সকল মেনু

তত্ত্বাবধায়ক ও সর্বদলীয় দু’য়ের সমন্বয়ে সরকার গঠনের প্রস্তাব সংসদে

49463_49457_sanshod   আছাদুজ্জামান , হটনিউজ২৪বিডি.কম, ঢাকা, ৪ নভেম্বর  :  বিরোধী দল চাইলে তাদের প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত সর্বদলীয় সরকার এই দু’য়ের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা। তারা বলেছেন, এটি হলে দেশ অনিবার্য সংঘাত থেকেও রেহাই পাবে। তবে এজন্য হরতাল প্রত্যাহার করে সংসদে এসে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সরকারকে সহায়তার জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র এমপিরা। তারা বলেন, হরতাল গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সেই হরতাল যদি হয় অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য তখন তা আর গণতান্ত্রিক থাকে না। সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৬০ ঘন্টার হরতালের প্রথম দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে তারা এসব কথা বলেন। পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সূত্রপাত করেন ক্ষমতাসীন দলের সদস্য এডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। এরপর পর্যায়ক্রমে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, চিফ হুইপ উপাধক্ষ্য আব্দুস শহীদ, জাসদের কার্যকরি সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু। বিরোধী দলকে হরতাল প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মন নিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে ফোন করেছিলেন। বিরোধী দলীয় নেত্রীর দেয়া দুই দিনের আল্টিমেটামের মধ্যেই ফোন করেছেন। হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তিনি হরতাল প্রত্যাহার করলেন না। আলোচনার মন-মানসিকতা থাকলে হরতাল প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসুন।

১৮ দলীয় জোটের হরতাল প্রসঙ্গে তোফায়েল বলেন, আমরা কি রাজনীতি করছি যে আমাদের রাজনীতির হাত থেকে নিরীহ শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। আমরা কি জনগণের রাজনীতি করি ? দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারছে না। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন’র একটি সংবাদের উদ্বৃতি দিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ম-লীর এ সদস্য বলেন, ২০০৯ সালে ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জড়িত। গোয়েন্দা সংস্থাটি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও বিডিআর’র সাবেক এক মহাপরিচালকের সহায়তায় এই হত্যাকা-টি ঘটায়। তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রের মূল টার্গেট ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৪ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন। কিন্তু ঐদিন বিদ্রোহীরা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র বের করতে না পারায় শেখ হাসিনা বেঁচে যান। এর পরবর্তীতে তাদের এই ষড়যন্ত্রের শিকার হন নিরীহ ৫৭ মেধাবী সেনা কর্মকর্তা। দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিরোধী দলের দাবি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আমাদের দাবি  অন্তর্বর্তীকালিন সরকার। আমরা বার বার বলেছি আপনাদের যে যে দাবি আছে তা নিয়ে সংসদে আসুন, আলোচনা হোক। সংসদের মতো এতো বড় আলোচনার জায়গা আর কি হতে পারে ?

তিনি বলেন, সংসদে এসে আপনারা আপনাদের প্রস্তাব দিন, সংসদে সকল এমপির অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি আলোচনা হোক। তারপরও যদি বিধি অনুযায়ি আপনাদের প্রস্তাব পাস না হয়, তখন একটি সংসদীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমেও বিষয়টি সমাধান করা যায়। আপনি (খালেদা জিয়া) যদি চান স্পিকারের সভাপতিত্বে একটি কমিটি করে সেখানে আলোচনা করে আমরা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি। যদি সংসদেও না চান তাহলে আসুন অন্য কোথাও আমরা আলোচনা করতে পারি। আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের দাবি অনুযায়ি একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আমাদের দাবি অনুযায়ি সর্বদলীয় সরকার এই দু’য়ের সমন্বয়ে একটি সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা সম্ভব। যে সরকার আগামী নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পারে। বিরোধী দলীয় নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী ফোন করা প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত বলেন, প্রধানমন্ত্রী গণতান্ত্রিক ও জনগণের ভালোর কথা চিন্তা করে একটি আলোচনার জন্য বিরোধী দলীয় নেত্রীকে ফোন করেন। কিন্তু বার বার বিরোধী দলীয় নেত্রী লাল ফোনে ফোন করেও তাকে পাওয়া গেলো না। পরে জানতে পারলাম তিনি রেস্টে আছেন। পরে যখন তাকে পাওয়া গেলো তখন জানানো হলো একটু সময় লাগবে ফোনে কথা বলার জন্য তাকে রেডি হতে হবে। আমরা জানিনা ফোনে কথা বলার জন্য রেডি হওয়ার কি আছে। এর পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধী দলীয় নেত্রী যে ভাষায় কথা বলেছেন তা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top