সকল মেনু

দিনাজপুরের সালমা খাতুন কি ঈদ করতে পারবে?

মো.নুরুন্নবী বাবু.দিনাজপুর প্রতিনিধি ১৪ অক্টোবার ২০১৩: মানুষ যখন শারদীয় দুর্গোৎসব ও ঈদ-উল আযহাকে ঘিরে আনন্দঘন পরিবেশে কেনাকাটা, বেচা-কেনা ও প্রতিমা দর্শনে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। ঠিক সেই সময়ে দেশের এক শ্রেণীর অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে পৌছায়নি এসব উৎসবের কোন বিষয়।

DSC03223 copy

তেমনি বোচাগঞ্জ উপজেলার শাহাপাড়া ধনতলা হঠাৎপাড়া এলাকার সালমা খাতুন (৫০) ও তার একমাত্র বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তান সালামকে নিয়ে রোববার দুপুর ১২টায় দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সম্মুখে গাছের নিচে মাটিতে বসে মা সালমা খাতুন গালে হাত দিয়ে অবাক দৃষ্টিতে বসে থাকে। এ অবস্থা দেখে আমাদের প্রতিনিধি সালমা খাতুনের সাথে কথা বলতে গেলে ভয়ে দাড়িয়ে উঠার চেষ্টা করে কিন্তু দাড়িয়ে উঠারও ক্ষমতা তার নেই। কারণ দীর্ঘদিন ধরে অভাবের কারণে তাকে ডায়াবেটিক, টাইফয়েড, হার্ট এ্যাটার্কসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত করে বসেছে।

 

বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক, পেশাজীবী, সুশীল সমাজের চোখ সালমা খাতুনের দিকে পড়া তো দুরের কথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সতীশ চন্দ্র রায় এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর ২ আসনের সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর চোখ কিভাবে পড়বে। কিন্তু সতীশ চন্দ্র রায় ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বোচাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।

 

আর এই হৃদয় বিদারক মাতা সন্তানের দৃশ্য দেখে যে কোন মানুষের মনের মধ্যে বয়ে যেতে পারে কষ্টের ঝড়। সালমা খাতুন জানালো, আল্লাহ শুধু তাকে ও তার সন্তান সালামকে এ পৃথিবীতে বাচিয়ে রেখেছেন। কষ্ট করে কইতে হয় আল্লাহ আর কোন আমাদের সুখের কারণ দেয়নি। কি যে পাপ করছিলাম যে এইভাবে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। বর্ষার মৌসুম চলে গেল সারাটা বর্ষা মৌসুমে ঘরের বৃষ্টি পানি পড়েছে। তাই রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারেনি। অভাবের কারণে খাদ্য তো নেই মানুষের বাড়ীতে গেলে দয়া করে একটু ঝুটা খাদ্য খেতে দেয়। তাতেও আমার কোন ক্ষোভ নেই। তারা খাইতে দেয় তো। কিন্তু মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, পৌর চেয়ারম্যান, মেম্বাররা কেউ খবর নেয় না আমার। আমার বয়স ৫০ তাই তারা আমাকে বয়স্কভাতা দেয়না। না দেক বিধবা ভাতা তো দিতে পারে তাও দেয় না। ঈদ আর ২ দিন বাকী কি যে করমু তাও জানি না। ঈদের যে আনন্দ কি তা আমি কখনো মালুম করতে পারেনি। আমার স্বামী মারা গেছে ২০ বছর আগে। তাই এখন ঘরের চাল ছাড়া আমার মাথার উপর আর কোন ছায়া নেই। এই ভাবে যে কতদিন বাচতে হইবো তা আল্লাহ জানে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top