সকল মেনু

মওদুদসহ বিএনপির ৫ নেতা কারাগারে;রিমান্ড ও জামিন শুনানি ১৪ নভেম্বর

image_636_104171 আদালত প্রতিবেদক:  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদসহ শীর্ষ বিএনপির পাঁচ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকার কারণে আগামী ১৪ নভেম্বর রিমান্ড ও জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মওদুদ ছাড়া অপর চার বিএনপি নেতা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিঞা, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আওয়াল মিন্টু ও খালেদারি জিয়ার বিশেষ সহকারী আইনজীবী শিমুল বিশ্বাস। পাঁচ আসামিকে প্রথম শ্রেণীর কারামর্যাদা দেয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া মওদুদ, রফিক ও আনোয়ারকে কারাবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মহানগর হাকিম জয়নাব বেগম শনিবার বিকেলে এ আদেশ দেন। মতিঝিল থানার পৃথক দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের আদালতে হাজির করে দশ দিন করে বিশ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। মতিঝিল থানার ১৬(১১) ১৩ ও মতিঝিল ২৪(৯)১৩ মামলায় এ রিমান্ড আবেদন করা হয়। আসামিদের প্রিজন ভ্যানে করে বিকাল সাড়ে তিনটায় আদালতে হাজির করা হয়। রাখা হয় কোর্ট হাজত খানায়। সেখান থেকে বিকাল ৪টার ১০ মিনিটে আদালতের এজলাস কক্ষে তোলা হয়। শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ৪টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত।

রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন ব্যারিস্টার রফিকুল হক, সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান। রফিকুল হক বলেন, ‘এটা একটি পলিটিক্যাল মামলা। আসামিদের রিবুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তাদের রিমান্ডে নেয়ারও কোনও প্রয়োজন নেই। তাদের জামিন দেয়া হোক। মওদুদ ও এমকে আনোয়ার প্রসঙ্গে রফিকুল বলেন, তারা দুই জনই এমপি। সংসদ চলাকালীন সময়ে কোনও এমপিকে গ্রেফতার করতে হলে অবশ্যই স্পিকারের অনুমতি নিতে হবে। এদের গ্রেফতার করা বেআঈনি।’ খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলেন, ‘কোনও সভ্য দেশে এমপিদের গ্রেফতার করতে হলে স্পিকারের অনুমতি নেয়া প্রয়োজন। আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। আসামিরা ঘটনার স্থলে ছিলেন না। রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য তাদের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তারা এজহারনামীয় আসামিও নন। তাদের রিমান্ডে নেয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না।’ রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ডের স্বপক্ষে বক্তব্য রাখেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আব্দুল্লাহ আবু, দায়রা জজ আদালতের পিপি খোন্দাকর আব্দুল মান্নান। তারা আদালতকে বলেন, ‘ আসামিদের উস্কানিতে আঠারো দলীয় জোটের নেতারা সাধারণ মানুষের সম্পত্তি, গাড়িতে অগ্নিসযোগ দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। মামলার ঘটনার সময় ব্যবহৃত বিস্ফোরকদ্রব্যের উৎস ও মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করতে আসামিদের রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস এবং মানুষের প্রাণহানি করার জন্যে আসামিদের কি ধরনের পরিকল্পনা আছে তা জানতে তাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত বিস্ফোরক উপাদানের বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য আসামিদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

মতিঝিল থানায় দায়ের করা ১৬(১১)১৩ নং মামলার বাদী হলেন- মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) একেএম আজিজুল হক। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান। মামলার বিবরণে জানা যায়, ৫ নভেম্বর ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালে কমলাপুর বাজারের নিউ বেকারির সামনে জোটের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে এবং তাদের কাজে বাধা দেয়। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। এ মামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মওদুদসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

এছাড়া ৪৪(৯)১৩ মামলার বাদী হলেন- মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হুমায়ুন কবীর হাওলাদার এবং তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) খন্দকার জাহিদ আলী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২৪ সেপ্টেম্বর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে যুবদল (দক্ষিণ) সভাপতি রফিকুল ইসলাম সবুজের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে এবং সেখানে ভাঙচুর ও গাড়ির চালকদের হত্যার চেষ্টা করেন। এ মামলাতেও আসামিদের মূল পরিকল্পনারী হিসেবে দেখানো হয়েছে।

শুক্রবার রাতে আটক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিঞা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু ও বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top