সকল মেনু

আমদানি-রফতানি নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা

xPort20131027124447.jpg.pagespeed.ic.3kTCuKNw_4 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম, ২৭ অক্টোবর :  বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালে দেশের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পণ্য পরিবহনব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে তৈরি পোশাকশিল্প ও নিত্যপণ্যের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। দেশের উন্নয়নের ধারা সমুন্নত রাখতে এ কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। ব্যবসায়ীরা জানান, হরতালের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রফতানির অপেক্ষায় থাকা কারখানার উত্পাদিত পণ্য জাহাজীকরণ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আবার আমদানি করা পণ্য জাহাজ থেকে নামানোর পর সময়মতো কারখানায় না পৌঁছলে শিল্প-কারখানায় উত্পাদন ব্যাহত হবে। উত্পাদিত পণ্য সময়মতো ক্রেতার কাছে না পৌঁছলে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে শিল্পমালিকদের।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘টানা তিন দিনের এ হরতাল কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক আমদানি-রফতানি বাণিজ্য কার্যক্রম ব্যাহত হবে, যা শিল্পের কাঁচামালের দাম বাড়িয়ে দেবে। এ ধরনের কর্মসূচি নিঃসন্দেহে শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। বন্দর থেকে পণ্য খালাস ব্যাহত হলে শেষ পর্যন্ত এর ভুক্তভোগী হবে ক্রেতারাই।’
এদিকে দেশের সার্বিক উন্নয়নের ধারা সমুন্নত রাখতে হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। শনিবার সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেশকে এক চরম অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী তিন দিন টানা হরতালে এফবিসিসিআই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
আন্তঃজেলা মালপত্র পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার পণ্যবাহী গাড়ি যায়। এসব গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দর ও শিল্প-কারখানা থেকে পণ্য পরিবহন করে। আবার ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে রফতানি বোঝাই পণ্য আসে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে। হরতালে গাড়িতে আগুন ও ভাংচুরের কারণে মালিকরা গাড়ি বের করার ঝুঁকি নিতে চান না। হরতাল-পরবর্তী সময়ে পরিবহনের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এর ভাড়াও বেড়ে যায়।
আন্তঃজেলা পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি মনির আহমদ বলেন, ‘হরতাল-সহিংসতায় ঝুঁকি নিতে চায় না কেউ। পিকেটিংয়ের কবলে পড়লে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির দায়-দায়িত্ব কেউ নেয় না।’
তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতারা জানান, টানা ৬০ ঘণ্টা হরতালে তৈরি পোশাক উত্পাদন, পরিবহন ও রফতানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরই মধ্যে পোশাক বিদেশে পাঠানোর জন্য জাহাজীকরণ নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে বিদেশী ক্রেতার কাছে তৈরি পোশাক পৌঁছাতে যারা আকাশপথ ব্যবহার করবেন, তাদের কয়েক কোটি টাকা পর্যন্ত বিমানভাড়া গুনতে হবে।
সংগঠনটির সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হরতালে পিকেটিংয়ের কবল থেকে জরুরি রফতানিকাজে ব্যবহূত গাড়িও বাদ পড়ছে না। এজন্য ঝুঁকি নিয়ে কেউ ডিপোয় পণ্য পাঠাতে আগ্রহী হয় না। ফলে সময়মতো জাহাজীকরণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে রফতানিকারকদের মধ্যে।
এদিকে টানা হরতালে আমদানি করা খাদ্যপণ্যের সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়ে খুচরা ও পাইকারি বাজারে প্রভাব পড়বে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, ‘টানা এ হরতাল খাতুনগঞ্জের ব্যবসা-বাণিজ্য চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এখানে প্রতি দিন শত শত ট্রাক পণ্য নিয়ে আসা-যাওয়া করে। পরিবহনব্যবস্থা ভেঙে গিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top