অস্থায়ী পাস ছাড়াও আজের আলীর কাছে কালার স্ক্যানিং করা আরো তিনটি জাল পাস পায় নিরাপত্তা কর্মীরা। রাশেদুল হক খানের পাসটিও ছিল আজের আলীর পাসের স্ক্যানিং কপি।

জিজ্ঞাসাবাদে আটক রাশেদুল জানান, আজের আলী একজন পেশাদার তদবির বাজ। আজের আলী পাশপাশি থানার লোক হওয়ার সুবাধে আমার সঙ্গে তার পরিচয় ছিল। আজ সচিবালয়ে আমাকে নিয়ে আসেন, আমার শ্যালকের বদলির তদবিরের জন্য। আমার শ্যালক এসপিবিএন-এ কনস্টেবল হিসেবে চাকরি করেন। তার বদলির জন্য এক লাখ টাকাও চেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আজের আলী।

সচিবালয়ের নিরাপত্তা শাখা থেকে বলা হয়, বিভিন্ন ধরনের তদবিরের ব্যাগ ভর্তি কাগজ ছিল তার কাছে। ব্যাগ ভর্তি তদবিরের কাগজ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শাখায় নিয়মিত দৌড়-ঝাপ করেন মুক্তিযোদ্ধা আজের আলী সরকার।

ঘটনার সময় উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারিরা জানান, সচিবালয়ের সব শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারিরা তাকে চেনেন পেশাদার তদবিরবাজ হিসেবে। তবে আজ জানা গেল উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মশিউর রহমান আরো বলেন, এর আগে আজের আলী মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিন পাঁচ ছয়জন মক্কেল দাঁড় করিয়ে নিজে রেড ব্লক পার হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কক্ষের দিকে এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে তাকে ফিরিয়ে আনা হলে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের চাকরি খেয়ে ফেলার হুমুক দেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top