সকল মেনু

চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি বন সার্কেলে রদবদল

 xPicture-001320131012223825.jpg.pagespeed.ic.3QMQSwYyak চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, ১৩ অক্টোবর:  দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন এলাকা চট্টগ্রাম বন সার্কেলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে। আজ রোববার সন্ধ্যার মধ্যেই এই রদবদলের দাপ্তরিক আদেশ জারি হতে পারে বলে পরিবেশ ও বনমন্ত্রনালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, বন বিভাগের বিভিন্ন অনিয়ম দূর্ণীতি রোধে এবং দেশের বনজসম্পদের সর্বোচ্চ সুরক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে যাচ্ছে বন মন্ত্রনালয়। এর ধারাবাহিকতায় অদক্ষ ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি বন বিভাগে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষ, সৎ কর্মকর্তা হিসেবে স্বীকৃত ও দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের যোগ্যস্থানে পদায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন সার্কেলের অধীন, চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগ, বান্দরবান বন বিভাগ, কক্সবাজার দক্ষিন বন বিভাগ, চট্টগ্রাম উপকুলীয় বন বিভাগ, রাঙ্গামাটি সার্কেলের ঝুম নিয়ন্ত্রন বন বিভাগ, খাগড়াছড়ি বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) পর্যায়ে রদ বদলের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার দক্ষিন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণ দাশ’র বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্ণীতির অভিযোগ উঠায় মন্ত্রনালয় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে যাচ্ছে। জানা গেছে গত প্রায় ৩ বছর ধরে কক্সবাজার দক্ষিন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন কালে উক্ত বিভাগের কয়েক শ` কোটি টাকা মুল্যের বনের জায়গা অবৈধ দখল কিংবা বেহাত হয়ে যায়।

বিশেষ করে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশ্ববর্তী বিপুল পরিমাণ বনভূমি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভুমি দস্যূদের কাছে হস্তান্তর করেন ডিএফও বিপুল কৃষ্ণ দাশ। এছাড়া তার দায়িত্বপালন কালে কক্সবাজার দক্ষিনের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের শত শত কাঠ পাচার হয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ডিএফও বিপুল কৃষ্ণ দাশ গত বিএনপি জোট সরকারের সময় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) পদে দায়িত্বপালনকালে তৎকালীন সময়ে রাঙ্গুনিয়ার বিএনপি’র সাংসদ ও বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর খামার বাড়িতে বন বিভাগের টাকায় বাগান করে দিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে বৃক্ষ রোপনে জাতীয় পুরস্কার পাইয়ে দিয়েছিলেন।গত তিন বছর ধরে আলোচিত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডিএফও বিপুল কৃষ্ণ দাশের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় উক্ত কর্মকর্তাকে কক্সবাজার দক্ষিন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে উক্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রামের গুরুত্বপুর্ণ বন বিভাগ চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দায়িত্ব পেতে নানাভাবে তদবির ও প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।এদিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় পরিবেশ ও বনমন্ত্রনালয়ের অধীন নির্মানাধীন দেশের একমাত্র শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারী এন্ড রিক্রিয়েশন পার্ক নির্মাণ কার্যক্রম যথাসময়ে শেষ করতে না পারায়, কর্তব্যে অবহেলার দায়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগীয় কর্মকর্তা বখতেয়ার নুর সিদ্দিকীকে সরিয়ে দিয়ে চট্টগ্রাম ফরেস্ট কলেজে বদলী করা হতে পারে বলে জানা গেছে। অপরদিকে বন বিভাগের চৌকষ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত, ইকো ট্যুরিজম বিষয়ে আন্তর্জাতিক ডিগ্রিধারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনম আবদুল ওয়াদুদকে চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগ অথবা কক্সবাজার দক্ষিন বন বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। রদবদল হতে পারে চট্টগ্রাম বন সার্কেলের বন সংরক্ষকের সংযুক্ত কর্মকর্তা (ডিএফও) মোল্লা মিজানুর রহমানের পদেও। গত তিন বছর ধরে নানা হয়রানীর শিকার এই কর্মকর্তাকে তার দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ কোন বন বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। অপরদিকে জোত পারমিটের আড়ালে অবৈধ কাঠ পাচারসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত খাগড়াছড়ি বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহিরুল আলমকেও সরিয়ে দেয়া হতে পারে। এই কর্মকর্তার নিয়মিত বদলীয় সময় প্রায় এক বছর আগে অতিক্রম হলেও নানা তদবির করে জহিরুল আলম খাগড়াছড়ি বন বিভাগে বহাল ছিলেন এতদিন।নিয়মিত বদলীর আওতায় রদবদল হতে পারে রাঙ্গামাটি বন সার্কেলের ঝুম নিয়ন্ত্রন বন বিভাগ, চট্টগ্রাম উপকুলীয় বন বিভাগ, বগুরা সামাজিক বন বিভাগ, বান্দরবান বন বিভাগসহ বেশ কয়েকটি বন বিভাগে। এসব বদলী ও পদায়নের ক্ষেত্রে সৎ দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তাদের যথাযথ মুল্যায়ন করার পাশাপাশি অনিয়ম দুর্ণীতির সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হতে পারে।
আজ রোববার বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল হওয়ার সম্ভাবনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে শঙ্কা, আতঙ্ক ও টেনশন কাজ করছে বলে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

 

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top