সকল মেনু

১৮ দলের সমাবেশ আবার দুই দিনের আল্টিমেটাম এবং তিন দিনের হরতাল

image_51080_0 নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা:  নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে নিজের দেয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসতে সরকারকে আবারও দুইদিনের আল্টিমেটাম দিলেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। এর মধ্যে সরকার আলোচনায় না গেলে রোববার ভোর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা হরতাল ডেকেছেন তিনি। বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৮ দলীয় জোটের জনসভায় খালেদা জিয়া এই আহ্বান বলেন। এই হরতালকে প্রাথমিক কর্মসূচি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি মানতে বর্তমান সরকারকে এই দ্বিতীয়বারের মতো আল্টিমেটাম দিলেন খালেদা জিয়া। হেফাজতে ইসলামের রাজধানী অবরোধের আগের দিন গত ৪ মে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তবে রাজধানী থেকে হেফাজত কর্মীরা হটে যেতে বাধ্য হওয়ার পর এ নিয়ে আর কিছু বলেননি তিনি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে আবারও সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়ে সরকারের আলোচনায় বসার কোনো ইচ্ছা আছে কি না সে প্রশ্নও তোলেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের ফর্মুলা গ্রহণ করতে হবে। বলেছেন পার্লামেন্টে গিয়ে বলতে, আমরা তাই করেছি। আপনাদের দলের সেক্রেটারি জেনারেলকে চিঠি দিয়েছি। সদিচ্ছা থাকলে আপনারা এর মধ্যে আলোচনায় বসে যেতেন’।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনি সরকারি জনগণের পয়সা খরচ করে নৌকায় ভোট চান। কিন্তু খেয়াল করে দেখেননি, নৌকার তলা ফুটো হয়ে গেছে। যাদেরকে নিয়ে চলেছেন তারা লাফ দিয়ে পড়ছে। আমি বন্ধু হিসেবে বলি, আসুন সংবিধান সংশোধন করি। খুব বেশি পাল্টাতে হবে না’।

বর্তমান সরকার ২৭ অক্টোবরের পর অবৈধ হয়ে যাবে বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়া। আগের দিন অবশ্য তিনি শুক্রবার থেকে সরকার অবৈধ হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন। আরও দুদিন কেন সরকার বৈধ থাকবে, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু বলেননি খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া তার বক্তব্য শুরুর পর পরই জনসভার সামনে থাকা জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা হরতাল দেয়ার দাবি জানাতে থাকে। তাদেরকে একটু অপেক্ষা করতে বলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে, কর্মসূচি দেয়া হবে বক্তব্যের শেষে’ পরে শেষ বেলায় তিনি এই হরতালের কর্মসূচি দেন।

বিরোধীদলের ডাকা হরতালে বাধা না দিতে পুলিশ ও র‌্যাবকে আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘২৭ তারিখ থেকে এই সরকার অবৈধ। পুলিশকে বলবো অন্যায়ভাবে গুলি করবেন না। আপনারা নিজেরা ভাংচুর করে অন্যের ওপর দোষ চাপাবেন না।…এই সরকার অবৈধ হয়ে গেছে। অবৈধ সরকারকে সহযোগিতা করা মানে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া’ হরতালে ছেলে-মেয়েসহ নারীদেরকে নেমে আসার আহ্বানও জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

বর্তমান সরকার গত পাঁচ বছরে দেশে কোনো উন্নয়ন করেনি দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, এ জন্যই সরকার নিজেদের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু ১৮ দল তা হতে দেবে না।

সরকারকে দ্রুত আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেত্রী বলেন, ‘আমি যে ফর্মুলা দিয়েছি তা মানতে হবে’ তিনি বলেন, ‘সংগ্রাম এবং আলোচনা চলবে। আর যদি আলোচনা না করেন, তাহলে আমাদের আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে হবে’।

জনগণের সমর্থন হারিয়ে সরকার পুলিশ, র‌্যাব-বিজিবির ওপর নির্ভর করে দেশ চালাতে চায় বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া। জনগণকে ভয় পেয়ে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশে বাধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে বাধা দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছে বলে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকার নিজেই সারাদেশকে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এই সরকার আর দুইদিন পরে অবৈধ হয়ে যাবে। যদি অবৈধ সরকারে থেকে জনগণকে অবরুদ্ধ করেন, তাহলে আমরা অবরোধ করলে বাধা দেয়ার অভধিকার থাকবে না’।

বিএনপি ক্ষমতা নয়, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছে বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়া। নির্বাচন কমিশন একদলীয় নির্বাচন করার চেষ্টা করলে তার ফল শুভ হবে না বলেও হুঁশিয়ার করে দেন বিরোধীদলীয় নেতা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top