সকল মেনু

ফারুকী খুনে ডাকাতি ছিল সাজানো নাটক

 নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী ফ্রন্টের নেতা এবং জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক মাওলানা শায়খ নূরুল ইসলাম ফারুকীকে হত্যা করতে আসা খুনিরা ডাকাতির নাটক সাজিয়েছিল বলে মনে করছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তাদের প্রাথমিক সন্দেহ, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে ইসলামি চেতনা ও রাজনৈতিক বিরোধের বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত এবং আর্থিক কোনো বিষয় এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে কি-না তাও খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা। তবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় এ উপস্থাপক হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তারা জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে হটনিউজ২৪বিডি.কমকে  জানিয়েছেন তেজগাঁও জোনের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।

অন্যদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফারুকীর ছেলে ফয়সাল ফারুকী বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় সাত-আটজনকে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তাতে হত্যার সম্ভাব্য কোনো কারণের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ডাকাতির কথাও বলা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, নগদ ২ লাখ টাকা, একটি ক্যামেরা, একটি টেপ এবং প্রায় সাড়ে ৫ ভরি স্বর্ণালংকারসহ আনুমানিক ৬ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে ঘটনার সময়ে। তবে মামলায় ডাকাতি ও হত্যার কথা বলা হলেও ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছে পুলিশ ও র‌্যাব। তারা মনে করছেন, ডাকাতির ঘটনা নিছক সাজানো নাটক। পুলিশ ইতিমধ্যে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার নাজমুল আলম বলেন, নূরুল ইসলাম ফারুকীর খুনিদের সম্পর্কে এখনো সঠিক ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে পরিবার ও বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে, ধর্মীয় আদর্শগত বিরোধের কারণেই পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে তদন্তে এ বিষয়টির পাশাপাশি পারিবারিক বিরোধ, হজে লোক পাঠানো নিয়ে লেনদেনসহ একাধিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত পরিচালক (এডিজি) কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, ঘটনার পরপরই র‌্যাবের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া না গেলেও ধর্মীয় মতাদর্শগত বিরোধের কারণেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। চূড়ান্ত মত দেওয়ার মতো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার
হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, আট মাস আগে রাজধানীর গোপীবাগে কথিত পীর লুৎফর রহমানসহ ছয় খুনের ঘটনার সঙ্গে ফারুকী হত্যাকাণ্ডের অনেকটা মিল আছে। দুটি খুনের ঘটনার ধরন প্রায় একই রকম। দুটি হত্যাকাণ্ডের পেছনে একই গোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি সন্দেহ করছেন।

তিনি বলেন, তদন্ত-সংশ্লিষ্টরাও ফারুকীর স্বজনদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। খুনিদের আচরণ ও কথাবার্তার মাধ্যমে কোনো ধারণা পাওয়া যায় কি না তা জানার চেষ্টা করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে তারা জানতে পেরেছেন, ফারুকীকে হত্যার আগে খুনিরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর ওপর নজরদারি করেছিল। পূর্বপরিচয়ের সূত্রেই বুধবার সহজেই বাসায় ঢোকে দুই যুবক। এরপর আরো কমপক্ষে আটজন বাসায় ঢোকার পর রাত ৯টার মধ্যে হত্যা মিশন সফল করে তারা পালিয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top