সকল মেনু

৬২ বছর ধরে ইমামতি করছেন মৌলভী আব্দুল হামিদ

 শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন কারেক্টরেট জামে মসজিদ। এ মসজিদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে চলছেন ক্বারী মৌলভী আব্দুল হামিদ। আশি ও নব্বইর দশকে তিনি ‘পাগড়ীওয়ালা’ হুজুর নামে শহরে পরিচিত ছিলেন। তাঁর কাঁধে সব সময় সাদা পাগড়ী ঝুলানো থাকতো। যা এখনো আছে। এ থেকেই তাঁর পাগড়ীওয়ালা হুজুর নামকরণ। একই মসজিদে তাঁর ইমামতির বয়স হচ্ছে ৬২ বছর।
একান্ত আলাপচারিতায় তিনি জানান, আমি কখনো কল্পনা করিনি একই মসজিদে এতো দীর্ঘ বছর যাবৎ থাকবো। মসজিদ আল্লাহর ঘর। আর এ মসজিদের খেদমতে আছি। সে সুযোগ আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন বিধায় এখনো আছি। ইমামতি করি এজন্য যে, মুসল্লিরা ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করে যে সাওয়াব পায় তার ডাবল সাওয়াব আল্লাহ ইমামকে দেন। আমি আখেরাতের ধনী হতে চাই। তাই এখন আর সংসারের তদারকি ভালো লাগে না। মসজিদে বেশি থাকলেই যেনো ভালো থাকি। কেননা মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আয়োজন আর মুসল্লিদের সাথে সাক্ষাৎ এটাই আমার বেশি ভালো লাগে।
জানা যায়, ১৯৫২ সালে ওই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রথমে এটি ছিলো পাঞ্জেগানা মসজিদ। তখন থেকে আঃ হামিদ হুজুর ওই মসজিদে ইমামতি করে আসছেন। পরে ১৯৬৫ সালে জুমা চালু হয়। তখন জুমার নামাজ পড়াতেন হাজীগঞ্জের মাওঃ আব্দুল মান্নান। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আর মাওঃ আব্দুল মান্নান সাহেবের খোঁজ মিলেনি। আর তাঁর অবর্তমানে আব্দুল হামিদ সাহেব দীর্ঘদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সাথে জুমার নামাজও পড়াতেন। মাঝে মাঝে ঈদের নামাজও পড়াতেন। বর্তমানে তিনি চোখে কম দেখেন বলে জুমার খুৎবার পড়া দেখেন না বিধায় এখন জুমার নামাজে ইমামতি করেন মাওঃ আবুল হাসেম। কিন্তু পেশ ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন মাওঃ আব্দুল হামিদই।
ক্বারী আব্দুল হামিদ কালেক্টরেট জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে দীর্ঘ বছর সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করায় সংবর্ধনা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন চাঁদপুরের এক সময়কার  জেলা প্রশাসক তাহেরুল ইসলাম। পরে তিনি চাঁদপুর থেকে বদলি হয়ে যাওয়ার কারণে তা থেমে যায়। এ ব্যাপারে অনেক মুসল্লি আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, ইমাম সাহেব বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা কখনো কোনো অন্যায় কাজে তাঁকে দেখিনি। তাঁকে সাদাসিধে চলাফেরা, স্পষ্ট তেলাওয়াত, গোলজামা ও পাগড়ি পরে নামাজ পড়াতেই দেখে আসছি।
উল্লেখ্য, মসজিদটি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠা হয়ে ৫ বার সংস্কার হয়। প্রথমে বর্তমান সদর হাসপাতালের পূর্ব উত্তর দিকে এক চালা টিনের ঘর ছিল, পরে স্থানান্তর হয়ে বর্তমান জায়গায় আসে ১৯৮২ সালে। ২০০৩ সালের বহুতল ভবনের উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুর রব হাওলাদার। যা এখন কালেক্টরেট জামে মসজিদ নামে পরিচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top