সকল মেনু

বাউফল এখন মাদক সেবীদের দখলে..!

Bauphal-2 নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, (পটুয়াখালী) ৬ নভেম্বর:  বাউফল এখন মাদক সেবীদের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে দেদারছে মাদক কেনা বেচা। হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়, চোলাই মদ, ইয়াবা, গাজা, হিরোইন, ইত্যাদি। তবে এখানের উঠতি বয়সের যুবকরা বেশির ভাগই স্থানীয়ভাবে তৈরী ঝাঁকির পিছনে ছুটছে। ঝাঁকি ভয়াবহ ভাবে বিস্তার লাভ করেছে উপজেলার সর্বত্র। বিভিন্ন ধরনের কাশের  সিরাপের সংক্সেগ ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তৈরী করা হয় এ নেশদ্রব্য। ঝাঁকির তৈরীর সব দ্রব্যই পাওয়া যায় হাতের নাগালে। দামও কম।  যে কোন ওষুধের দোকান থেকে ৪০/৫০টাকায় একটি কাশির সিরাপ ও ৫/১০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ৮/১০টি ঘুমের ওষধ ক্রয় করে তা ওই কাশির সিরাপের মধ্যে মিশিয়ে  ভাল ভাবে ঝাকিয়ে তৈরি করা হয় এ নেশা দ্রুব। তাই এর নাম দেয়া হয়েছে ঝাকানি। এখানে ফেনসিডিল, হিরোইনের অনেক দাম। তবে সহজেই পাওয়া যায় ইয়াবা, গাঁজা-মদ । স্থানীয় ভাবে ঝাকি তৈরি করতে কম খরচ হওয়ায় এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ উপজেলায় ইয়াবা ট্যাবলেটৈরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে যুব সমাজের মধ্যে। ইয়াবা আকারে ছোট হওয়ায় সহজে বহন করা যায়। এ কারণে অন্য মাদকের তুলনায় ইয়াবা সেবনকারী ও বিক্রেতারা খুব সহজে নিরাপদে সেবন ও বিক্রয় করতে পারেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পরার প্রবনতা কম বলে খুব সহজেই বিক্রি করা যায় যেখানে সেখানে বসেই। যারা ইয়াবা সেবন করেন তারাই আবার বিক্রয়ের সাথে জড়িত। আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য সাংকেতিক ভাবে এর নাম দেওয়া হয়েছে বাবা। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন রকম নামে ডাকা হয়। একটি নির্ভর যোগ্য সূত্রে জানাগেছে, ফেনসিডিল, ইয়াবা, ভারতীয় মদ, বার্মিজ মদ, হেরোইন, ও গাঁজা সড়ক পথে চট্টগ্রামের ও কক্সবাজার থেকে ভোলা নিয়ে আসা হয় । তারপর সেখান থেকে নৌ-পথে বাউফলের বিভিন্ন পয়েন্টে যেমন, কালাইয়া বাজার, ধুলিয়া লঞ্চঘাট, বগা লঞ্চ ঘাট, নিমদী লঞ্চ ঘাট থেকে পৌছে দেওয়া হয়। এর পর এসব স্পট থেকে এজেন্টদের মাধ্যমে মাদক দ্রব্য ছড়িয়ে দেয়া হয় উপজেলার সবত্র। আবার ঢাকা থেকে লঞ্চ যোগে সরাসরি এসব মাদক দ্রব বাউফলে নিয়ে আসা হয়। মাদক বিক্রেতাদের সাথে ঢাকা-বাউফলগামী লঞ্চগুলোর স্টাফদের সাথে রয়েছে বিশেষ  সখ্যতা। তাদের মাধ্যমেও এসব মাদক দ্রব অতি নিরাপদে নিদৃষ্ট যায়গায় পৌঁছে দেয়া হয়। বাউফল শহরের কাগজির পুলের বৈশাখী সিনেমা হলের পিছন, বাস স্ট্যান্ড, বাউফল কলেজের পরিত্যাক্ত টিন সেট ভবন, কলেজের ব্রীজ, লিচু তলার পরিত্যাক্ত মাঠ, গোলাবাড়ীর ব্রীজ, মুসলিম পাড়ার নীল ক্ষেত রোড, বাউফল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছন ও অডিটরিয়াম, রেজিস্ট্রি আফিসের পিছন এলাকা, মহিলা কলেজ, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, ভূমি অফিস এলাকা, পুরাতন বিদ্যুৎ অফিস, গালর্স স্কুলের পিছনে সাহা পাড়া, বাংলালিংক টাওয়ার এলাকা, পোষ্ট অফিসের সামনে, প্রানি সম্পদ অফিস সড়ক, হাসপাতালের পিছনে পুকুর পাড়, পন্ডিত বাড়ির পুকুর পাড়, কালি মন্দির এলাকায় এবং উপজেলার পিছনের সড়ক ও এমপির ব্রীজ এলাকাগুলোতে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত চলে মাদক সেবন। চলতি বছরে গাঁজা ও বিভিন্ন মাদক দ্রব বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালত ১৫/২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিলেও তারা কয়েক দিন জেলখেটে পরে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে তারা বেড়িয়ে এসে পুনরায় এর সাথে জড়ি পরছে। কার্যত মাদক দ্রব নিয়ন্ত্রনে প্রশাসনের কার্যকর কোন ভূমিকা  না থাকায় মাদক বিক্রেতা ও মাদক সেবিদের দখলে চলে যাচ্ছে বাউফল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top