সকল মেনু

ইভটিজারের বিচার চেয়ে দরজায় দরজায় ঘুরছেন চাঁদপুরের মৈশাদী গ্রামের এক তরুণী

শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: ইভটিজার কর্তৃক নির্যাতিতা নারী কর্মী (২৫) লোকলজ্জার ভয়ে ঘর থেকে বের হতে সাহস পাচ্ছেন না। বিচারের আশায় স্থানীয় ইউপি মেম্বরসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্চেন। কিন্তু বিচার পাননি এখনো।
জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মৈশাদী গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র জেলে আঃ কাদিরের মেয়ে দরিদ্রতার হাত থেকে মুক্তি পেতে  চাঁদপুরের বাবুরহাট বিসিক এলাকায় কাজ করেন। কাজের লক্ষ্যে প্রতিদিনই তিনি সকাল সাড়ে ৬টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যান। বাড়ি ফেরার পথে প্রায়ই একই গ্রামের বখাটে মোঃ জসিম (৩৫) তাকে উত্ত্যক্ত করাসহ কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। কিন্তু সহজ সরল নারী কর্মী তার লালসার কাছে নিজেকে ধরা দেননি। এ ব্যাপারে তিনি পরিবারের লোকজনকে অবহিত করেন। গরিব অসহায় পিতা এর প্রতিকার চেয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছে বিচার দাবি করেন। কিন্তু ইভটিজার জসিমের বড় ভাই বোরহান অন্য প্রকৃতির লোক বিধায় কেউ সাহস করে ইভটিজারকে কিছু বলেনি। এরই মাঝে ভয়ে ভয়ে চলতে থাকেন নারী কর্মীটি। আর এরই মধ্যে ঘটে যায় অনাকাংখিত ঘটনা।
গত ২০ মার্চ কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলেন ওই নারী কর্মী। ডাকাতিয়া নদীর পশ্চিম পাড়ে পৌঁছলে সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার সময় পৈশাচিক চরিত্রের অধিকারী মোঃ জসিম নেকড়ে বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে তার উপর। পৈশাচিক মনোবৃত্তি চরিতার্থ করতে  তার মুখ ও ঘাড়ে কামড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।  এক পর্যায়ে অসহায় নারী কর্মী প্রাণপণ শক্তি নিয়ে দৌড়ে পালান। কিন্তু সন্ধ্যার অন্ধকারে তার ডাক-চিৎকারে কেউ সাড়া দিতে পারেনি। নেকড়ের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে নারী কর্মী বাড়িতে ফিরে এসে ঘটনা সম্পর্কে সকলকে জানান। মেয়ের ইজ্জতের উপর হামলার বিচার চেয়ে মেয়েটির বাবা নিজ এলাকার মেম্বার ইউনুছ, স্থানীয় মাতাব্বর সফিউল্লা এবং জসিমের বড় ভাই বোরহানের স্মরণাপন্ন হন। তারা বিচারের আশ্বাস দিয়ে ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য বলেন। কিন্তু ঘটনার পর প্রায় এক মাসের মতো অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত মেয়ের ইজ্জতের বিচার না পেয়ে পিতা আঃ কাদির কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ দিকে ঘটনার শিকার নারী কর্মী লোক চক্ষুর ভয়ে কাজে যেতে পারছেন না। ফলে ২ বোন, ২ ভাইসহ পিতা-মাতার অভাবের সংসারে অভাব আরো বেশি করে ধরা দিয়েছে। জীবন জীবিকার তাগিদে সাংসারিক অভাব ঘোচাতে গিয়ে আজ তার উপর এ নিষ্ঠুর দুর্দশা নেমে আসায় তিনি অনেকটাই নির্বাক, স্থবির হয়ে পড়েছেন। লম্পট জসিমের লালসার ক্ষত চিহ্ন তাকে ঘটনার দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বারবার। এ দিকে মেয়ের ইজ্জতের বিচার চাইতে গিয়ে বেশি দূর এগুতে পারছে না লম্পটের পরিবারের দাপটের কারণে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top