সকল মেনু

পঁচা ইলিশের গন্ধে চাঁদপুরের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে

 শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: শত শত মণ পঁচা ইলিশের গন্ধে চাঁদপুরের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। গত ৫ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ শিকার বন্ধের সময় জেলেরা নদী ও সমুদ্র থেকে এসব ইলিশ শিকার করেছিল। কিন্তু তখন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান থাকায় এসব ইলিশ বিক্রি করতে পারেনি। পঁচা-গলা, বিবর্ণ হয়ে যাওয়া সেইসব ইলিশ এখন চাঁদপুরে এনে লবণজাত করা হচ্ছে। শত শত শ্রমিক দিনরাত একাকার করে ইলিশ লবণজাত করছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরুপ এইসব পঁচা ইলিশ বস্তায় ভরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ির জন্য। প্রশাসন,  নৌ-পুলিশ, কোষ্টগার্ড, মৎস্য বিভাগের চোখের সামনে এসব কর্মকান্ড চললেও কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। অথচ এইসব পঁচা ইলিশ খেয়ে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।  প্রজনন মৌসুমে ডিম পাড়ার জন্য লোনা পানি ছেড়ে মিঠা পানিতে আসা মা’ ইলিশ রক্ষায় সরকার ৫ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা নিষিদ্ধ করে। কিন্তু জেলেরা সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদী এবং সাগরে ইলিশ ধরা অব্যাহত রাখে। অনেক জেলে অভিযানের আগেই ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে চলে যায়। জেলেরা বলছেন, অভিযানের সময়টার কয়েকদিন ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছে তাদের জালে।  চাঁদপুরে ওই ১১ দিন জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশ, কোষ্ট গার্ড যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করায় শিকারকৃত মাছের এক হাজার ভাগের এক ভাগও আনতে পারেনি জেলেরা। যারা আনার চেষ্টা করেছে তাদের অনেকেই ধরাও খেয়েছে। হয়েছে জেল, জরিমানা। কিন্তু এই তৎপরতা সীমাবদ্ধ ছিল চাঁদপুর শহর লাগোয়া নদীতে। ওই সময়টিতে চাঁদপুরসহ নদী তীরবর্তী আশ-পাশের জেলাসমূহের বরফকলও বন্ধ রাখা হয়। ফলে শিকারকৃত হাজার হাজার টন ইলিশ ট্রলারে থেকে পঁচে-গলে বিবর্ণ হয়ে যায়। সেইসব ইলিশ শত শত ট্রলারে করে এখন চাঁদপুরে নিয়ে আসা হচ্ছে। এইসব পঁচা ইলিশ এখন চাঁদপুরের বড়ষ্টেশন মাছ ঘাটে এনে লবণজাত করা হচ্ছে। শত শত শ্রমিক দিনরাত এখন এই কাজ করে যাচ্ছে। মাছ ঘাটের সামনে সামিয়ানা টানিয়ে ইলিশ কাটা ও লবণ মাখা হচ্ছে। জেলেরা বলছে, তারা বহু মাছ নদীতে ফেলেও দিয়েছে। পঁচা এইসব ইলিশের গন্ধে বড়ষ্টেশন ও এর আশ-পাশের এলাকায় দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। বেশ কয়েকজন জেলে জানায়, তারা এখন মাছ কেনার মত লোক পাচ্ছেন না। ২০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে ২ থেকে ৩ লাখ টাকায়। জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইদ্রিস গাজী জানান,  তাদের মাথায় হাত পড়েছে। নীতিমালা না থাকা সত্ত্বেও জেলা প্রশাসন অভিযানের সময় বরফ কল বন্ধ রাখায় অন্যান্য মাছও পঁচেছে।     স্থানীয় মৎস্য বিভাগের লোকজনদের সামনে এভাবে অভিযানের সময় শিকার করে আনা ডিমওয়ালা ইলিশ লবণ মাখিয়ে সংরক্ষণ করা হলেও তারা কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। মৎস্য বিভাগের কোন কর্মকর্তাকেও এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top