সকল মেনু

সকল নেতাদের আয় বাড়ে, আর আমার কমে : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর: ক্ষমতায় থাকলে যে কারোরই আয়ের পরিমাণ বেড়ে যায় এমন সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আপনারা দুনিয়ার ইতিহাস দেখেন। আদিম যুগেও গোষ্ঠীর নেতাদের সম্পদ বেশি থাকতো। সকল নেতাদের আয় বাড়ে, আর আমার কমে। বেড়েছে তবে সেটা তুলনায় অত বাড়েনি।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের হলফনামা জনসমক্ষে প্রকাশ করা উচিত বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে যেসব নেতা, মন্ত্রী এবং এমপিরা তাদের আয়কর জমা দিয়েছেন তাদের আয়ের, উৎসের ব্যাপারে তদারকি ও অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এনবিআর-এর কাছে ২০১২-১৩ অর্থবছরের জন্য মোট ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫১ টাকার বিপরীতে ৮৪ হাজার ৪৩৬ টাকার আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

আট পৃষ্ঠার আয়কর রিটার্নের কাগজ দেখিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে সবারই উচিত প্রকাশ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া। নানা কারণে এবার বেশি দেরি হয়ে গেছে। অনলাইনে আয়কর জমা দেওয়ার অনেক সুবিধা আছে। এখনই আমাকে এনবিআর আয়কর রিটার্নের সার্টিফিকেট দিয়ে দিবে।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকেরই আয় অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে, এজন্য এনবিআর বা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো ব্যবস্থা বা তদারকি করবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, দুদক ইজ কম্পিটলি ইনডিপেনডেন্ট। কারো আয় অস্বাভাবিক হলে দুদক যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে। আমার মনে হয়, এনবিআর ইতোমধ্যেই সমস্ত ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছে।

মুহিত বলেন, অনেকেরই আয় বাড়তে পারে। এ ব্যাপারে নেতারা নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। অনেকেই বলছেন, তাদের ব্যবসা বেড়েছে।

আওয়ামী লীগ মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সকলেই তাদের সম্পদের ও আয়ের হিসাব জমা দিয়েছেন। যে কারো জানার ইচ্ছা থাকলে জানতে পারবেন।

আয়কর বিবরণীর হিসাব তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, আমার করযোগ্য আয়ের পরিমাণ হচ্ছে ১১ লাখ ৪১ হাজার ১৭৯ টাকা, করবহির্ভুত আয় ১৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৪ টাকা। আমার বেতনভাতা, সম্মানীও করযোগ্য। এছাড়া ৪৫ হাজার ডলারের কিছু বন্ড রয়েছে। আর বাৎসরিক পেনশন আছে ৭০ হাজার ১০ টাকার। গত বছরে আয় ছিলো ১ কোটি ৪৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০৫ টাকা। এবার সেটা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫১ টাকা। আয় বাড়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আমার ক্যাশ ইন হ্যান্ড (নগদ অর্থ) টাকা আছে মোট ৫০ লক্ষ টাকার মতো।

মহাজোট সরকারের সময় থেকে পাঁচ বছরে নিজের আয়ের হিসাব দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আরো জানান, ক্ষমতায় আসার সময় অর্থাৎ ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আমার আয় ছিলো ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এখন সেটা ৪৪ লাখ বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এ হিসোবে বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

এনবিআর-এর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এই সময়ে ১০ শতাংশ অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী জানান, লক্ষ্যমাত্রার নিচে অর্জিত হবে এটাই স্বাভাবিক। গত অর্থবছরে এনবিআর-এর গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছিলো ২৪ শতাংশ। এবার সেটা ১৬ শতাংশ হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। তবে এই মাসের পর সেটা আরো বাড়বে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top