সকল মেনু

রোববার থেকে ৭২ ঘণ্টার হরতাল

49745_444 নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ৮ নভেম্বর:  নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে দুই দফায় ৬০ ঘণ্টার পালনের পর, এবার ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে ১৮দলীয় জোট। আগামী ১০ নভেম্বর রোববার থেকে ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ হরতালের ডাক দিয়েছে জোটটি।

শুক্রবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মাহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৮দল নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকাররের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু সরকার বিরোধীমতকে উপেক্ষা করে তথাকথিত সর্বদলীয় সরকার গঠন করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে একদলীয় নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। এজন্য দেশের সকল রাজনৈতিক দল, আইনজীবি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মতামতকে উপেক্ষ করছে তারা।’

‘সরকার মুখে সংলাপের কথা বললেও মুলত তারা সমঝোতা চান না। এ বিষয়ে তাদের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। আর সেই কারণে নানা ধরনের নেতিবাচক নাটক তৈরী করে সংলাপ যেন না হয় সেই আবহ তৈরী করছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার একদিকে হত্যা, নির্যাতন চালিয়ে জনগনের আন্দোলনকে স্তব্দ করে দিতে চায়, অন্যদিকে সর্বদলীয় সরকারের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো পাতানো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।’

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহন জরুরী মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়া, জনগণকে পছন্দের সরকার গঠনের জন্য ভোটাধিকার এবং মৌলিক অধিকার সংরক্ষনের জন্য নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই। এ দাবি এখন সমগ্র জাতির।’

১৮ দল বাধ্য হয়ে কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের বিকল্প নেই। সরকার সভা, সমাবেশ এমনকি মানববন্ধনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে।’

হরতাল দিয়ে নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করা যাবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ অতীতে যতগুলো আন্দোলন সফল হয়েছে, সবগুলোই জনগনের স্বত:স্ফূর্ত আন্দোলনে এমন হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে হয়েছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি সবসমই সংলাপ চায়, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।’

এর আগে শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪ টায় ১৮ দলের মহাসচিবরা বৈঠক করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. রিদউয়ান উল্লাহ শাহিদী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডা আহমেদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, এনপিপি মহাসচিব ড. ফরিদুজ্জমান ফরহাদ, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল মালেক চৌধুরী, বিজেপি মহাসচিব সালাউদ্দিন মতিন, এনডিপি মহাসচিব আলমগীর মজুমদার, লেবার পার্টির মহাসচিব হামিদুল্লাহ আল মেহেদী, জমিয়তে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এ্যাড. শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মুসলীম লীগের মহাসচিব ডা. জুলফিকার আলী চৌধুরী, ডিএলের খোকন চন্দ্র দাস, ইসলামী ঐক্যজোটে মুফতি মোহাম্মদ তৈয়ব, ইসলামী পার্টির এম এ রশিদ প্রধান, পিপলস পার্টিও মহাসচিব এ্যাড সৈয়দ মাহবুব হোসেন প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তিনদিনের হরতাল কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top