সকল মেনু

নির্দলীয় সরকার ছাড়া এদেশে নির্বাচন হবে না : বিএনপি

ঢাকা, ৩১ অক্টোবর : নির্দলীয় সরকার ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, এদেশের মানুষ সে নির্বাচন হতে দেবেনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর।
49105_888888
বৃহস্পতিবার বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ১৮ দলের আন্দোলনে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর দ্বারা জোটের  নেতা-কর্মী হতাহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বেলন।

এসময় তিনি ১৮ দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি ও  মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী শনিবার সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এদেশের ৯০ ভাগ মানুষের দাবি নির্দলীয় তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার মুখে সংলাপ-সমঝোতার কথা বলেছে, আসলে তারা সংলাপ-সমঝোতা চায়না। তারা সংলাপের নামে নাটক করছেন।

ফোনালাপ প্রকাশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব কথাপোকথন জনসম্মুখে প্রকাশ করা যায়না। এটা সম্পন্ন আইন বিরোধী। ফোনালাপ প্রকাশ করে জনগনের উপকরেছেন, ফোনালাপের মাধ্যমে দেশবাসী যেনে গেছেন বিরোধী দলীয় নেত্রী জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কি রকম  আপোসহীন ।

তথ্যমন্ত্রী ইনুকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, আপনি একদিন বলেছিলেন আমাদের কাছে তথ্য আছে তা প্রকাশ করা হবে। ফোনালাপ প্রকাশ করে ভালই করেছেন, কার উপকার করেছেন সরকারের, নাকি জনগণের?

নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে মির্জা আলমগীর বলেন, দয়া করে আপত্তিকর আরপিও তৈরী করে বিতর্কিত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন না। তাহলে দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবেন না। তিনি আরপিও আচরণ বিধি পকেটে রাখার পরামর্শ দেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, গত ২৭,২৮,২৯ অক্টোবর হরতালের মাধ্যমে দেশে গণঅভ্যূত্থান ঘটেছে, তত্ত্ববধায়ক সরকারের দাবিতে সারা দেশের মুক্তিকামী জনগণ রাজপথে নেমে এসছে। আগামী দিনে ১৮ দলীয় জোটের কর্মসূচিতে ঢাকাবাসীকে রাজপথে নেমে আসার আহবান জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আপনারা বাকশালী কায়দায় নির্বাচন করে আবারো ক্ষমতায় আসবেন তা আজকের বাংলাদেশে হবে না। দেশের ৯০ভাগ মানুষ আমাদের সাথে রয়েছে, তাই আপনাদের সে স্বপ্ন বাস্তাবয়ন হবে না।

প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা, জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা দলীয় কর্মীর ভূমিকা পালন করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যথায় দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আমরা বিগত সময়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু সরকার হামলা, গুলি চালিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে দমিয়ে রেখে একদলীয় শাসক কায়েমের চেষ্টা চালাচ্ছে। যতই চেষ্টা করুক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আদায় করে প্রমাণ করা হবে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শূণ্যের কোঠায় নেমে এসছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, দেশের মাটিতে যে নির্বাচন হবে সেটা হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। অন্যথায় দেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, ৩ দিনের হরতালে সরকার ভয় পেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে পিছিয়ে সর্বদলীয় সরকার ব্যবস্থায় এসে পৌঁছেছে।

ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, তত্তা্ববধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ ১শ ৭৩ দিন হরতাল দিয়েছিল, কিন্তু এখন বিরোধী দলের আন্দোলনে পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে। শেখ হাসিনা জানেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় থাকলে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।

সাবেক স্পীকার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, একদিন আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা দাবি করেছিল। আমরা মন পরিস্কার রেখে তাদের দাবি মেনে নিয়েছিলাম। আমি তখন আইনমন্ত্রী রাত জেগে কাজ করে এ ব্যবস্থা বহাল করেছিলাম।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেন, আপনারা (শেখ হাসিনা) মুক্তযুদ্ধের চেতনার শক্তি বলে দাবি করেন। কিন্তু ’৭৫ সালে মুক্তিযুদ্ধের সব চেতনা ধ্বংস করে বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল, পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জনগণের সে চেতনাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এত বছর পরও আপনাদের বাকশালী নেশা যায়নি।

মির্জা আব্বাস বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে দাবি আওয়ামী লীগ প্রথম উত্থাপন করেছিল, এখন ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য এ ব্যবস্থা বাতিল করেছে। কিন্তু জনগণ তাদের এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করেছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। সুতরাং এ ব্যবস্থা তার নিজ উদ্যোগেই বহাল করতে হবে।

জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, আমি বক্তব্য দিতে আসিনি আমি এসেছি শেখ হাসিনাকে সমবেদনা জানাতে। কারণ তিনি কানে কম শোনেন, চোখে কম দেখেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এক ধমকে তার জবান বন্ধ হয়ে গেছে। সময় আসন্ন শেখ হাসিনা ও হিন্দুস্থানের দালালদের এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে আত্মসমার্পন করতে হবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আজকের (বৃহস্পতিবার) সমাবেশ প্রমাণ করে ১৮ দলের ৬০ ঘন্টার হরতাল সফল হয়েছে।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, তিন দিনের হরতালে সারা দেশের জনগণ অভ্যুত্থান সৃষ্টি করেছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে।

তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ শেখ হাসিনার নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করা হরেছে। শেখ হাসিনার হাত রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। এ রক্তের ঋণ তাকে শোধ করতে হবে।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনার পতনের জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান ঘটানো হবে।

বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আজ ব্যাংক ফাঁকা, হাজার হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছেন, ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীসহ দেশের বুদ্ধিজীবীদের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছেন, আমারা যদি একবার প্রতিরোধ গড়ে তুলি তাহলে আপনারা পালানোর পথ থাকবে না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা জয়ের কাছকাছি এসে গেছি, হাসিনার সাথে আমাদের ব্যাক্তিগত শত্রুতা নেই। জাতির সাথে বেঈমানী করায় তার পতন হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্বে করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top