সকল মেনু

চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বেড়ি বাধ দখল হয়ে যাচ্ছে

শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে চাঁদপুর ইরিগ্রেশন প্রজেক্ট (সিআইপি) বেড়িবাঁধের সম্পত্তি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
জানা যায়, পাউবো’র কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বেড়িবাঁধের ভেতরের ও বাইরের জমি লীজের নামে দখলবাজদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। যার ফলে দখলবাজরা জমি দখল করে ১টি দোকান নির্মাণ করার নাম করে ৩-৪টি দোকান নির্মাণ করছে। এমনকি যে স্থানে দোকান নির্মাণ হচ্ছে ওই স্থানে থাকা ছোট-বড় মূল্যবান গাছ রাতের আঁধারে কেটে ফেলে দোকান নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। একদিকে সরকারি সম্পত্তি দখল অপরদিকে বনজ সম্পদ উজাড় করছে। ইতিমধ্যে ইচলী চৌরাস্তা হতে গল্লাক পর্যন্ত সড়কের পাশে ভূমি দখল করে বেশ ক’টি দোকান নির্মাণ করা হয়। দোকানের মালিকরা পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের ২-৩জন ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে এ কাজ করেছে বলে একটি সূত্র জানায়। পাউবোর সম্পত্তি দখল করার ব্যাপারে পাউবোর কর্মকর্তাদের সাথে যখনই যোগাযোগ করা হয় তখনই তারা বলে থাকেন ‘ মাত্র ভাই আপনার কাছ থেকে জানলাম । কী বলেন, এদের এতো বড় সাহস!’। মূল কথা হচ্ছে আমাদের জনবল সঙ্কট। আগামী মাসে জেলার আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে বিষয়টি আলোচনার আওতায় আনবো। যেভাবে সম্পদ রক্ষা করা যায় সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিতে নেবো।
জানা যায়, পাউবোর ক’জন কর্মকর্তাকে প্রায়ই মোটর সাইকেল ও সিএনজি স্কুটারযোগে সিআইপি সড়কের বিভিন্ন এলাকায় চলে যেতে দেখা যায়। যে সব স্থানে বাঁধের পাশে দোকান নির্মাণ করা হয় সে সব স্থানে তারা মোটর সাইকেল ও সিএনজি স্কুটার দাঁড় করিয়ে রেখে দখলবাজদের সাথে আড্ডা ও খোশগল্পে মেতে উঠেন। আর নিজেদের পকেট ভারী করে চাঁদপুরে চলে আসেন। সিআইপি বেড়িবাঁধের কোথাও না কোথাও প্রতিদিন ২-৩টি দখলের ঘটনা ঘটছে। অথচ কারো বিরুদ্ধে কখনো আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বেড়িবাঁধের কোনো কোনো স্থানে ২-৩ কিলোমিটারের মধ্যে থানার অবস্থান থাকায় পুলিশের সহযোগিতায় অবৈধ দখল ঠেকানো সম্ভব হলেও ওই দখল ঠেকাতে পাউবোর কর্মকর্তারা নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। যার ফলে প্রতিদিনই সরকারি সম্পদ বেদখল হচ্ছে এবং সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
গত প্রায় দুই মাস হবে সিআইপি বেড়িবাঁধের ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা ওয়াপদা অফিস এলাকায় পাউবোর কর্মকর্তাদের যোগসাজশে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে পাউবোর সম্পদ দখল করে মার্কেট নির্মাণের জন্য দেওয়াল উত্তোলন করা হয়। এমনকি একটি দোকান নির্মাণ করার জন্যে লীজ নিয়ে যতটুকু জায়গার প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি জমি দখল করে দখলবাজরা ২-৩টি দোকান নির্মাণ করছে। সরকারি সম্পত্তি লীজের নামে পাউবোর অসাধু কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধকে বাণিজ্যে পরিণত করেছে। তাছাড়া এক একজন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন যাবৎ একই স্থানে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ফলে দখলবাজদের সাথে তাদের সু-সম্পর্ক থাকায় তারা পাউবোর সম্পত্তি দখল করতে সুবিধা পাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ পাউবো’র সম্পদ দখলবাজদের হাত থেকে রক্ষাকল্পে এগিয়ে আসবে বলে সচেতন মহলের প্রত্যাশা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top