সকল মেনু

কুইক রেন্টালের মেয়াদ বাড়াতে তোড়জোড়

xpower,P20plant20131104170530.jpg.pagespeed.ic.Vo6keiuK_2 আফিফা জামান, ঢাকা, ৪ নভেম্বর:  বড় ও মাঝারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নির্মাণে যথাযথ অগ্রগতি না হওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় নবায়ন করা হচ্ছে ভাড়া ভিত্তিক (রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল) বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো। এজন্যে বর্তমান সরকারের মেয়াদেই নবায়নের কাজ শেষ করতে চান কেন্দ্রগুলোর মালিকরা।

বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র হটনিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবনায় সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অনুমোদনের পর বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে কার্যকর কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তালিকা দেয়ার জন্য চিঠিও দেয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, সবগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হবে না। তবে যেগুলো বাড়ানো হবে তার মেয়াদ আগামী ২০২০ সাল পর্যন্ত হতে পারে। ইতোমধ্যে ডজন খানেক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিক তাদের কেন্দ্রগুলো নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদই তা বাড়িয়ে নিতে তারা রীতিমতো জোর তদবিরও চালাচ্ছেন বলে ঐ কর্মকর্তা জানান।

ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মেয়াদ বাড়াতে গত এপ্রিলে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্তি সচিব মোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠণ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ। ওই কমিটি সবকিছু মূল্যায়ন করে ৮ থেকে ১০টি  বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে নবায়নের উপযোগী বলে সুপারিশ করছে বলে জানা গেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্তি সচিব মোফাজ্জল হোসেন রাইজিংবিডিকে জানান, “কমিটি তাদের কাজ করছে। সবকিছু যাচাই বাছাই করেই প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। তবে এখনও কোন কিছুই চুড়ান্ত করা হয়নি।”

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিপি) সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊধ্বর্তন এক কর্মকর্তা জানান, বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর যথাযথ অগ্রগতি না হওয়ায় আইপিপি’র মাধ্যমে কুইক রেন্টালগুলোর সময় বাড়ানো হচ্ছে। এখন কোন কোন ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হবে, কত দিনের জন্য বাড়বে, ইউনিট প্রতি দাম কত হবে এসব বিষয়ে কাজ করছে কমিটি। কেন্দ্রগুলোর যন্ত্রাংশ ও সক্ষমতাসহ সার্বিক দিক যাচাই বাছাই করেই তালিকা তৈরি করছে কমিটি।

এ প্রসঙ্গে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. ম তামিম রাইজিংবিডিকে জানান,পরিকল্পনা অনুযায়ী বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সময় মতো আসতে না পারা এবং কাজের ধীরগতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখনই সরকারকে মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর দিকে নজর দিতে হবে।

খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে বিনা দরপত্রে স্বল্প মেয়াদের জন্য অনুমোদন দেয় সরকার। এর মধ্যে রয়েছে রেন্টাল ৩টি এবং কুইকরেন্টাল ১৭টি। কুইকরেন্টাল কেন্দ্রগুলোর মেয়াদ ৩ বছর আর রেন্টালের মেয়াদ ৫ বছর। এর মধ্যে অধিকাংশ কেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার দ্বারপ্রন্তে রয়েছে।

ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য আবেদন করেছে কোম্পানিগুলো। তবে শুরুতে এগুলোর মেয়াদ আর বৃদ্ধি হবে না বলা হলেও এখন তা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থাৎ ২০২০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য আইপিপিতে রূপান্তর করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমত উল্লাহ রাইজিংবিডিকে জানান, তেলভিত্তিক এসব প্রকল্পে বিপুল অংকের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সরকারকে। সাধারাণত স্বল্প মেয়াদের জন্য প্রজোয্য এসব প্রকল্প। কেননা যে দামে তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা হয় তাতে মেয়াদান্তে ওইসব প্রকল্পের বিনিয়োগসহ মুনাফা উঠে আসে। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো স্থাপন করা হয়েছিল সরকারি জমিতে। এ ক্ষেত্রে দুই রকমের চুক্তি হয়ে থাকে, প্রথমত মেয়াদ শেষে প্রকল্পের স্থাপনা সরিয়ে জায়গা খালি করে দেয়া, দ্বিতীয়ত নাম মাত্র মূল্যে সরকারের কাছে ওই প্রকল্প হস্তান্তর করা।

তিনি বলেন, “এখন এসব প্রকল্প নবায়ন না করে সরকার নিজেই পরিচালনা করতে পারে। অথচ তা না করে কেবলমাত্র অর্থ লুটপাটের জন্য নবায়ন করা হচ্ছে ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি হচ্ছে অর্থনীতিতে ভর্তুকির চাপ।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top